বাজারে ওঠা সুপারিকে ‘ভারতীয়’ বলে জব্দ, আইনশৃঙ্খলা সভায় ক্ষোভ ঝাড়লেন ব্যবসায়ীরা
জকিগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী সুপারি ব্যবসায় ধস: বিজিবিকে দায়ী

প্রকাশিত: ৭:৩৮ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৭, ২০২৫

<span style='color:#077D05;font-size:19px;'>বাজারে ওঠা সুপারিকে ‘ভারতীয়’ বলে জব্দ, আইনশৃঙ্খলা সভায় ক্ষোভ ঝাড়লেন ব্যবসায়ীরা</span> <br/> জকিগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী সুপারি ব্যবসায় ধস: বিজিবিকে দায়ী

জুবায়ের আহমদ, জকিগঞ্জ
‘মাছ, বাঁশ, সুপারি জকিগঞ্জের বেটাগিরি।’ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক ঐতিহ্যই মলিন হলেও জকিগঞ্জের সুপারি এখনও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সুপরিচিত। প্রতিদিনই নানা জেলা থেকে পাইকারি ক্রেতারা সুপারি কিনতে জকিগঞ্জে আসেন।

কিন্তু গত দুই বছর ধরে সীমান্ত এলাকায় বিজিবির মাধ্যমে স্থানীয় সুপারি আটক হওয়ায় ক্ষোভ ও উদ্বেগ বাড়ছে ব্যবসায়ীদের মাঝে। অভিযোগ জকিগঞ্জের বাগানে উৎপাদিত দেশি সুপারিকেই ভারতীয় সুপারি হিসেবে চালান দিয়ে জব্দ ও নিলামে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে এলাকার অন্যতম প্রধান কৃষিপণ্যভিত্তিক ব্যবসাটি ধসের মুখে পড়ে পাইকারি ক্রেতাদের আগমনও কমে গেছে উল্লেখযোগ্যভাবে।

গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিজিবি ৫২ বিয়ানীবাজার ব্যাটালিয়নের একটি বিশেষ টহল দল মেজর সৈয়দ ইশতিয়াক মুর্শেদের নেতৃত্বে বিয়ানীবাজার উপজেলার দোয়াগ ইউনিয়নের শেওলা ব্রিজ এলাকা থেকে ২ হাজার ৪০ কেজি সুপারি জব্দ করে। বিজিবির হিসাব অনুযায়ী যার বাজারমূল্য প্রায় ১০ লাখ ২০ হাজার টাকা। এ ঘটনায় বড়লেখা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, জব্দ করা এসব সুপারি তারা জকিগঞ্জের বিভিন্ন বাগান ও খুচরা বিক্রেতার কাছ থেকে ক্রয় করেছিলেন। অথচ কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই এসব দেশি সুপারিকেই ভারতীয় বলে চালান দেওয়া হয়েছে।

বাবুর বাজারের সুপারি ব্যবসায়ী এখলাছুর রহমান অভিযোগ করে বলেন “স্থানীয় বাগান মালিক ও খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কেনা সুপারি নিয়ে যাচ্ছিলাম। পথে বিজিবি আমাদের আটকে ফেলে। গাড়িতে আমারসহ চারজন ব্যবসায়ীর মাল ছিল। আমাদের কথা শুনলই না। উল্টো হুমকি দিল বেশি কথা বললে জিরা ও সুপারিকে ভারতের বলে চালান দেবে। এমনকি জোর করে সাদা কাগজে স্বাক্ষরও নিয়েছে।”

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ সুপারি ব্যবসায়ীরা বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভার বাইরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। পরে তারা উপজেলা পরিষদ চত্বরে জড়ো হয়ে বিজিবির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানান।

সভায় জন প্রতিনিধিরা ও ব্যবসায়ীরা বিজিবি ও সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আচরণের কঠোর সমালোচনা করেন।

সভায় উপস্থিত বিজিবি সদস্যরা জানান, বিষয়টি তারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), যিনি সভার সভাপতি ছিলেন, আশ্বাস দেন বৈধ সুপারি পরিবহনে ভবিষ্যতে যেন আর কোনো ধরনের হয়রানি না হয়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর