যুবলীগ নেতা লায়েক হত্যাকান্ড : হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে কর্মসূচি

প্রকাশিত: ১২:৩৭ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২, ২০২৩

যুবলীগ নেতা লায়েক হত্যাকান্ড : হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে কর্মসূচি

ছাতক প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের ছাতকে আলোচিত পৌর যুবলীগ নেতা লায়েক মিয়া হত্যাকান্ডের ঘটনায় হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে প্রতিদিনই থাকছে বিভিন্ন কর্মসূচি। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বিক্ষোভ মিছিল, মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ। শনিবারও উপজেলা ও পৌর য্বুলীগ, সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ, আমনা ’৯৩ ব্যাচ, বিক্ষুব্ধ ছাতকবাসী, মন্ডলীভোগ গ্রামবাসী ও ৭নং ওয়ার্ড ছাতক পৌরবাসীর যৌথ উদ্যোগে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়।

 

প্রতিবাদকারীরা বিশাল কয়েকটি ব্যনার নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। এরপর পৌর শহরের ট্রাফিক পয়েন্টে এসে সমবেত মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় ২ ঘণ্টাব্যাপী হাজার হাজার মানুষ সারিবদ্ধ হয়ে মানবন্ধন কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ করেন।
এ মানবন্ধনের নিহত লায়েকের পুত্র আরিফ আহমদ বাবার হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি জানিয়ে প্লেকার্ড হাতে দাঁড়ায়। একটা সময় সে আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে। মানবন্ধন শেষে খুনীদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে বিশাল প্রতিবাদ সভাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 

আওয়ামীলীগ নেতা ও পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আজমল হোসেন সজলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক শামীম আহমদ চৌধুরী, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অলিউর রহমান বকুল, ইউপি চেয়ারম্যান দেওয়ান পীর আব্দুল খালিক রাজা, আবুল হোসেন, জহিরুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, শাহাবুদ্দীন সাহেল, ইরাজ মিয়া কমিশনার, আওয়ামী লীগ নেতা জয়নাল আবেদীন, ক্রীড়াবিদ লাল মিয়া, ছালেক মিয়া, শফিকুল ইসলাম, নিজাম উদ্দিন, আব্দুল কাদির, রিয়াদ আহমদ চৌধুরী, মাহির চৌধুরী, সম্রাট চৌধুরী প্রমুখ।

 

বক্তারা বলেন, লায়েক হত্যাকারীদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার না করলে ছাতক অচল করে দেওয়া হবে। পরিকল্পিতভাবে লায়েককে হত্যা করা হয়েছে। তাপস চৌধুরী ও এমপি মানিকের নির্দেশে পথের কাটা সরিয়ে দেয়া হয়েছে বলে বক্তারা অভিযোগ করেন।

 

তারা বলেন, হত্যাকারী চক্রের মাধ্যমে সম্প্রতি নৌ পুলিশের উপর হামলা, লুটপাট, মারপিট, সুরমা, চেলা নদীতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু, নদীতে চাদাবাজি, চোরাচালান, মাদক পাচারসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে অপরাধের রাম রাজত্ব কায়েম করে আসছে বলে বক্তারা অভিযোগ করেন।

 

এদিকে, হত্যাকান্ডের ঘটনার চরদিন পর স্থানীয় এমপি মুহিবুর রহমান মানিকের ভাতিজা তানভীর রহমান ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র তাপস চৌধুরীসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯ টায় নিহত লায়েক মিয়ার ছোট ভাই আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় এ হত্যার মামলা দায়ের করেছেন।

 

এ মামলায় উপজেলা পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুছ শিবলুকে প্রধান করে ও ছাতক পৌরসভার প্যানেল মেয়র তাপস চৌধুরী, স্থানীয় এমপির ভাতিজা তানভীর রহমান, যুবলীগ নেতা সাদমান মাহমুদ সানি, সাবেক জামাত নেতা আলা উদ্দিন, আবুল খয়ের টুটুল, তাজ উদ্দিন, মিজান মিয়া, আব্দুল মতিন, শামসুল ইসলাম, মিলন মিয়া, এশাদ আলী, সায়মন, মহসিন ও সৌরভসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে হত্যার মামলা দায়ের করেন।

 

এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবু সাঈদ গত ২৮ মার্চ নিহতের ঘটনায় মামলা দায়ের করার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, লায়েক হত্যার ঘটনায় তার ছোট ভাইয়ের দায়ের করা মামলা রেকর্ড করা হয় (মামলা নম্বর ২৫)। আসামিদের গ্রেপ্তার করার জন্য পুলিশের অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।

 

উল্লেখ্য, ২৮ মার্চ মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে ছাতক থানা সংলগ্ন গনেশপুর খেয়াঘাটে অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাকে খুন করে যুবলীগের নেতা লায়েক মিয়াকে। তিনি ছাতক পৌর শহরের মণ্ডলিভোগ আবাসিক এলাকার মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর