মাত্র ২২ হাজার টাকার জন্য খুন হন কলেজ ছাত্র ইয়াছিন : রহস্য উদঘাটন, শ্রীমঙ্গলে দুই বন্ধু গ্রেফতার

প্রকাশিত: ৮:৫৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৪, ২০২৫

মাত্র ২২ হাজার টাকার জন্য খুন হন কলেজ ছাত্র ইয়াছিন :  রহস্য উদঘাটন, শ্রীমঙ্গলে দুই বন্ধু গ্রেফতার


নিজস্ব প্রতিবেদক
মাত্র ২২ হাজার টাকার জন্য নির্মমভাবে প্রাণ দিতে হলো এক কলেজছাত্রকে। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে হৃদয় আহমেদ ইয়াছিন (১৯) নামের ওই শিক্ষার্থীকে শ্বাসরোধে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে জেলা পুলিশ। ঘটনায় জড়িত দুই মাদকাসক্ত বন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সোমবার (১৪ জুলাই) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার এম. কে. এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন, পিপিএম-সেবা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) নোবেল চাকমা ও শ্রীমঙ্গল থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মো. কাজল মিয়া (২০) ও মো. সিরাজুল ইসলাম (২১)। দুজনেরই স্থায়ী ঠিকানা কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হলেও তারা দীর্ঘদিন ধরে শ্রীমঙ্গলের শাহীবাগ এলাকায় অবস্থান করছিলেন।
পুলিশ জানায়, নিহত হৃদয় আহমেদ ইয়াছিন কমলগঞ্জ সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। পাশাপাশি কালীঘাট রোড এলাকায় একটি ওয়াইফাই কোম্পানিতে কাজ করতেন। অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে তিনি বন্ধু কাজলের কাছ থেকে ধার নেওয়া টাকায় দেনায় জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে বিরোধ থেকে ঘটে হত্যাকাণ্ড।
গত ৭ জুলাই সকালে শ্রীমঙ্গলের কাকিয়াছড়া চা বাগানের ১ নম্বর সেকশনে এক গাছের নিচে বেল্ট পেঁচানো অবস্থায় হৃদয়ের মরদেহ পাওয়া যায়। পুলিশ পরে অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা নেয় (মামলা নং ১৪, ধারা ৩০২/২০১/৩৪)।
জেলা পুলিশের নির্দেশনায় একটি বিশেষ তদন্ত টিম গঠন করা হয়। শহরের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা এবং গোপন সূত্রে দুই আসামির অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাজাপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যে হত্যায় ব্যবহৃত গামছা, স্কুল ব্যাগ, নিহতের মোবাইল ফোন এবং মোটরসাইকেল উদ্ধার করে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, কাজল হৃদয়ের কাছে পাওনা টাকা ফেরত না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়। চাকরি দেওয়ার কথা বলে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পর চাকরি না হওয়া এবং টাকা না পাওয়ায় ক্ষোভ থেকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ৬ জুলাই রাত ১১টার দিকে কাকিয়াছড়া চা বাগানে হৃদয়কে নিয়ে যায় তারা। সেখানেই টাকা নিয়ে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং ঘটনাটিকে আত্মহত্যা হিসেবে সাজাতে হৃদয়ের গলায় বেল্ট পেঁচিয়ে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেয়।
ঘটনার পর হৃদয়ের মোবাইল মাত্র ২৫০ টাকায় বিক্রি করে মোটরসাইকেল নিয়ে নানার বাড়িতে পালিয়ে যায় তারা।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর