খরচার হাওরের ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ সংস্কার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে, তৃতীয় বিল পরিশোধের আহবান

প্রকাশিত: ১২:১২ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১১, ২০২১

খরচার হাওরের ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ সংস্কার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে, তৃতীয় বিল পরিশোধের আহবান

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের বৃহত্তর খরচার হাওরের (২৩ ও ২৫)নং পিআইসির ফসল রক্ষা বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ সংস্কার কাজ প্রায় ৭৫% সম্পন্ন হয়েছে। ইতিপূর্বে পিআইসিদের দ্বিতীয় বিল পরিশোধ করা হয়েছে। এবার তারা তৃতীয় বিল পরিশোধের যোগ্য বলে দাবি করছেন এবং সেই সাথে তৃতীয় বিল পরিশোধে বিলম্ব না করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন পিআইসিরা।

 

সরজমিনে দেখা যায়, নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যেই খরচার হাওরের (২৩ ও ২৫)নং পিআইসির ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ প্রায় ৭৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়ে গেছে। শুধু বাকি আছে ড্রেসিংসহ সবুজ ধুবরা বন। তবে এই বন লাগানোর ব্যাপারে ভারী বৃষ্টির অপেক্ষায় রয়েছেন পিআইসিরা। তাদের মতে, বৃষ্টি হলে ধুবরা বন খুব নিখুঁতভাবে মাটির সাথে সেটে বসে এবং দ্রæততার সহিত সেটি স¤প্রসারণ হয়। এসময় বাঁধের দায়িত্বে থাকা পিআইসিদের সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের।

 

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, কাজ শুরু হয় ১৫ ডিসেম্বর, শেষ হওয়ার কথা ২৮ ফেব্রæয়ারি। ১ দিন পর শেষ হচ্ছে নির্ধারিত সময়সীমা, কিন্তু শেষ হচ্ছে না নির্ধারিত বাঁধের নির্মাণ কাজ। এ কারণে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর ৭ মার্চ পর্যন্ত ফসল রক্ষাবাঁধের কাজের সময় বর্ধিত করা হয়েছে।

 

এদিকে জেলার শাল্লা, ধর্মপাশা তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, দিরাই, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজে অনেক অসম্পূর্ণ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের বর্ধিত সময়ের মধ্যে এসব অসম্পূর্ণ নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ শেষ হবে কি না, এনিয়ে হাওর পাড়ের কৃষকরা শঙ্কিত।

 

এদিকে গৌরারং ইউনিয়নের খরচার হাওরের বাঁধগুলো সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় (২৩ ও ২৫) নং (পিআইসি) প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি রয়েছে। সবগুলো পিআইসির নির্মাণ কাজ হয়েছে প্রায় ৭৫%। বৃষ্টি হলে শেষ হবে শতভাগ সংস্কার কাজ সম্পন্ন হবে বলে তারা জানান।

 

খরচার হাওরের কৃষক মুজিবুর রহমান বলেন, হাওরে আমার ১০ একর বোর জমি রয়েছে রোপন করেছি ফসল ভাল হয়েছে, এবছর আমাদের হাওর ফসল রক্ষাবাঁধের কাজ ভালো হয়েছে। আশা করি অকাল বন্যার কবল থেকে ফসল রক্ষা হবে। দীর্ঘযুগ পর চলাচলের একটি বিশ্ব রোডের মত রাস্তা পেয়েছি। আমাদের দুর্ভোগ লাগব হয়েছে। পাশাপাশি অতি সহজেই হাওরের ধান গাড়ির মাধ্যমে নিজ নিজ ঘরে তুলতে পারব।

 

ফসল রক্ষাবাঁধের (২৩)নং পিআইসির সভাপতি আলী নুর বলেন, সরকার বাহাদুর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বাতিল করার পর এই প্রথম আমি পিআইসির সভাপতি হয়েছি। অফিসের নির্ধারিত সময়ের ভিতরে ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী শতভাগ ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করতে পারবেন বলে আশাবাদী। কিন্তু ভালো কাজের মূল্যায়ন পাইনি, আমি তৃতীয় বিল পাওয়ারযোগ্য কিন্তু দুইটি মাত্র বিল পেয়েছি। অর্থের অভাবে বড় কষ্টে আছি। আমি সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাই আমার বাঁধের কাজের পরিপ্রেক্ষিত বিল পরিশোধ করার জন্য।

 

২৫ নং পিআইসির সভাপতি রফিক আহমদ আলমগীর বলেন, আমার ফসল রক্ষাবাঁধের কাজ প্রায় ৯০ ভাগ হয়েছে। তৃতীয় বিল না পাওয়ায় ঠিকমত লেবারদেরকে টাকা দিতে পারছি না। কাজের বিল দ্রæত পাওয়া গেলে, অবশিষ্ট কাজ দ্রæত শেষ করতে পারতাম।

 

কৃষক তারা মিয়া বলেন, খরচার হাওর পাড়ে আমার বসতবাড়ি। হাওরে আমার প্রায় ৫ একর কৃষি জমি রয়েছে। আমাদের পিআইসির নির্মাণ কাজ প্রায় ৭৫ ভাগ সম্পন্ন হয়ে গেছে। বাকি রয়েছে শুধু ড্রেসিংসহ দুকরা বন। কিন্তু আমাদের বাঁধে বরাদ্দ অনেক কম কাজ বেশি। তৃতীয় বিল যাতে দ্রæত দেওয়া হয় তার জন্য কতৃপক্ষকে অনুরোধ জানাই।

 

উপ-সহকারি মোহাম্মদ আশরাফুল সিদ্দিকী বলেন, খরচার হাওরের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবার পথে।

 

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান বলেন, ফসল বাঁধের কাজ নির্ধারিত সময়ের ভিতর শেষ হবে। বাঁধের কাজে কোন অনিয়মের অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর