ঢাকা ৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৩৬ অপরাহ্ণ, মার্চ ৯, ২০২১
মো. ফারুক মিয়া
মা ঝিয়ের কাজ করেন বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে, বাবা রিক্সা চালক কিংবা দিন মজুর। ছেলেরা জড়িয়ে পড়ছে খুন-খারাপি, ইয়াবা সেবন-বিক্রিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে। এই সংখ্যা এক, দুই তিন থেকে শুরু করে অবশেষে ২০/২৫ জনের একটি গ্রুপে পরিণত হয়। এরপর বিভিন্ন সফল মিশনের মাধ্যমে তাদের উত্থান ঘটে শহরের বিভিন্ন গলিতে। গড় ওঠে একটি বিশাল গ্রুপ। যাকে সম্প্রতি কিশোর গ্যাং হিসেবে চিহ্নিত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষবাহিনী।
সিলেট শহরে বেড়ে ওঠা এসব কিশোর গ্যাং সদস্যরা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। তাদের অপরাধমূলক কর্মকান্ডগুলো সিনেমার দৃশ্যকে হার মানাতে সক্ষম। সিনেমা কিংবা টিভি পর্দায় দেখা বিভিন্ন কিশোর অপরাধমূলক সিরিজ বা শর্ট ফিল্মকে অনেকটা কপি করে প্রতিনিয়ত কার্য পরিচালনা করে থাকে এই গ্যাং। আর তাদের এমন কর্মকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনে অনেকটা বেগ পেতে হয় খোদ প্রশাসনকে।
ইদানিং সিলেটে দেখা যায়, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে খুন খারাপি করছে এই কিশোর গ্যাং। বিভিন্ন পাড়া মহল্লা এলাকায় প্রতিদিন সিনিয়র-জুনিয়র নিয়ে মারামারিতে লিপ্ত হচ্ছে। গ্রুপ সদস্য ছিনতাইয়ে জড়িয়ে পড়েছে। গ্রুপ সদস্য অপরাধ ঠেকাতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর জুরালো অভিযান শুরু হলে কিছু দিনের জন্য থমকে যায় গ্রুপ সদস্য অপরাধ কর্মকাণ্ড। পরে আবারো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে গ্রুপ সদস্যরা ।
গ্রুপ সদস্য অপরাধ অনেকটা নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। বছরজুড়ে আলোচনায় থাকছে গ্রুপ সদস্য অপরাধীদের নৃশংসতার নানা ঘটনাগুলো। স্কুল-কলেজ ও এলাকায় রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় আধিপত্য বিস্তার কিংবা দ্বন্দ্ব মেটাতে কয়েকজন গ্রুপ সদস্য মিলে গড়ে তুলছেন গ্যাং। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন বাজার হাটে অন্ধকার স্পটে কিশোর-তরুণরা মিলে নিয়মিত আড্ডা দিচ্ছে পাশাপাশি মেয়েদেরও উত্যাক্ত করছে।
প্রতিদিন কোনো না কোনো এলাকায় জুনিয়র-সিনিয়র বা নারীঘটিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রুপ সদস্য মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটছে। যার শেষ পরিণতি অস্ত্রবাজি থেকে রক্তারক্তির মতো ঘটনা। আর এসব অপরাধে এখন অস্থির হয়ে পড়ছেন সিলেট নগরের বাসিন্দারা ছোট ভাই-বড় ভাই মিলে আড্ডা দিতে দিতে এক সময় তারা হয়ে উঠছে ভয়ংকর অপরাধী।
অথবা নেশার টাকার জন্য করছে ছিনতাই, চুরি। এমনি একজন ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছিলেন খুলিয়াটুলার বসবাস করা আফজাল হোসেন। তিনি বলেন আমি দুই বার কিশোর গ্যাং এর হাতে ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছি। সিলেটের কাজির বাজার ব্রিজ থেকে আমি সিএনজিতে ওঠি বন্দর যাওয়ার জন্য, ওই খান থেকে আমার মোবাই ফোন তারা কৌশলে ছিনিয়ে নেয় এবং আমাকে তালতলা নামিয়ে দিয়ে চলে যায় সিএনজি নিয়ে। এ রকম আমি দুই বার কিশোর গ্যাংয়ের হাতে ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছি।
তবে এ বিষয়ে এসএমপির প্রতিটি থানার পুলিশ প্রশাসন প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে। আর প্রতিদিন কিশোর গ্যাংয়ের সাথে জড়িত ও মাদক দ্রব্যের সাথে জড়িতদের আটক করছে। তারপর থেমে নেই এসব অপরাধ মূলক কাজ।
সচেতন মহল মনে করেন আগে প্রতিটি পরিবারকে সচেতন হতে হবে এবং আপনার সন্তান কোথায় যাচ্ছে না যাচ্ছে খেয়াল রাখতে হবে তাহলেই এসব অপরাধ দমন করা সম্ভব।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host