পর্যটন উন্নয়নে করণীয় বিষয়ে মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক
জৈন্তাপুর একটি সম্ভাবনাময় পর্যটনবান্ধব উপজেলা

প্রকাশিত: ৭:৫০ অপরাহ্ণ, মে ১৩, ২০২৫

<span style='color:#077D05;font-size:19px;'>পর্যটন উন্নয়নে করণীয় বিষয়ে মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক</span> <br/> জৈন্তাপুর একটি সম্ভাবনাময় পর্যটনবান্ধব উপজেলা

জৈন্তাপুর সংবাদদাতা
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় ‘উপজেলার পর্যটনের উন্নয়নে করণীয়’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুর সাড়ে ১২টায় উপজেলা পরিষদ হলরুমে জৈন্তাপুর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জর্জ মিত্র চাকমা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) হোসাইন মোহাম্মদ আল-জুনায়েদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) জৈন্তাপুর মিজ ফারজানা আক্তার লাবনী, জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাসার মোহাম্মদ বদরুজ্জামান এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এ মোহাম্মদ ফারুখ।
মতবিনিময় সভায় উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রতিনিধি, সাংবাদিক, শিক্ষক এবং পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা অংশ নেন। তাঁরা জৈন্তাপুরের পর্যটন খাতের উন্নয়নে প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন এবং বিদ্যমান সমস্যা তুলে ধরেন।
সভায় লালাখাল ও সারীনদীর মতো দর্শনীয় স্থানসমূহে পর্যটনবান্ধব উন্নয়ন, ডিবিরহাওড় ও লাল শাপলা বিলের রাস্তা দ্রুত সংস্কার, সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের পাশে নিরাপত্তা জোরদার ও ডাস্টবিন স্থাপন, চা-বাগান সংলগ্ন খালি টিলা এলাকাগুলো দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা, দরবস্ত এলাকায় বর্ষাকালে নৌকা যোগে যাতায়াতের জন্য ঘাট নির্মাণ, এবং পাহাড়ি এলাকায় আনারস ও লেবুর চারা রোপণের মাধ্যমে আকর্ষণীয় করার আহ্বান জানানো হয়।
এছাড়া সভায় ঐতিহাসিক জৈন্তা রাজ্যের মেঘালিথ পাথর, জৈন্তেশ্বরী রাজবাড়ী এবং অন্যান্য পুরাকীর্তি সংরক্ষণ ও উন্নয়নের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
প্রধান অতিথি মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘জৈন্তাপুর একটি সম্ভাবনাময় পর্যটনবান্ধব উপজেলা। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ঐতিহ্য দেশের পর্যটন মানচিত্রে গুরুত্ব দিয়ে উপস্থাপন করা সম্ভব। আজকের সভায় যেসব সমস্যা ও প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে, সেগুলো সরকার গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেবে।’
তিনি বলেন, “জৈন্তাপুরের পর্যটন আমাদের সম্পদ। এই সম্পদ সংরক্ষণে শুধু সরকারের নয়, সাধারণ মানুষেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।” জেলা প্রশাসক জৈন্তাপুরের সরকারি প্রতিষ্ঠান সাইট্রাস গবেষণা কেন্দ্রের প্রচার-প্রসার বৃদ্ধির নির্দেশনা দেন। পাশাপাশি তিনি অনাবাদি পাহাড়ি জমিগুলোতে ফলজ চাষাবাদের মাধ্যমে স্থানগুলোকে পর্যটন উপযোগী করে তোলার আহ্বান জানান।
তিনি শাপলা বিলের রাস্তা সংস্কারের কাজে গতি বাড়িয়ে জনদুর্ভোগ কমাতে উপজেলা এলজিআরডিকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন।
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নিজপাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইন্তাজ আলি, জৈন্তাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম, চারিকাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুলতান করিম, দরবস্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাহারুল আলম বাহার, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাফিজ, বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মাসুক আহমেদ, ইউপি সদস্য হুমায়ুন কবির খান।
এছাড়াও সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমা আক্তার, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ হাসিনুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী একেএম রিয়াজ মাহমুদ, সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অলিউর রহমান, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রেন্টু পুরকায়স্থ, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবেদ হাসান, আবাসিক প্রকৌশলী সজল চাকলাদার, আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা নাজমা বেগম, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তাসলিমা, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, মাধ্যমিক একাডেমিক সুপারভাইজার আজিজুল হক খোকন, সমবায় কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রুহুল আমিন, খাসিয়া সেবা সংঘের সভাপতি সুরঞ্জিত রাম্ভাই এবং শিক্ষকদের মধ্যে বদিউল আলম, নুর উদ্দিন, ফয়জুল হক সহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
সবার অংশগ্রহণে জৈন্তাপুরের পর্যটন উন্নয়নে করণীয় বিষয়ে একটি ঐক্যমতের ভিত্তি তৈরি হয়, যা ভবিষ্যতে এলাকার টেকসই উন্নয়নে সহায়ক হবে বলে সকলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর