সেলবরষ ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে চোরাকারবারি, চাঁদাবাজ ও ৭ মামলার আসামি মোহাম্মদ আলীকে আহবায়ক করায় উপজেলা জুড়ে সমালোচনা-ক্ষোভ

প্রকাশিত: ৭:৩০ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৩, ২০২৫

সেলবরষ ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে চোরাকারবারি, চাঁদাবাজ ও ৭ মামলার আসামি মোহাম্মদ আলীকে আহবায়ক করায় উপজেলা জুড়ে সমালোচনা-ক্ষোভ

ধর্মপাশা প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গত রোববার রাতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে আহ্বায়ক, যুগ্ম আহ্বায়কসহ ১১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও চার যুগ্ম আহ্বায়ক স্বাক্ষরিত চিঠিতে। এর মধ্যে উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে চোরাকারবারি, চিহ্নিত চাঁদাবাজ ও সাত মামলার আসামি মোহাম্মদ আলীকে আহবায়ক করায় উপজেলা জুড়ে সমালোচনার ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে আহ্বায়ক কমিটির একাধিক সদস্যের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে মোহাম্মদ আলীর মতো অপরাধীকে কমিটিতে ঠাঁই দেওয়া হয়েছে বলেও গুঞ্জন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন- মোহাম্মদ আলীর মতো সাত মামলার আসামিকে আহ্বায়ক কমিটিতে স্থান দেওয়ায় বিএনপির ভাবমূর্তি ক্রমশ নষ্ট হতে চলেছে। চিহ্নিত একজন চাঁদাবাজকে দলে ঠাঁই দিয়ে দলের সবাইকে চাঁদাবাজ হিসেবে উপজেলায় প্রতিষ্ঠিত করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। কেউ কেউ মনে করছেন- তার চাঁদাবাজির বড় অংশ বিএনপির নীতি নির্ধারকদের কাছে পৌছে থাকে বিধায় তাকে এমন সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে আহ্বায়ক কমিটির একাধিক সদস্যরা মোহাম্মদ আলীকে দ্রুত অপসারণের দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য মোহাম্মদ আলীর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির একাধিক সদস্য জানান, সেলবরষ ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মিলেমিশে ভারতীয় চিনি ও গরু চোরাচালানের ব্যবসা করেছেন। মোহাম্মদ আলীর আপন ছোট ভাই আহম্মদ আলী সেলবরষ ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি পদে এবং তাঁর আপন ভাগনে অপু বাদশাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি পদে রয়েছেন। মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে চোরাচালান, চাঁদাবাজি ও পুলিশের ওপর আক্রমণসহ সাতটি মামলা আদালতে বিচারাধীন। আর্থিক সুবিধা নিয়ে এমন বিতর্কিত ব্যক্তিকে আহ্বায়ক পদ দেওয়ায় তাঁরা খুবই হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন। দ্রুত তাঁকে এই পদ থেকে অপসারণের জন্য তাঁরা দাবি জানাচ্ছেন।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক লিয়াকত আলী বলেন, ‘ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, চোরাচালান, পুলিশ অ্যাসল্টসহ সাতটি মামলা যে রয়েছে, সেটি আমার জানা ছিল না।’
এ বিষয়ে জানার জন্য সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কলিম উদ্দিন মিলনের ব্যবহৃত ০১৭১১৮৩১৯২৪ ও ০১৯৮২১০০১০০ নম্বরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এরপর বক্তব্য নেওয়ার জন্য চেষ্টা করা হয় সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির স্বাক্ষর ক্ষমতাপ্রাপ্ত সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুল হক’র ব্যবহৃত ০১৭১২৫১৬৫৩৭ নম্বরে। কিন্তু নাম্বারটি বার বার ব্যস্ত দেখানোর কারণে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর