ঢাকা ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৮:০৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৬, ২০২৫
বিজয়ের কণ্ঠ ডেস্ক
সিলেটবাসী চলতি মৌসুমে চরম বিদ্যুৎ সঙ্কটে ভুগছেন। টানা ১০ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে কুমারগাঁও পাওয়ার স্টেশন। ফলে পুরো সিলেট অঞ্চলে সীমাহীন লোডশেডিং চলছে। দিনের বেশিরভাগ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী ও গ্রামীণ জনগণ। ইদানিং অতিরিক্ত গরমের ভেতর বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী। বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জানা যায়, কুমারগাঁও ১৩২/৩৩ কেভি পাওয়ার স্টেশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পাওয়ার স্টেশন। আর এই পাওয়ার স্টেশনের একটি ট্রান্সফরমার পুড়ে যাওয়ায় সেটি বন্ধ রাখা হয়েছে। যেহেতু যন্ত্রাংশ বিদেশ থেকে আনতে হয়, তাই কবে নাগাদ এটি মেরামত হয়ে পুনরায় চালু হবে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তাই সিলেটে এখন শুধু গ্রিড থেকে পাওয়ার আনা হচ্ছে। সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে নিজস্ব জেনারেশন সিলেটে আর নেই। তার উপর চাহিদার তুলনায় কম বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে ন্যাশনাল লোড ডেসপ্যাচ সেন্টার (এনএলডিসি)।
এদিকে পাওয়ার স্টেশন বন্ধের কারণ জানতে চাইলে বিউবো কর্তৃপক্ষ জানায়, পাওয়ার স্টেশনের ট্রান্সফরমার পুড়ে যাওয়ার কারণে কুমারগাওয়ের ২৫ মেগাওয়াট পাওয়ার স্টেশন বন্ধ হয়েছে।
বিউবো নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, সিলেট বিভাগে ৭০০ মেঘাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে তবে ছুটির দিন ছাড়া বিদ্যুৎ বিতরণ করা হচ্ছে ৫০০ মেঘাওয়াট। সিলেট মহানগরীতে পাঁচটি ডিভিশনে ১৩টি সাবস্টেশন আছে। তাপমাত্রা বেশি থাকার কারণে ফিউজ ছিঁড়ে যাওয়া, তার ছিঁড়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা বৃদ্ধি পেয়েছে । তারওপর নগরীর কুমারগাওয়ের ২৫ মেগাওয়াট পাওয়ার স্টেশনের ট্রান্সফরমার পুড়ে যাওয়ার কারণে ১০ দিন থেকে স্টেশন বন্ধ রয়েছে। এরপর থেকেই সিলেটে ব্যাপক হারে লোডশেডিং বেড়ে গেছে এবং ভোল্টেজও কম হচ্ছে। পাশাপাশি চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে না সিলেটে।
ভুক্তভোগী সিলেট নগরীর বাসিন্দারা বলেন, ‘দিনে ৬-৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। রাতে ঘুমানো দুষ্কর হয়ে পড়েছে। অফিস, স্কুল, হাসপাতাল—সবখানেই বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ সীমিত হওয়ায় পুরো সিলেট অঞ্চলে কয়েক ঘণ্টা অন্তর লোডশেডিং চালু রয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিদ্যুৎ না থাকায় উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা।’
বিউবো সিলেট বিতরণ বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামস-ই আরেফিন বলেন, ‘পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় ইদানিং লোডশেডিং করতে হয়। এদিকে কুমারগাঁওয়ে প্রায় ১০ দিন থেকে পাওয়ার স্টেশন বন্ধ রয়েছে। তাই এখন বিদ্যুতের ঘাটতি থাকার জন্য ঘন ঘন লোডশেডিং করতে হচ্ছে। অন্যদিকে ঢাকা থেকে প্রায় সময় হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া হয় বিদ্যুৎ। সিস্টেমে ফিকুয়েন্সি ডাউন হয়ে গেলে ঢাকা থেকে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়। ইদানীং প্রায় প্রতিদিনই ঢাকা থেকে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাই লোডশেডিংয়ের জন্য মানুষজন বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন।’
সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির বলেন, ‘সিলেট বিভাগে ৭০০ মেঘাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে তবে ছুটির দিন ছাড়া বিদ্যুৎ বিতরণ করা হচ্ছে ৫০০ মেঘাওয়াট। সিলেটের কুমারগাওয়ের ২৫ মেগাওয়াট পাওয়ার স্টেশনের ট্রান্সফরমার পুড়ে যাওয়ার কারণে প্রায় ১০দিন ধরে স্টেশন বন্ধ রয়েছে। এই জন্য সিলেটে লোডশেডিংও বেড়ে গেছে এবং ভোল্টেজও কম হচ্ছে। আমরা এখন গ্রিড থেকে পাওয়ার আনছি। আমাদের নিজস্ব জেনারেশন সিলেটে আর নেই। এটা চালু হলে সিলেটের লোডশেডিং কমবে। লো ভোল্টেজের সমস্যাও সমাধান হবে। যন্ত্রপাতি বাইরে থেকে আনা হয় তাই বলা যাচ্ছে না কতদিনের ভেতর ঠিক হবে।’
সিলেটভিউটোয়েন্টিফোর-এর প্রতিবেদন
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host