ঢাকা ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:৫৪ অপরাহ্ণ, মে ২৭, ২০২৫
জুবায়ের আহমদ, জকিগঞ্জ
প্রকাশ্যে ‘শতভাগ বিদ্যুতায়িত’ ঘোষণার আলোয় আলোকিত জকিগঞ্জ উপজেলা, অথচ এরই ভেতরে চাপা পড়ে আছে একটি ক্ষুদ্র গ্রামের দীর্ঘশ্বাস। সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার ৬নং সুলতানপুর ইউনিয়নের ‘উত্তর ঘেচুয়া’ নামে ছোট্ট এক গ্রামে বসবাসরত ৮টি পরিবার এখনো অন্ধকারেই জীবন কাটাচ্ছেন।
এ পরিবারগুলোর কাছে বিদ্যুৎ যেন কেবলই এক স্বপ্নের নাম। রাত নামলেই যখন পাশের গ্রামগুলো আলোয় ঝলমল করে, তখন উত্তর ঘেচুয়ার শিশুরা কুপির আলোয় বই পড়ে, গৃহিণীরা আঁধারে রান্না করেন, আর বৃদ্ধরা নিরব কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এলাকার এক বাসিন্দা মো. আব্দুর রাজ্জাক লিখিত আবেদন করে জানান, প্রায় চার বছর আগে বিদ্যুৎ সংযোগের আশায় পাঁচটি বৈদ্যুতিক খুঁটি বসানো হয় গ্রামের সীমানায়। কিন্তু এরপর আর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। একাধিকবার আবেদন করেও ফল মেলেনি। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী মহলের ষড়যন্ত্রেই এ গ্রামটি বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে।
আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, কোমলমতি শিশুদের শিক্ষাজীবন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আধুনিক জীবনযাত্রা, স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপত্তা—সবকিছুতেই পিছিয়ে পড়ছে এই পরিবারগুলো। বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় তারা যেন যুগের চেয়ে বহু বছর পিছিয়ে পড়ে বেঁচে আছেন।
সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার বলেন, কীভাবে এই ৮টি পরিবার বিদ্যুৎসেবার বাইরে রয়ে গেল, তা জানা নেই। বর্তমানে বিনামূল্যের কোনো প্রকল্প নেই; চাইলে ব্যক্তিগত খরচে সংযোগ নিতে হবে। উত্তর ঘেচুয়া গ্রামে বিদ্যুতের খুঁটি কিভাবে গেল সে বিষয়ে তিনি স্পষ্ট কিছু বলতে পারেননি।
সরকার যখন প্রত্যন্ত অঞ্চলেও বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকারে কাজ করে যাচ্ছে, তখন এই ৮টি পরিবারও আলোর অধিকার পাওয়ার প্রত্যাশা করে। তাই সংশ্লিষ্ট দপ্তর, বিশেষ করে সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এলাকাবাসী।
তাদের আশা—এ আবেদন হয়তো কোনো এক সকালের আলো হয়ে দেখা দেবে, হয়তো তাদের সন্তানরাও একদিন বৈদ্যুতিক বাতির নিচে বসে স্বপ্ন দেখতে শিখবে।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host