ঢাকা ৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:০০ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১০, ২০২১
নিজস্ব প্রতিবেদক
সিলেট নগরে তীর-জুয়া অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসলেও নিয়ন্ত্রণে আসছে না এসএমপি’র কোতোয়ালি থানাধীন ঘাসিটুলা বেতের বাজারে শরীফের জুয়ার আসর। রাতারাতি বড়লোক হওয়ার স্বপ্নে আবাল বৃদ্ধ বণিতা এমনকি তরুণরাও হাজির হচ্ছে শরীফের এ জুয়ার আসরে। ফলে একসময় নিঃস্ব হয়ে পথে বসতে বাধ্য হবে তারা।
বেতের বাজার খেওয়াঘাটের নিকটস্থ ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি খালি জায়গায় টিন ও ছটির বেড়া দিয়ে নির্মিত ঘরে রাতদিন বসে ঝান্ডু-মান্ডু তীর, ডিজিটাল ও দেশীয় জুয়ার জমজমাট আসর। সকাল থেকে এ আসর চলতে থাকে গভীর রাত পর্যন্ত। সিলেট নগরসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা জুয়াড়িরা শরীফের এ আসরে অংশ নেয়। খেলায় ধরেন লাখো-কোটি টাকা। এই জুয়ার আসরের পরিচালক শরীফের সহযোগিতায় রয়েছে লালা নামের আরেক যুবকসহ শরীফের বান্ধবী একাধিক যুবমহিলাও।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ভারতের মেঘালয়া রাজ্যের রাজধানী শিলং নগরের কোনো বাড়িতে অনুষ্ঠিত হয় ডিজিটাল তীর-জুয়া খেলা। বাংলাদেশে থাকা প্রতিনিধিদের মধ্যে বেতের বাজারের শরীফও এই তীর-জুয়া খেলার এজেন্ট। বেতের বাজারস্থ তার আসরে নিত্যদিন ডিজিটাল এ খেলা বসায় শরীফ। আর এটি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করে এজেন্ট শরীফ ও তার সহযোগী লালা। শরীফ ও লালা নিজেদের ভাগ রেখে খেলার লাভের অতিরিক্ত টাকা হুন্ডিতে পাচার করে দেয় ভারতের মেঘালয়া রাজ্যে।
সূত্রমতে খেলার নিয়ম হচ্ছে, ০ থেকে ৯৯ পর্যন্ত ১০০টি সংখ্যার মধ্যে একটিমাত্র সংখ্যা থাকে খেলায় অংশগ্রহণকারী জনতার, বাকি ৯৯টি নাম্বার সংরক্ষিত থাকে খেলার আয়োজকদের। ১টি সংখ্যা লটারির মাধ্যমে নির্ধারিত হবে। যে নম্বরটি লটারিতে ওঠে সেটির বিপরীতে যে বা যারা টাকা বাজি ধরেন তারা প্রতি ১ টাকায় ৭০ টাকা করে পাবেন। এই তীর খেলা অনুষ্ঠিত হয় প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। বর্তমানে রাতেও এ খেলা শুরু হয়েছে। সিলেটের স্থানীয় এজেন্টদের মধ্যে শরীফও এ তীর খেলার সিরিয়াল দিয়ে থাকে। এটিতে সিলেট নগর ও নগরের বাইরের বড় বড় জুয়াড়িরা অংশ নেয়। এছাড়াও রাতভর দেশীয় স্টাইলের জুয়া খেলা চলে শরীফের এই আসরে। ভোরে কিছু সময়ের জন্য আসরটি বন্ধ করা হলেও পরে আবার ১০টা থেকে শুরু হয় ভারতীয় ডিজিটাল তীর খেলা।
শরীফের এই জুয়া খেলায় সাধারণ জুয়াড়ি ছাড়াও ঝুকে পড়েছে স্কুল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত ও দুপুরের নাশতার নামে বাবা-মা কিংবা অভিভাবকদের কাছ থেকে যে টাকা আনে, এই টাকা দিয়ে জড়িয়ে পড়ে শরীফের আসরে জুয়া খেলায়।
সূত্রমতে শরীফের জুয়ার আসরের ভূমি ও ঘরের জনৈক মালিক আয়োজক শরীফের কাছ থেকে দৈনিক ২৫ হাজার টাকা করে গুনে নেন। পাশপাশি এসএমপি’র কোতোয়ালি থানা পুলিশের সোর্স মানিও প্রতিদিন এ আসর থেকে নির্ধারিত অংকের বখরা আদায় করে থাকে। শরীফের ভয়ংকর এই আসর থেকে ছাত্র ও যুবদের ফেরাতে প্রশাসনের জোরালো ভূমিকা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন এলাকার শান্তিকামী মানুষ।
এসএমপি’র কোতোয়ালি থানার নবাগত ওসি এস.এম আবু ফরহাদ বলেন, ‘বেতের বাজারে জুয়ার আসর বসে বলে আমি আদৌ অবগত নই। অনুসন্ধান চালিয়ে এটা বন্ধে ত্বড়িৎ অভিযান চালানো হবে’ বলে জানিয়েছেন তিনি।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host