ঢাকা ১লা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৮:১০ অপরাহ্ণ, মে ২০, ২০২৫
শাবিপ্রবি সংবাদদাতা
বিশ্বে প্রতিবছর ৬ দশমিক ৮ মিলিয়ন টন চা উৎপাদিত হয়ে থাকে। এর মধ্যে চীনে ৩ দশমিক ২ মিলিয়ন ও বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ টন উৎপাদিত হয়। চীন বর্তমানে প্রযুক্তির সাহায্যে চা উত্তোলন করে থাকে। বাংলাদেশে তা পরীক্ষামূলক পর্যায়ে আছে। চা প্রদর্শনী ও পারস্পরিক আলোচনা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
মঙ্গলবার (২০ মে) সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) চা প্রদর্শনী উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন।
সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন সামাজিক বিজ্ঞান ভবনে এ অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাবিপ্রবি উপাচার্য এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘চায়না-বাংলাদেশের মধ্যে চায়ের বিনিময়ের মাধ্যমে নতুন দিগন্ত খুলছে। প্রযুক্তির মাধ্যমে গবেষণা বাংলাদেশের চা–শিল্পকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার এখানে আরও নতুন উদ্ভাবনের সহযোগিতা করবে। আশা করি, চীন সরকার বাংলাদেশেও তাদের চা–শিল্পের নতুন ধারণা শেয়ার করবে এবং নতুন ভেরিয়েন্টের উদ্ভাবনে সহযোগিতায় পাশে থাকবে।’
অনুষ্ঠানের সভাপতি ও শাবিপ্রবির রাজনৈতিক অধ্যয়ন (পলিটিক্যাল স্টাডিজ) বিভাগের অন্তর্ভুক্ত চায়নিজ কর্নারের তত্ত্বাবধায়ক সাহাবুল হকের সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য দেন শাবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ ইসমাইল হোসেন, সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাওলানা খাইরুল হোসেন, শ্রীমঙ্গলের বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের শ্রমিক উপকমিটির আহ্বায়ক তাহসিন আহমেদ চৌধুরী, বাংলাদেশে চীনা দূতাবাসের সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা লি শাওপিং।
অনুষ্ঠানে চীনের চায়ের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট পরিচালক ইয়াং হুই; প্রকারভেদ ও প্রক্রিয়াকরণ নিয়ে চীনা শিক্ষক জং কিয়ানআন এবং চা–শিল্প নিয়ে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের শিক্ষক লি ইয়াংসি বক্তব্য দেন। এতে বাংলাদেশের চা–শিল্প নিয়ে বক্তব্য দেন শাবিপ্রবির খাদ্য প্রকৌশল ও চা–প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ইফতেখার আহমেদ এবং কর্মসংস্থান ব্যাংকের পরিচালক সালাউদ্দিন বাবলু।
অনুষ্ঠানে চীনা দূতাবাসের সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা লি শাওপিং বলেন, ‘বাংলাদেশে চা একটি ঐতিহ্যবাহী পণ্য। দুই দেশের মধ্যে এই খাতে গবেষণা ও উদ্ভাবনের সুযোগ অসীম। এ ধরনের উদ্যোগ সেই পথকে প্রশস্ত করে।’
খাদ্য প্রকৌশল ও চা–প্রযুক্তি বিভাগের প্রধান ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা চাই, শিক্ষার্থীরা চা–প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হোক, উদ্ভাবনী উদ্যোগে অংশ নিক। এ প্রদর্শনী তাদের হাতে-কলমে শেখার সুযোগ তৈরি করেছে।’
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন শাবিপ্রবির পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের প্রধান সৈয়দ আশরাফুর রহমান এবং খাদ্য প্রকৌশল চা–প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ওয়াহিদুজ্জামান। অনুষ্ঠানে সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য দেন শাবিপ্রবির পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক দিলারা রহমান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শাবিপ্রবি অধ্যাপক জায়েদা শারমিন, সহকারী অধ্যাপক এমদাদুল হক, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, চা উৎপাদন ও বিক্রির সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা।
প্রদর্শনীতে শাবিপ্রবির খাদ্য প্রকৌশল ও চা–প্রযুক্তি বিভাগের পক্ষ থেকে স্টল দেওয়া হয়েছে। জানতে চাইলে ওই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ক্রীমা চক্রবর্তী মনে করেন, এ আয়োজনের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে চা-বাণিজ্যের উন্নয়ন ঘটবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের ল্যাবে প্রক্রিয়াজাত করা ২২ রকমের চা প্রদর্শন করা হচ্ছে। এগুলো আমাদের হাতে তৈরি করা। বাজারের বিক্রি করা চায়ের সঙ্গে গুণগত তফাত রয়েছে। আজকের আয়োজনে চীনা কমিউনিটিকে আমাদের তৈরি চায়ের ভেরিয়েন্ট দেখাতে পারছি।’
সারা দিনব্যাপী প্রদর্শনীতে উপচে পড়া ভিড়। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষক, গবেষক এবং স্থানীয় দর্শনার্থীরাও ছিলেন সমান আগ্রহী। অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল বাংলাদেশে চীনা দূতাবাস, শাবিপ্রবির চায়নিজ কর্নার, খাদ্য প্রকৌশল ও চা–প্রযুক্তি বিভাগ।
আয়োজকেরা জানান, প্রদর্শনীতে দেশের নামীদামি ২০টি চা উৎপাদন ও বিক্রয় প্রতিষ্ঠানের স্টল স্থাপন করা হয়। সবশেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দুই দেশের নৃত্যের প্রদর্শনীর মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host