গোয়াইনঘাটে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ : আবাদের আওতায় ২শ একর জমি, স্লুইচ গেইট নির্মাণের দাবি

প্রকাশিত: ৯:০৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৭, ২০২৫

গোয়াইনঘাটে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ : আবাদের আওতায় ২শ একর জমি, স্লুইচ গেইট নির্মাণের দাবি

আমির উদ্দিন, গোয়াইনঘাট
কৃষি বাংলাদেশের আদি ও প্রধান পেশা। যার উপর পত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জীবন যাপন করে দেশের ৮০ ভাগ মানুষ। এরই ব্যতিক্রম নয় সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ২নং পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নে। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ২নং পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের অন্তর্গত ৩, ৪, ৫, ৮, ৯নং ওয়ার্ডের অধিভুক্ত তারুখাল, ঠাকুরবাড়ি, পন্নগ্রাম, কাইস্তগ্রাম, হাতিরখাল, জয়নগর গ্রামের প্রায় ২০০ একর ভূমি। জমিগুলো বছরে এক বর্ষা মৌসুমে শুধু মাত্রই ধানচাষে সীমাবদ্ধ থাকতো।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে গোয়াইনঘাটের পাথর কোয়ারি বন্ধ থাকার কারণে গ্রামের মানুষ কৃষি কাজে মনোনিবেশ করেছে। গ্রামের প্রতিটি মানুষ কৃষি কাজের সাথে জড়িত। এখানকার মানুষ ফসলের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি করা হয়। সিলেট শহর, এমনকি চিটাগাং থেকে সরাসরি ব্যবসায়ীরা এসে তারুখাল এলাকা থেকে সবজি কিনে নেন। গোয়াইনঘাটের প্রধান কৃষি উৎপাদনশীল এলাকা পশ্চিম জাফলং ইউনিয়ন। এখানে সরকারি ব্যবস্থাপনায় তেমন কোন পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি। তবে ক্রমাগত কৃষকদের সহযোগিতার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রায়হান পারভেজ।

পান্তূমাই মায়াবতী ঝর্ণা থেকে উৎপন্ন হয়ে মাতুরতল বাজার হয়ে ইউনিয়নের তারুখাল ও হাতিরখাল এর মধ্যবর্তী হয়ে মনরতল বাজার হয়ে প্রবাহিত হয়েছে আখলুভাঙা নামের ছোট নদীটি। সাম্প্রতিক এলাকার কৃষকরা সেচ্ছাশ্রেমে বাধঁ নির্মাণ করে পানি ধরে রাখার চেষ্টা করতেছেন তারা।

এলাকার কৃষকদের দাবি অতীতে নদীর পানি দিয়ে কোন রকম কৃষি কাজ করা সম্ভব হলেও বর্তমানে ফসলের চাহিদা অনুযায়ী কৃষি কাজে পানি ব্যবহার দূরুহ হয়ে উঠেছে। বিশাল ও বিস্তৃত এ কৃষি অঞ্চলে পানির অভাবে ফসল ফলনের সময় ঝরে ও মরে যায়। এমনকি পানির কারনে অনেক কৃষক কৃষিকাজ করতে পারেন না। বেলেদোয়াশ মাটিতে মাটিতে শাক সবজির অত্যন্ত ভালো মানের ফলন হয়, যা এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যত্রে সরবরাহ করা সম্ভব হয়। তাই উক্ত বিষয়গুলো বিবেচনা করে অবহেলিত এ জনপদের আখলুভাংঙ্গার সীমান্তবর্তী স্থানে একটি স্লুইচ গেইট স্থাপন করতে সিলেটের বিএডিসি (সেচ) বিভাগের সহকারী প্র-কৌশলীর বরাবরে একটি লিখিত আবেদন করেছেন কৃষকরা।

জানতে চাইলে আখলুভাংঙ্গায় স্লুইচ গেইট স্থাপনের মৌন সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন সিলেট বিএডিসি জোনের সহকারী প্র-কৌশলী(সেচ) হাবিবুর রহমান।
ইতিমধ্যেই সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন গোয়াইনঘাট সার্কেলের উপ সহকারী প্র-কৌশলী(সেচ) আব্দুল কুদ্দুস।

গোয়াইনঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রায়হান পারভেজ রনি জানান, ২নং পশ্চিম জাফলং ইউনিয়ন পুরুটাই কৃষি উপযোগী এলাকা। আমরা প্রায় বিশটির অধিক প্রপোজাল ইতিমধ্যে পাটিয়েছি, কিন্তু নানান সীমাবদ্ধতায় তা সম্ভব হচ্ছে না। আখলুভাঙা স্লুইচ গেইট নির্মাণ এ এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের। এটি নির্মাণ হলে এই এলাকায় শীত মৌসুমে ব্যাপক হারে কৃষিকাজ সম্ভব বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। তবে একাধিক উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কৃষকদের কল্যাণে কাজ করছেন বলে জানান তিনি।

কৃষিবিদ নুরে আলম শামীম জানান, কম সময়ে সবচেয়ে লাভজনক পেশা হচ্ছে কৃষি আমাদের এলাকার মানুষ অনেক পরিশ্রমি সরকারি ভাবে এ ভাঙ্গায় স্লুইচ গেইট হলে আমরা উপকৃত হবো।

সমস্বরে কথা বলতে গিয়ে ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম রাজা বলেন আমাদের ছোট ছোট নদীগুলোতে যদি স্লুইচ গেইট স্থাপন হয় তাহলে এই ইউনিয়ন কৃষিতে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর