ঢাকা ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:১৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২, ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
জৈন্তাপুর উপজেলার শাহজালাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাজেদা বেগম দীর্ঘ ৪১ বছরের শিক্ষকতা জীবনের ইতি টানলেন এক আবেগঘন পরিবেশে। কর্মজীবনের সূচনা ১৯৮৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পাকড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেই শুরু, এরপর শিক্ষার্থী গড়ার মহান ব্রতকে বুকে ধারণ করে নিরবিচারে পার করেছেন চার দশকেরও বেশি সময়।
বিদ্যালয়ের সহকর্মী, বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী, ম্যানেজিং কমিটি ও স্থানীয় বিশিষ্টজনদের সম্মিলিত আয়োজনে বৃহস্পতিবার ৩১ জুলাই বিকেল ২টায় বিদ্যালয় হলরুমে অনুষ্ঠিত হয় বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানটি রূপ নেয় ভালোবাসার মিলনমেলায়। সকাল থেকেই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ কানায় কানায় পূর্ণ হয় সাজেদা বেগমকে শ্রদ্ধা জানাতে আসা শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শুভানুধ্যায়ীদের উপস্থিতিতে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবেদন হোসেন। সভাপতিত্ব করেন সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জুলহাস। সমাজসেবী আকারামুল ইসলাম শামীম সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন চিকনাগুল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এবিএম জাকারিয়া।
বিদায়ী বক্তব্যে সাজেদা বেগম বলেন, শিক্ষকতা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া। ছাত্রছাত্রীদের চোখের জল, সহকর্মীদের ভালোবাসা, এবং অভিভাবকদের আন্তরিকতা আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্মান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রনীফৌদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুস্তাক আহমদ, চিকনাগুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মঞ্জুর আহমদ, শুকইনপুর ফরফরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাজুল হাসান, আসামপাড়া সরকারি বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শহীদ মিয়া, শিকারখাঁ সরকারি বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুরুল ইসলাম, উমনপুর বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুরুল ইসলাম, এম আহমেদ পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রমেশ চন্দ্র আদিত্য, সহকারী শিক্ষক জুমান আহমেদ, সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জয়নাল হোসেইন এবং শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
জেলা সহকারী শিক্ষক সমিতির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. জাকারিয়া, সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দিন এবং সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সুমন চন্দ্র দেব এ সময় উপস্থিত ছিলেন। মানপত্র পাঠ করেন সহকারী শিক্ষক স্বপ্না রানী দেব।
বক্তারা বলেন, সাজেদা বেগম ছিলেন একজন দায়িত্বশীল শিক্ষকই নয়, বরং একজন আদর্শ অভিভাবকও। তাঁর সততা, নিষ্ঠা, কর্মদক্ষতা এবং নিরলস পরিশ্রম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের জন্য ছিল আশীর্বাদস্বরূপ। শিক্ষকতার পাশাপাশি বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়নেও তিনি রেখেছেন প্রশংসনীয় ভূমিকা।
অনুষ্ঠান শেষে সহকর্মী ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা ফুলেল শুভেচ্ছা ও নানা উপহার সামগ্রী দিয়ে বিদায় জানান প্রিয় এই শিক্ষককে। ফুলে সাজানো একটি গাড়িতে তাঁকে বিদ্যালয় থেকে নিজ গৃহে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সঙ্গে পৌঁছে দেওয়া হয়।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host