কৃষি জমি ও পরিবেশ ধ্বংস করছে লাফার্জ হোলসিম

প্রকাশিত: ৮:০১ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৯, ২০২৫

কৃষি জমি ও পরিবেশ ধ্বংস করছে লাফার্জ হোলসিম

লুৎফুর রহমান শাওন, ছাতক
সুনামগঞ্জের ছাতকে সুরমা নদীর পাড়ে অবস্থিত ফ্রান্সভিত্তিক মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি লাফার্জ হোলসিম সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের বিরুদ্ধে পরিবেশ ধ্বংসের অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন থেকেই কোম্পানিটির সিমেন্ট উৎপাদনের নামে স্থানীয় কৃষকদের ফসলি জমির মাটি কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে এলাকার শতশত একর কৃষি জমি ধ্বংস করছে প্রতিষ্ঠানটি। যে কারণে এলাকার কয়েক হাজার কৃষক বেকার হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এদিকে, সম্প্রতি কারখানার ভেতরে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ (সিসিআর) এলাকায় একটি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের কাজ চলছে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য দেশের বিভিন্ন মিল-কারখানার পরিত্যক্ত বর্জ্য এবং পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের আবর্জনা স্তূপ আকারে কারখানার ভেতরে মজুত রাখা হচ্ছে। ফলে এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে, যা স্থানীয়দের বাসাবাড়িতে অবস্থান ও পথচারীদের চলাচলে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে আবারো নতুন করে পরিবেশ ও কৃষি জমি ধবংসের অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় যুব সংগঠন নাগরিক পরিবেশ ও যুব সমাজ কল্যাণ সংস্থার পক্ষ থেকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কারখানার বায়ু দূষণের ফলে স্থানীয় বাসিন্দারা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়েছেন। ফলে শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জি, চর্মরোগসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু, কিশোর, নারী ও বৃদ্ধরা। ইতিমধ্যে বায়ু দূষণের কারণে দুইজন ব্যক্তি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্যদিকে ছাতক গোবিন্দগঞ্জের একাদিক সিএনজি চালক ও স্থানীয় লোকজন জানান এসব বর্জ ট্রাকে করে রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় আশপাশ এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়ায়। এসময় রাস্তায় ও গাড়িতে থাকা লোকজন হাত দিয়ে নাকমুখ ঢেকে রাখেন।
নাগরিক পরিবেশ ও যুব সমাজ কল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আইনুল আহমদ জানান, “কারখানার ভেতরে যখন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মেশিন চালু করা হয়, তখন আশপাশের পরিবেশ এতটাই দূষিত হয়ে পড়ে যে, দুর্গন্ধে মানুষ বসবাস করতে পারে না। বারবার কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এ বিষয়ে ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম বলেন, লাফার্জ হোলসিমের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। আমরা কিছু নির্দেশনা দিয়েছিলাম। তারা জানিয়েছে, পর্যায়ক্রমে সমাধান করবে। আমি স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি পরিবেশের ক্ষতি হলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
লাফার্জ হোলসিম সিমেন্টের মিডিয়া সমন্বয়ক তৌহিদুল ইসলাম জানান, লিখিত অভিযোগের বিষয়টি এখনো তিনি জানেন না,তবে প্লান্টে খোঁজখবর নিয়ে তিনি জানাবেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর