ঢাকা ১৪ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:১১ অপরাহ্ণ, জুলাই ১০, ২০২৫
বিজয়ের কণ্ঠ ডেস্ক
গত ২ জুলাই কি হয়েছিলে জানালেন এমদাদুল ইসলাম মিজান। বুধবার বাংলাদেশ মাল্টিমিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন (বিএমজেএ) সিলেট বিভাগীয় কমিটির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমদাদুল ইসলাম মিজান বলেন, আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন সক্রিয় কর্মী, পতিত স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ১৭ বছর রাজপথে সোচ্চার থাকা একজন কর্মী, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে আহত হওয়া একজন জুলাই যোদ্ধা।
আজ আমি অত্যন্ত দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি- আমার সাথে ঘটে যাওয়া অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক একটি ঘটনা ও মিথ্যা বদনামের অপবাদ মাথায় নিয়ে প্রকৃত সত্যতা আপনাদের মাধ্যমে সবার সম্মুখে তুলে ধরার উদ্দেশ্যে। আপনারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দ্বারা কমবেশি সবাই অবগত আছেন, গত ২ জুলাই আমাদের পাড়ায় বসবাস করে দিনমজুর দরিদ্র অটো রিক্সা চালক যার নাম সান্না, সে মাঝে মধ্যে আমার পরিবারের লোকজনকে নিয়ে যাতায়াতের জন্য তার অটোরিক্সা ব্যবহার করে, সেই সুবাদে তার সাথে আমার দীর্ঘদিনের ভাল একটি সম্পর্ক গড়ে ওঠে, সে গত ২ জুলাই হঠাৎ আমাকে কল দিয়ে জানায় কে বা কাহারা তার গাড়ি আটক করে টাকা দাবি করতেছে, সে ফোনকলে কান্নাকাটি করে এবং আমাকে বলে তাকে গিয়ে সাহায্য করার জন্য, আমি তাকে তার অবস্থানের কথা জিজ্ঞেস করলে সে আম্বরখানার কথা বলে, আমি তার অসহায় কান্না শুনে তাকে সহযোগিতার উদ্দেশ্যে আমার আরেক বন্ধু সাজু আহমদ কালাইকে সাথে নিয়ে আম্বরখানাতে যাই। যাওয়ার সাথে সাথে দেখি অটো ড্রাইভারকে দা দিয়ে নয়ন মারতে আসে, তখন আমি বাধা দিয়ে বলি ‘ভাই সে যদি কোন অপরাধ করে থাকে সে যদি অপরাধী হয়ে থাকে তবে তাকে আইনের হাতে তুলে দেন’। আম্বরখানা চায়না মার্কেটের সিসি ক্যামেরা চেক করলে পাওয়া যাবে, এর মধ্যে নয়ন বলে ‘তুমি কিতা তার গুন্ডানি’! আমি বলি ‘নারে ভাই আমি তার এক ভাই’, তখন সে বলে আচ্ছা চলো ভিতরে গিয়ে কথা বলি, এই বলে সাহেদ মিয়ার কলোনীতে আমাকে নিয়ে প্রবেশ করে, প্রবেশ করা মাত্রই ইসতিয়াক রাজু, নাহিদ, আহাদ, মান্না সহ আরো কয়েকজনকে দেখি, রাজু আমার বুকে রিভলবার ঠেকিয়ে বলে ‘তুই তুহিন ভাইকে চিনিস না? তোর এত বড় সাহস তুহিন ভাই বলার পরেও তুই কিভাবে রাশেদকে আহবায়ক না মেনে স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করিস’, বলার সাথে সাথেই পিছন থেকে ৩/৪ জন লোহার পাইপ দিয়ে আমাকে এলোপাতাড়ি পেঠানো শুরু করে, রাজু একজনের হাত থেকে লোহার পাইপ নিয়া আমাকে বেধড়ক পেঠায় হাতে পায়ে আঘাত করে, নাহিদ ভিডিও কলে মঞ্জুরুল করিম তুহিনকে আমাকে পিঠানির দৃশ্য দেখায়। পিটানি শেষে তাদের সঙ্গে থাকা আহাদ পার্শ্ববর্তী সেলুন থেকে চুল কাটার মেশিন নিয়ে এসে আমার মাথার চুল ন্যাড়া করে এবং তা আরেকজন ভিডিও করে। পরবর্তীতে এই ঘটনাকে লন্ডন প্রবাসী অজ্ঞাত কোন একজন নারীকে ছিন্তাই করার অপবাদ দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে ভিডিওটি আপলোড করে।
আমি পলাতক স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের এই বিগত ১৭বছর ধরে দলের একজন অনুগত সাধারণ কর্মী হিসেবে আমার সর্বোচ্চ দিয়ে দলের সকল কর্মসূচি পালনে রাজপথে সক্রিয় ভুমিকা পালন করে এসেছি, বারবার হামলা মামলা জেল-জুলুমের শিকার হয়েছি, এমনকি সর্বশেষ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আমি রাজপথে গুলিবিদ্ধ হয়েছি, কেউ বলতে পারবে না কখনও আমি কোনো ধরণের অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত ছিলাম বা অনৈতিক কাজে জড়িত কাউকে কোনো ধরণের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছি। উক্ত ঘটনাটি সম্পূর্ণ পূর্বপরিকল্পিত যা আমি পরে বুঝতে পারি, ছিন্তাইয়ের অপবাদ দেয়া হচ্ছে কিন্তু কাকে ছিন্তাই করা হলো তার কোনো উল্লেখ নাই তার কোনো সন্ধান নাই, আর কেউ যদি সত্যি সত্যি কোনো অপরাধের সাথে জড়িত থাকে তাহলে তার জন্য দেশে প্রচলিত আইন আছে পুলিশ প্রশাসন আছে, উনারা দেখবে। এটা দেখার ওরা কারা? যারা নিজেরাই ছিন্তাই-চুরি-ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত, প্রশাসনের তালিকায় যারা পেশাদার অপরাধী।
আমি আপনাদের নিশ্চয়তা দিয়ে বলছি অর্থনৈতিকভাবে আমি দরিদ্র পরিবারের সন্তান হতে পারি, হতে পারি আমি গরীব কিন্তু আমি চরিত্রহীন নই।
আপনাদের মাধ্যমে আমার সাথে ঘটে যাওয়া এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা এবং আমাকে সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবে চুড়ান্ত হেয় করা ঘটনার ন্যায়বিচার আশা করছি। আপনাদের কলম দ্বারা সমাজের কাছে প্রকৃত সত্য তুলে ধরার অনুরোধ জানাচ্ছি এবং আপনাদের মাধ্যমে আমার দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের কাছে আমার আকুতি ও মিনতি যে, ঘটনাটি আপনারা তদন্ত করে দেখবেন প্লিজ, আমি যদি নূন্যতম কোন অপরাধের সাথে জড়িত থেকে থাকি, যদি আপনাদের তদন্তে আমাকে দোষী বা অপরাধী হিসেবে পান তাহলে আমার বিচার করবেন, আমাকে সর্বোচ্চ শাস্তি দিবেন, দেশের আইনে আমার বিচার নিশ্চিত করবেন, আর যদি আমি আপনাদের তদন্তে নিরপরাধ বলে সাব্যস্ত হই তাহলে আমাকে আটক করে জোরপূর্বক ভিডিও ধারণ করা সহ আমার প্রতি করা অন্যায় অপবাদ জুলুম নির্যাতন সহ আমাকে সমাজের কাছে হেয় করা লাঞ্চিত করা ঘটনাটির সাথে যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করছি।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host