ঢাকা ৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:৫২ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩, ২০২১
বিজয়ের কণ্ঠ ডেস্ক
স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি জানান, ভ্যাকসিন দেওয়ার বয়সসীমা আরও কমানো হবে যদি আরও ভ্যাকসিন আনা সম্ভব হয়। তখন শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার শিডিউলের বিষয়টিও ভেবে দেখা হবে।
বুধবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের এই কথা জানান তিনি। মন্ত্রী জানান, বিদেশি নাগরিক, সরকারি কর্মচারী, বিভিন্ন পোর্টে যারা কাজ করেন তাদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকা অনুযায়ী টিকা পাবেন বিদেশিরা। তিনি আরও জানান, এখন পর্যন্ত ৩৩ লাখ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। আর ৪৫ লাখ মানুষ রেজিস্ট্রেশন করেছেন।
মন্ত্রী বলেন, জুলাই এর মধ্যে চার কোটি ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন ছাড়া অন্য দেশ থেকেও টিকা আনার জন্য আলোচনা চলছে। ‘আমরা ৪০ বছরের বেশি বয়সীদের ভ্যাকসিন দিচ্ছি। এটা ভারতে ৬০ বছর বা এর বেশি বয়সীদের ভ্যাকসিন দেয়া হয়। আমাদের দেশে এটা অনেক কমিয়ে ৪০ বছরে নিয়ে এসেছি। ৪০ বছরে নিয়ে আসার কারণে আমাদের ৪ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে হবে।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমাদের হাতে যদি ভ্যাকসিন বেশি আসে, তাহলে বয়সের বিষয়টি চিন্তা করতে পারব। শিডিউলও পরিবর্তন করতে পারব। আমাদের সবসময় চেষ্টা থাকবে, নিশ্চিত হয়ে যেন আমরা কাজ করি। সেকেন্ড ডোজ যেন আমাদের হাতে থাকে। সেটা মাথায় রেখে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘একটি মাস আমরা ভ্যাকসিন দিয়েছি। আমরা সফলতার সঙ্গে ইনশাআল্লাহ দিয়েছি। এই সফলতার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাব। উনার নিবিড় তত্ত্বাবধানে ও গাইডেন্সে আমরা কাজ করেছি।’ ‘আগামী জুন-জুলাই পর্যন্ত একটি প্রোগ্রাম নিয়ে আলোচনা করেছি। এরপর আবার আলোচনা হবে ডিসেম্বর পর্যন্ত আমরা কীভাবে ভ্যাকসিন দেব।’
‘আমরা আশা করি জুন-জুলাই পর্যন্ত আমাদের যা অর্ডার আছে, আমরা কোভ্যাক্স থেকে যা পাব, সেটা মিলিয়ে আমাদের হাতে ৪ কোটি ডোজ হাতে থাকবে। এই চার কোটি ডোজ হাতে চলে আসবে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মাসে, সেই অনুযায়ী আমরা ভ্যাকসিন কার্যক্রম করব। যদি এর মধ্যে কোনো রকমের পরিবর্তন লাগে তাহলে সেই বিষয়টিও আমরা করব। আমাদের ডিজি অফিস এই বিষয়টি নিয়ে প্রতিদিন বসে, আলোচনা করে ও সিদ্ধান্ত নেয়।’
তিনি বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ও আমরা একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, প্রত্যেক ১৫ দিনে একদিন ভ্যাকসিনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। সিদ্ধান্তে যদি কোন পরিবর্তন লাগে, অ্যাডজাস্টমেন্ট লাগে সেটা এখানে বসে আমরা করব।’
মন্ত্রী বলেন, ‘অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন আমরা নিজেরা কিনব, কোভ্যাক্সও এক কোটি ৯ লাখ ডোজ দেবে। অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন যেটা আমরা সিরাম থেকে আনছি, এই ভ্যাকসিনের পাশাপাশি অন্য ভ্যাকসিন যেটা অনুমোদন পেয়েছে বা আগামীতে পাবে সেটা আমরা কীভাবে আনব। যদি প্রাইভেট সেক্টর ওই ভ্যাকসিন আনতে চায় সেই কাজটি আমরা কীভাবে করব। সে বিষয়েও প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে।’
ভ্যাকসিন কেনার জন্য ইতোমধ্যে বিভিন্ন দাতাসংস্থা সাড়ে ৩ হাজার মিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখন বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত হবে আমরা কতটুকু নেব, আমাদের কতটুকু প্রয়োজন আছে। সেটার ওপর সিদ্ধান্ত হবে। ইতোমধ্যে ৫০০ মিলিয়ন ডলার যেটা বিশ্বব্যাংকে ছিল সেটা তো অনুমোদন হয়ে গেছে।’
বেসরকারিভাবে ভ্যাকসিন আনলে কী তা মানুষকে টাকা দিয়ে কিনতে হবে- এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পাওয়া ভ্যাকসিন বাংলাদেশ ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অনুমোদন সাপেক্ষে বেসরকারিভাবে কেউ যদি আনতে চায় নিজ খরচে আনতে হবে। যে নেবে তাকেও নিজ খরচেই নিতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকারিভাবে যেটা দেয়া হচ্ছে সেটা বিনামূল্যে, ভবিষ্যতেও যেটা দেয়া হবে বিনামূল্যেই দেয়া হবে।’
এ সময় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host