ঢাকা ১৯শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৮:৫৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৬, ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
সিলেট সীমান্তবর্তী চারটি পয়েন্ট দিয়ে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের মাধ্যমে বাংলাদেশি ৫৫ জন নাগরিককে পুশ-ইন করার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (১৬ জুলাই) ভোর রাত চারটা, সকাল সাতটা এবং দুপুর বারোটা পঁয়তাল্লিশ মিনিটের দিকে সিলেট ব্যাটালিয়ন ৪৮ বিজিবির অধীনস্থ নোয়াকোট, কালাইরাগ, শ্রীপুর ও তামাবিল বিওপির দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় এই পুশ-ইন কার্যক্রম ঘটে।
সীমান্ত পরিস্থিতি সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণে রেখে বিজিবির নিয়মিত টহল দল নিরবচ্ছিন্ন দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক সাড়া দেয় এবং পাঁচটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে অনুপ্রবেশ করা এসব নাগরিককে সফলভাবে আটক করে। প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, আটককৃতরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক, যারা বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে গমন করেছিলেন।
আটকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ৩৪ জন সিলেট জেলার সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করে। এর মধ্যে কালাইরাগ বিওপি সীমান্ত দিয়ে আসা ৭টি পরিবারের মোট ১৯ জনের মধ্যে ৫ জন পুরুষ, ৯ জন নারী ও ৫ জন শিশু রয়েছে। তারা মূলত নড়াইল, কুষ্টিয়া ও খুলনা জেলার বাসিন্দা। অপরদিকে শ্রীপুর বিওপি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে আসা ৯টি পরিবারের ১৩ জনের মধ্যে ২ জন পুরুষ, ৮ জন নারী এবং ৩ শিশু রয়েছে। তাদের মধ্যে যশোর, হবিগঞ্জ, নরসিংদী, বরিশাল, সাতক্ষীরা এবং সিলেট জেলার বাসিন্দা রয়েছেন।
এছাড়া তামাবিল বিওপির অধীনস্থ নলজুরি নামক স্থান দিয়ে ১টি পরিবারের ২ জন (১ জন পুরুষ ও ১ জন নারী) বাংলাদেশি নাগরিক প্রবেশ করে, যারা যশোর জেলার বাসিন্দা।
সুনামগঞ্জ জেলার অধীনস্থ নোয়াকোট বিওপি সীমান্ত দিয়ে ছনবাড়ী নামক স্থান দিয়ে ৮টি পরিবারের মোট ২১ জন বাংলাদেশি প্রবেশ করে। তাদের মধ্যে ৪ জন পুরুষ, ১৫ জন নারী এবং ২ জন শিশু রয়েছে। জেলা অনুসারে তারা যশোর, নড়াইল, সাতক্ষীরা এবং সিলেটের বাসিন্দা।
সার্বিকভাবে বিশ্লেষণ করলে আটককৃতদের মধ্যে পুরুষ রয়েছেন ১২ জন, নারী ৩৩ জন এবং শিশু ১০ জন। জেলা ভিত্তিক বিবরণ অনুযায়ী, নড়াইল জেলার ২৩ জন, যশোরের ১২ জন, সাতক্ষীরার ১০ জন, সিলেটের ৪ জন, বরিশালের ২ জন, কুষ্টিয়া, খুলনা, হবিগঞ্জ ও নরসিংদী জেলার একজন করে রয়েছেন।
৪৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. নাজমুল হক বলেন, “বিএসএফ কর্তৃক সীমান্তে পুশ-ইন সংক্রান্ত বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে। আমরা নিয়মিত টহলের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছি এবং আটক ব্যক্তিদের যাচাই-বাছাই শেষে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় হস্তান্তর কার্যক্রম চলছে।” তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বিএসএফের নিকট জোরালো প্রতিবাদ লিপি প্রেরণ করা হয়েছে।
বিজিবি সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ের পর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে আটককৃতদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
সীমান্তে এমন ঘটনায় স্থানীয়ভাবে আলোচনার সৃষ্টি হলেও বিজিবির কড়া নজরদারি ও পেশাদার তৎপরতার ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ ধরনের ঘটনা সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় পারস্পরিক সমন্বয়ের গুরুত্বকে স্মরণ করিয়ে দেয়। তবে বিজিবির দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপের কারণে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host