চাচা ও ভাতিজার আলোচিত ঘটনা
কানাইঘাটে চাচার বিরুদ্ধে জায়গা দখলের অভিযোগ

প্রকাশিত: ৮:২৯ অপরাহ্ণ, জুন ২১, ২০২৫

<span style='color:#077D05;font-size:19px;'>চাচা ও ভাতিজার আলোচিত ঘটনা</span> <br/> কানাইঘাটে চাচার বিরুদ্ধে জায়গা দখলের অভিযোগ

সালিশ অমান্য, ঘর-মিটার ভাঙচুর, প্রাণনাশের হুমকি

কানাইঘাট সংবাদদাতা
সিলেটের কানাইঘাটে আপন ভাতিজাদের বসত ঘরসহ ভূ-সম্পত্তি জবর দখলের অভিযোগ উঠেছে এক চাচার বিরুদ্ধে। তিনি ভাতিজাদের অবর্তমানে তাদের ঘরের টিনের চাল ও বৈদ্যুতিক মিটার ভাঙচুর করে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন ভুক্তভোগী।
এজাহারে মৃত আব্দুল মুতলিবের ছেলে হাফিজ আনোয়ার হোসেন ওরফে সমর আলী (৭০), শাহপুর গ্রামের বশির উদ্দিনের ছেলে ফারুক আহমদ(৪০), বায়মপুর গ্রামের মৃত কুতুম আলীর ছেলে সাহিদ আহমদ ওরফে বকুল(৩৪)-কে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে আপন ভাতিজা মৃত মাহমুদ আলীর ছেলে ফয়েজ আহমদ(৪৫) জানান, অভিযুক্ত সমর আলী তাঁর আপন চাচা। পিতার মৃত্যুর পর নিজের মৌরসী স্বত্ব চাচার সাথে মৌখিক ভাগ বণ্টনের মাধ্যমে ভোগ ব্যবহার করছেন। চাকুরীর সুবাধে ফয়েজ ঢাকায় থাকেন এবং তাঁর সহোদর মাওলানা জাকারিয়া হুসাইন বড়লেখায় থাকেন। বেশিরভাগ সময়ই তাদের ঘর পুরুষশূন্য থাকে। এই সুযোগে চাচা সমর আলী তাদের ভূমির বেশ কিছু অংশ জবর দখলের মাধ্যমে ভোগ ব্যবহার করছেন।
এদিকে বাড়ির মালিক হওয়ার পরও যেনো ভাড়াটের মতো বসবাস করতে হচ্ছে ফয়েজের পরিবারকে। চাচার দখলে অধিকাংশ বাড়ি থাকায় বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হন ফয়েজ ও তার ভাই মাওলানা জাকারিয়া। তারা চাচার সাথে নিজেদের অংশ বিজ্ঞ সার্ভেয়ার দ্বারা ভাগ বণ্টন করতে চাইলে এতে আপত্তি জানান অভিযুক্ত হাফিজ আনোয়ার হোসেন ওরফে সমর আলী। তিনি বিভিন্নভাবে তাদেরকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন এবং মিথ্যে মামলায় হয়রানি করারও হুমকি দেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে বেশ কয়েকবার বিচার পঞ্চায়েতও হয়েছে। কিন্তু কোনো সমাধান আসেনি। সমর আলী প্রভাব খাটিয়ে একাই বাড়ির দুই তৃতীয়াংশ বাড়ি ভোগ ব্যবহার করছেন।
এজাহারে ফয়েজ জানান, ‘আমাদের অবর্তমানে বিগত ২০১৫ সালের ০১ মার্চ সকাল অনুমান সাড়ে ১০টার দিকে আমার বসত ঘরের দক্ষিণের টিনের চাল ও বৈদ্যুতিক মিটার ভেঙে বসত ঘর নির্মাণ করেন চাচা সমর আলী। এতে আমার প্রায় ৩০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে। এই ঘর নির্মাণের আগে আমি বার বার বাধা দিয়েছি। বলেছি- সার্ভেয়ার দ্বারা জরিপ করে নিজ নিজ অংশ পৃথক করার পর আপনি আপনার অংশে ঘর নির্মাণ করেন। কিন্তু শুনেননি। আমি নিরুপায় হয়ে স্থানীয় মুরব্বিয়ানদের দ্বারাও নিষেধ করেছি। তিনি তাদের কথাও মানেননি। মুরব্বিয়ানদের উপেক্ষা করে ঘর নির্মাণ করেছেন। আমি ঈদ-উল-ফিতরের পর বাড়িতে এসে দেখি আমার ঘরের টিন ও মিটার ভাঙা। পানি পড়ে ঘরে থাকা ল্যাপটপ ও মূল্যবান আসবাবপত্র ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে প্রায় দেড় লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এর আগেও চাচা জবর দখলের মাধ্যমে ঘর নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন। আমরা বাধা দিয়েছি। কিন্তু তিনি অসৎ উদ্দেশ্যে আমাদের অবর্তমানে মুরব্বিয়ানদের কথা উপেক্ষা করে এমন ন্যাক্কারজনক কাজ করেছেন। তার সাথে সহযোগী হিসেবে বায়পুর গ্রামের বশির উদ্দিনের ছেলে ফারুক আহমদ(৪০), বায়মপুর গ্রামের মৃত কুতুম আলীর ছেলে সাহিদ আহমদ ওরফে বকুল(৩৪) সম্পৃক্ত ছিলেন। আমি তাদেরও অভিযুক্ত করেছি।’
ফয়েজ বলেন, ‘চাচার সাথে বেশ কয়েকবার সালিশ বৈঠক হয়েছে। সালিশে ওপর আপন চাচা অর্থাৎ অভিযুক্ত হাফিজ আনোয়ার হোসেন ওরফে সমর আলীর বড় ভাই ইলিয়াস আলী(৮০), মৃত হাজী আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরীর ছেলে ফজলুর রহমান চৌধুরী(৬৭), মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে ফয়েজ আহমদ(৬০), মৃত শফিকুল হকের ছেলে বাবুল মিয়া(৫৫), মৃত হাজী সৈয়দ আলী মুন্সীর ছেলে একলিম উদ্দিন(৬০), মৃত মাহমুদ হোসেনের ছেলে শফিক আহমদ(৬০), মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে ফরিদ মিয়া(৭০), ইলিয়াস আলীর ছেলে আলী আহমদ(৪৫)সহ গ্রামের বিভিন্ন গণমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। তাদেরকে উপেক্ষা করার কারণে আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এখন অভিযোগ দায়েরের খবর পেয়ে অভিযুক্ত চাচা বিভিন্নভাবে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন। অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। এমতাবস্থায় আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এ ব্যাপারে আমি প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর