ওসমানীনগরে বিদ্যালয়ের আঙিনা পরিষ্কার করতে গিয়ে আগুনে দগ্ধ ৩ শিক্ষার্থী

প্রকাশিত: ৭:৫৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৭, ২০২৫

ওসমানীনগরে বিদ্যালয়ের আঙিনা পরিষ্কার করতে গিয়ে আগুনে দগ্ধ ৩ শিক্ষার্থী

ওসমানীনগর প্রতিনিধি
সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আঙিনা পরিষ্কার করার সময় আগুনে দগ্ধ হয়েছে তিন কোমলমতি শিক্ষার্থী। আহতদের মধ্যে দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং গুরুতর আহত এক শিক্ষার্থীকে দ্রুত ওসমানীনগর ভার্ড চক্ষু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটে ২৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বিদ্যালয় ক্লাস বিরতির সময়।

শিক্ষার্থী ও অভিবাক সুত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যায়। ক্লাস বিরতির সময় বিদ্যালয়ের দপ্তরি সমিরণ শব্দকর শিক্ষার্থীদের দিয়ে ময়লা সংগ্রহ করান। পরে তিনি ময়লা পুড়াতে আগুন জ্বালালে এবং শিক্ষার্থীদের আগুনের কাছে ময়লা দিতে বললে হঠাৎ আগুনের লেলিহান শিখা উড়ে এসে তিনজন শিক্ষার্থী দগ্ধ হয়।

দগ্ধ শিক্ষার্থীরা হলেন- পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র সালমান আহমদ, তৃতীয় শ্রেণির মুরসালিন আহমদ ও রায়হান আহমদ। এর মধ্যে সালমান আহমদের অবস্থা গুরুতর, তার বাম চোখে আগুনের লুঙ্গা পড়ে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে।

ঘটনার পর শিক্ষকরা সালমানকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করেন এবং তার পরিবারকে খবর দেন। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে লাগানোয় অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে তাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বাজার ও হাইওয়ে সংলগ্ন হওয়ায় আশপাশে ফার্মেসী, বেসরকারি ক্লিনিক, মসজিদ এবং ব্যাংকসহ নানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নিয়মিতভাবে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ছাড়া সপ্তাহে তিন-চার দিন আগুন জ্বালিয়ে ময়লা পোড়ানোর কারণে একাধিকবার স্থানীয়রা আপত্তি জানিয়েছিলেন। কিন্তু বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তোয়াক্কা করেনি।

স্থানীয় ব্যবসায়ী ও অভিবাবকদের অভিযোগ- দীর্ঘদিন ধরে এই বিদ্যালয়ে অনিরাপদভাবে ময়লা পোড়ানো হয়। এতে ধোঁয়া ও আগুনের কারণে ব্যবসায়ী ও পথচারীরা দুর্ভোগে পড়েন।

স্থানীয় ব্যবসায়ী সামসুল ইসলাম বলেন, ফার্মেসীতে রোগীরা ধোঁয়ার কারণে প্রবেশ করতে পারেন না। বহুবার সতর্ক করেও কোনো ফল হয়নি।

এ বিষয়ে দপ্তরি সমিরণ শব্দকর বলেন- আমি প্রতিদিনই আগুন দিই, কখনো সমস্যা হয়নি। আজকে হঠাৎ একটি ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষকরা আহতদের হাসপাতালে নিয়ে গেছেন।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আজাদ মিয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম তালুকদার বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত হয়েছি। শিক্ষার্থীদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে লাগানো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর