ঢাকা ৬ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:১৬ অপরাহ্ণ, জুন ১৬, ২০২৫
কুলাউড়া প্রতিনিধি
ঘাতক জুনেলের বাড়ির সামনে দিয়ে সিংগুর গ্রামে প্রাইভেট পড়তে যেত স্কুল শিক্ষার্থী আনজুম।বৃহস্পতিবার ১২ জুন সকালে রাস্তায় একা পেয়ে ধর্ষণে চেষ্টা করার কথা স্বীকার করে। ঘটনার পরদিন পরিবারের পক্ষ থেকে কুলাউড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়।শনিবার (১৪ জুন) বিকেলে বাড়ির পাশে ছড়ার ধারে দুর্গন্ধ পেয়ে ভিকটিমের ভাই ও মামা খোঁজ করতে গিয়ে ঝোপের মধ্যে থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেন।এধরনের ঘটনায় এলাকার মানুষ হতভম্ব নিন্দার ঝড় উঠে উপজেলাজুড়ে। পুলিশের একটি চৌকশ টিমের প্রচেষ্ঠায় ঘটনার ৩ দিনের মধ্যে একই এলাকার জুনেল মিয়া নামের ঘাতককে গ্রেফতারসহ বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় নিখোঁজের দুই দিন পর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার হওয়া স্কুলছাত্রী নাফিজা জান্নাত আনজুম (১৫) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় ভিকটিমের প্রতিবেশী মো. জুনেল মিয়াকে (৩৯) গ্রেপ্তার করা হয়। তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ড সংশ্লিষ্ট আলামতও উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের হলরুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন এসব তথ্য জানান।
পুলিশ জানায়, তদন্তে নামে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নোবেল চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল দায়িত্বপ্রাপ্ত) মো. আজমল হোসেন, ওসি গোলাম আপছারসহ একটি বিশেষ তদন্ত দল।
অভিযান চালিয়ে ভিকটিমের স্কুল ব্যাগ, বই, একটি জুতা এবং পরিহিত বোরকা উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ ও আলামতের ভিত্তিতে সন্দেহভাজন হিসেবে প্রতিবেশী জুনেল মিয়াকে আটক করা হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘তার মোবাইল ফোনে পর্নোগ্রাফি দেখার ইতিহাসসহ অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণ করে তাকে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রাত ১২টার দিকে সে হত্যার দায় স্বীকার করে।জিজ্ঞাসাবাদে জুনেল মিয়া জানায়, আনজুম প্রায়ই তার বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে স্কুল ও প্রাইভেট পড়তে যেত। সেই সুবাদে সে মেয়েটির প্রতি কুপ্রবৃত্তি পোষণ করত। ঘটনার দিন সকালে প্রাইভেট শেষে ফেরার পথে আনজুমকে একা পেয়ে কথার ছলে তার পিছু নেয়। একপর্যায়ে জোরপূর্বক ঝাপটে ধরলে আনজুম চিৎকার করে। তখনই ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে সে গলায় চাপ দিয়ে মেয়েটিকে অচেতন করে ফেলে। এরপর মৃতপ্রায় অবস্থায় মেয়েটিকে স্থানীয় কিরিম শাহ মাজার সংলগ্ন ছড়ার পাশের ঝোপে ফেলে দেয়। হত্যার আলামত লুকাতে ব্যাগ, জুতা ও বোরকা ঘটনাস্থলের আশপাশে ফেলে রাখে। পুলিশ জানায়, আসামির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী স্থানীয়দের উপস্থিতিতে রোববার রাতে মেয়েটির বোরকা উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নোবেল চাকমা, কুলাউড়া থানার ওসি গোলাম আপছার, তদন্ত কর্মকর্তা সুদীপ্ত শেখর ভট্টাচার্য প্রমুখ।এ ঘটনায় কুলাউড়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শেষে দ্রুত চার্জশিট দেওয়া হবে।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host