ঢাকা ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:২৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৭, ২০২৫
আলতাব হোসেন, বিশ্বনাথ
সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলার আশুগঞ্জ বাজার খাজাঞ্চী নদীর ওপর সেতু কবে নির্মাণ হবে? স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও নির্মাণ হয়নি জনগুরুত্বপূর্ণ আশুগঞ্জ বাজার পাকা সেতু। অবহেলিত জনমানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। খাজাঞ্চি নদীর উপর প্রায় ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের বাঁশের সাঁকো বছরের পর বছর এলাকাবাসীর উদ্যোগে নির্মাণ করে এপার ওপার যাতায়াত করেন তারা। রয়েছে ঝুঁকি ও জীবন নাশের শঙ্কা। নদীর তীব্র স্রোতে ভেঙে পড়ে অনেক সময় এটি। বন্ধ হয়ে যায় স্কুল কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা। বর্তমানে উপজেলার দুটি ইউনিয়নের প্রায় ২৫ টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন এই সাঁকো দিয়ে। কৃষি প্রধান এই এলাকার মানুষের জীবনের চিত্র বদলে যাবে একটি পাকা সেতুয়। আসবে অর্থনৈতিক মুক্তি। দেশ স্বাধীনের পর সরকারি দপ্তর ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে শুধুই আশ্বাসই পাওয়া ছাড়া হয়নি বাস্তবায়ন। অন্যান্য এলাকার মত সমতালে সামনে এগিয়ে যাবে এই অঞ্চল এমনটি এই জনপদের মানুষের আশা দীর্ঘদিনের হলেও কবে জ্বলবে আশার প্রদীপ তার সঠিক উত্তর কেউ জানেন না।
বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের দ্বীপবন্ধ বিলপার গ্রামের দক্ষিণ পাশে এবং রামপাশা ইউনিয়নের আশুগঞ্জ বাজার স্থানে এ বাঁশের সাঁকোর অবস্থান।
উপজেলা সদর ও জেলা সদরের সাথে ২৫ টি গ্রামের সহজ যোগাযোগ মাধ্যম এটি। আবহমান কাল ধরে এলাকাবাসীর চাঁদায় নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়েই এই অঞ্চলের মানুষ চলাচল করে আসছেন। উপজেলা পর্যায়ে সরকারি কোনো সহায়তা না পাওয়ায় এলাকার মানুষ বাঁশ-কাঠ অর্থ ও স্বেচ্ছা শ্রমে বাঁশের সাঁকোটি তৈরি করেন প্রতি বছর। সাঁকোটি মেরামত করা হয় এলাকাবাসীর অর্থে।
সাঁকোটি দিয়ে দুটি ইউনিয়নের বিলপার, দ্বীপবন্ধ, বাবুনগর, পাঁচঘরি, দোহাল, পালেরচক, কোনাপাড়া, নোয়াপাড়া, শ্রীপুরসহ ২৫ গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন।
খাজাঞ্চি নদীর দক্ষিণ পারে আশুগঞ্জ বাজার, আশুগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং আশুগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়, হলিচাইল্ড স্কুল সহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। উত্তর পারের ছাত্র ছাত্রীরা, ব্যবসায়ী, রোগী, কৃষিপণ্য নিয়ে এসব বিদ্যালয়, হাটবাজার, হাসপাতালে যেতে সাঁকো ব্যবহার ছাড়া অন্যোপায় তাদের নেই।
স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও এই অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতে খাজাঞ্চী নদীর উপর ভোগান্তি লাঘবে কোনো সেতু নির্মাণ না হওয়ায় হতাশ এলাকাবাসী।
প্রতি বছর সরকার কোটি-কোটি টাকা গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট নির্মাণে বরাদ্দ দিলেও এই অঞ্চলে তা পোঁছায় না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খাজাঞ্চী নদীর ওপর একটি পাকা সেতু নির্মাণ করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি তাদের।
স্থানীয় বিলপার গ্রামের বাসিন্দা নাজমুল ইসলাম, ফারুক মিয়া, সিরাজ মিয়া, রামচন্দ্র পুর গ্রামের আশরাফ আলী, হুমায়ুন কবির ইমন, ইমরান আহমদ জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছি কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী চাঁদা তুলে নদীর ওপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করি। এটি প্রতি বছর নতুন করে নির্মাণ করতে হয়। মেরামতে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়। নির্বাচন এলেই এলাকার জনপ্রতিনিধিরা এখানে সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। নির্বাচন শেষ হওয়ার পর প্রতিশ্রুতির কথা তাদের মনে থাকে না।
এব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আবু সাঈদ বলেন, এই স্থানে একটি পাকা সেতু নির্মাণের জন্য এলাকাবাসীর আবেদন মন্ত্রণালয়ে পক্রিয়াধীন রয়েছে। আশা করি রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় এলে স্থানীয় এলাকাবাসীর চাওয়াটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা হবে।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host