বহুমুখী প্রতিভার সাক্ষী নাবিল এগ্রো ফার্ম ও মনিরুজ্জামান

প্রকাশিত: ৬:৩৭ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৫

বহুমুখী প্রতিভার সাক্ষী নাবিল এগ্রো ফার্ম ও মনিরুজ্জামান

এলাকায় কৃষি বিপ্লব ঘটাতে এবার ১২ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ, কর্মসংস্থান হয়েছে স্থানীয় ১০-১৫ জনের


মো. নিজাম উদ্দিন, কোম্পানীগঞ্জ
দয়ারবাজার তথা কোম্পানীগঞ্জে যখন কর্মসংস্থানের অভাবে এলাকার হাজার হাজার মানুষ ঢাকার গার্মেন্টসমখী, তখন একজন উদ্যমি যুবক ব্যবসা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্দেশ্যে গড়ে তোলেন নাবিল এগ্রো ফার্ম হাউজ। বলছিলাম- সফল কৃষি উদ্যোক্তা কোম্পানীগঞ্জের মনিরুজ্জামানের কথা।
উপজেলার পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের কালীবাড়ী গ্রামের সাবেক স্বনাধন্য মেম্বার মরহুম আব্দুস সালাম সাহেবের ২য় ছেলে মনিরুজ্জামান এলাকার প্রধান কর্মসংস্থান পাথর কোয়ারী ২০১৮ সালে বন্ধ হয়ে গেলে অন্য আরো দশজনের মত দিশেহারা না হয়ে বালুর ব্যবসা শুরু করেন এবং ২০২১ সাল পর্যন্ত তার বালুর ব্যবসা চলে। কিন্তু সফলতা তেমন একটা আসে না। এমন সময় তার মাথায় আসে উদ্যোক্তা হয়ে কৃষিতে কিছু একটা করার চিন্তা। যেই চিন্তা সেই কাজ। এলাকার রাধানগর গ্রামের পাশে ১৫/২০ শতক জায়গাসহ ছোট্ট একটি দুতলা বাড়ি কিনে শুরু করেন নাবিল এগ্রো ফার্ম হাউজ নামে কৃষি খামারের কাজ।
কয়েকটি গরু ও পোল্ট্রি দিয়ে খামারের কাজ শুরু করেন ২০২২ সালে। এরপর সবজি চাষ, ধানচাষ, মাছ চাষ, গম চাষ, সরিষা চাষ ও কবুতর পালন চলতে থাকে।
এদিকে উপজেলা কৃষি অফিস তাকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে তাকে একজন সমন্বিত খামারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহযোগিতা করতে থাকেন। এরই মধ্যে তিনি তার খামারে ৮/১০ জন লোকের নিয়মিত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন এবং নিজেও ব্যবসায়িকভাবে সফল হতে শুরু করেছেন। এমন সময় ২০২৪ সালের শেষের দিকে সবজি চাষের মৌসুমে হঠাৎ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তাকে পরামর্শ দেন সূর্যমখী ফুলের চাষ করতে। কৃষি অফিসের পরামর্শে তিনি সূর্যমুখী চাষের একটি প্রকল্প হাতে নেন। ১২ বিঘা জমিতে তিনি সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে ফেলেন। বর্তমানে তার খামারের সবচেয়ে আকর্ষণীয় প্রকল্প সূর্যমুখী যদিও এখনো ফুল আসেনি। ২০২৪-২০২৫ মৌসুমে তিনি শীতকালীন সবজি, ধান, সরিষা, গম, পোল্ট্রি, গরু, মাছ থেকে প্রায় ৪/৫ লক্ষ টাকা আয় করেছেন বলে জানান এবং সূর্যমুখী প্রকল্প সফল হলে তিনি এই প্রকল্প থেকেই ৩/৪ লক্ষ টাকা আয় করার আশাবাদী।
তিনি বলেন- আমাদের এলাকায় কৃষি ছিলো শুধু নিজের প্রয়োজনে ফসল ফলানোর কাজ। কিন্তু আমি কৃষিকে বেছে নিয়েছি ব্যবসায়িক ও কর্মসংস্থা সৃষ্টির ক্ষেত্র হিসেবে এবং আমি চাই বেকার যুবকরা স্বল্প পূঁজি নিয়ে যেন এই পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করেন।
এদিকে এলাকাবাসী মনিরুজ্জামানকে নিয়ে খুবই উচ্ছ্বসিত। এলাকাবাসীর একজন বলেন- মনির ভাই আমাদের কৃষি কাজকে ব্যবসায়িক কাজে রূপ দিয়েছেন এবং আমাদের অনেকের কর্মসংস্থানের চোখ খুলে দিয়েছেন। আমরা তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মতিন বলেন- মনিরুজ্জামান একজন উদ্যমি যুবক তাকে আমরা সার, বীজ, কিটনাশক দিয়ে যথাসাধ্য সহযোগিতা করে যাচ্ছি যেন- কৃষিতে তিনি অত্র এলাকায় বিপ্লব ঘটাতে পারেন এবং তাকে দেখে যেন অন্য বেকার যুবকরা উৎসাহী হন। এ বছর তার সূর্যমুখী প্রকল্প সফল হলে আগামীতে আরো বড় পরিসরে আমরা সহযোগিতা করব ইনশাআল্লাহ।

সর্বশেষ ২৪ খবর