গোয়াইনঘাট-সালুটিকর সড়কের কাজ শেষ হওয়ার আগেই নির্মিত অংশে ফাটল ও ভাঙন

প্রকাশিত: ৯:৪৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ৬, ২০২৫

গোয়াইনঘাট-সালুটিকর সড়কের কাজ শেষ হওয়ার আগেই নির্মিত অংশে ফাটল ও ভাঙন

বিজয়ের কণ্ঠ ডেস্ক
তিন দফা সময় বাড়ানো হলেও শেষ হয়নি সিলেটের সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়কের নির্মাণকাজ। ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কের অর্ধেক কাজ এখনও বাকি। শুধু তাই নয়, ইতোমধ্যে নির্মিত অংশেও দেখা দিয়েছে ফাটল ও ভাঙন। প্রকল্পে ব্যবহৃত হয়েছে নিম্নমানের উপকরণ—এমন অভিযোগের সত্যতাও পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীন এই উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে ঢালি কনস্ট্রাকশন ও দেলোয়ার হোসেন কনস্ট্রাকশন নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২৪ সালে প্রায় ২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের কাজ ছয় মাসে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও অগ্রগতি আশানুরূপ নয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের ফলে ইতোমধ্যে সড়কের কিছু অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে আরসিসি ঢালাইয়ের পরপরই সেই অংশে ফাটল ধরা পড়ায় প্রশ্ন উঠেছে কাজের মান নিয়ে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে নামে দুদকের একটি টিম। সরেজমিন পরিদর্শনে তারা অনিয়মের প্রমাণও পেয়েছে। দুদক সিলেট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, “আমাদের তদন্তে নির্মাণকার্যে অনিয়মের সত্যতা মিলেছে। শিগগিরই এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন কমিশনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাঠানো হবে।”

তবে এসব অনিয়মের দায় নিতে নারাজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দেলোয়ার হোসেন কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী দেলোয়ার হোসেন দাবি করেন, “প্রকল্প এলাকায় কয়েক দফা বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে নির্ধারিত সময়মতো কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি।”

এদিকে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ বলছে, ঠিকাদারদের একাধিকবার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এবার কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এলজিইডি সিলেটের প্রকৌশলী এ.কে. শহীদুল ইসলাম বলেন, “কাজের মান খারাপ হলে দায়ী প্রতিষ্ঠানকে ছাড় দেওয়া হবে না। নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সিলেটের অন্যতম পর্যটন এলাকা গোয়াইনঘাটের প্রধান এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করেন দুই লক্ষাধিক মানুষ। বিছনাকান্দি, পান্থুমাইসহ আশপাশের দর্শনীয় স্থানে যাওয়া পর্যটকরাও পড়ছেন চরম দুর্ভোগে। এতে করে শুধু স্থানীয় বাসিন্দারাই নয়, ভোগান্তিতে পড়ছেন পর্যটকরাও।

সড়কটির দ্রুত ও মানসম্মত সংস্কারের দাবিতে মুখর হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, দুর্নীতি ও দায়িত্বহীনতার কারণে পিছিয়ে যাচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পর্যটন খাতও।

সর্বশেষ ২৪ খবর