ঢাকা ৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৮:৪৮ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৯, ২০২৫
বিশেষ প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জ
ভোর থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আর মেঘাচ্ছন্ন আকাশ। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে বৃষ্টি। রিমঝিম বৃষ্টি উপেক্ষা করে দিরাই শাল্লা সুরমানদীতে নৌকার দীর্ঘসারি। সারি সারি নৌকায় এসে উপস্থিত হাজার হাজার মানুষ। দূরদূরান্ত থেকে ছাতা মাথায় দিয়ে দর্শনার্থীরা এসে ভিড় জমিয়েছে সুরমানদীতে। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা শুরুর আগেই প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যেই জনসমুদ্রে পরিণত হয় শ্যামারচর বাজারসহ আশেপাশের এলাকা। ততক্ষণে বাইচে অংশ নিতে ঘাটে চলে এসেছেন নৌকাসহ মাঝিমাল্লারা।শুরু হয়বৃষ্টি। বৃষ্টির মধ্যে শুরুহয় নৌকা বাইচের প্রতিযোগীতা। বেলা ৩ টার পরপরই থেমে যায় বৃষ্টি আবরো দ্বিগুন উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে শুরু হয় প্রতিযোগিতা।
দীর্ঘদিন পর হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরে পেয়ে আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠে মানুষ।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) সকাল থেকে এমন দৃশ্যের দেখা মেলে সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার (শ্যামারচর বাজার)’র সংলগ্ন বয়ে যাওয়া সুরমানদীতে। এক সৌখিন মানুষ এডভোকেট শিশির মোহাম্মদ মনির এর ব্যক্তিগত উদ্যোগে আয়োজন করেন এ প্রতিযোগিতা। সহযোগিতা করেন দিরাই-শাল্লার জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা। উপস্হিত ছিলেন ১নং আটগাঁও ইউপি’র চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আন নোমানসহ দিরাই শাল্লা গণ্যমান্য-ব্যাক্তিবর্গ।
মো.ইমাম জলিল সাহেবের সভাপতিত্বে আশরাফ মনিরের সঞ্চালনায় নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায়টি শুরুহয়। প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও দিরাই শাল্লা উপজেলা।দুই উপজেলার প্রশাসিক কর্মকর্তাগণ। উপস্থিত ছিলেন দিরাই শাল্লার বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠান সার্বক্ষণিক সহযোগিতায় ছিলেন আজিজুর রহমান, বকুলকান্তি তালুকদার, আজিজুর রহমান, মো. সোয়েব, প্রশান্ত চৌধুরী, বিধান, লিটন, সিরাজ মিয়া প্রমূখ।
এক মুরব্বি বলেন, বিশেষ করে নৌকা বাইচ যেখানে অনুষ্ঠিত হবে সেখানে আমি যাবই। আমি জেনেশুনে কোন নৌকা বাইচ মিস করিনি এতো মানুষ আর দেখে আনন্দ লাগছে।
বাইচে আগত অনেক মুরব্বি বলেন,নৌকা বাইচ আমাদের পূর্ব পূরুষের ঐতিহ্য। আমরা ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি। যত দিন যাচ্ছে এই প্রতিযোগিতা কমে যাচ্ছে। আমাদের এই ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে হবে।
স্বপ্নেরতরীর এক বাইচাল বলেন, আমাদের গ্রামের বাইচের নৌকা আমাদের সম্মান। বিজয়ী করতে আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করি। যদি বিজয়ী করতে পারি আমাদেরও আলাদা সম্মান মিলে আমরা আনন্দ পাই। তাই বাইচে অংশ নেই।
আয়োজক শিশির মনির বলেন, আমরার মুরুব্বিয়ারা ও এই নৌকা বাইচ করে গেছেন। তাই এটা আমাদের ঐতিহ্য। কিন্তু এই প্রতিযোগিতাটা হারিয়ে যাচ্ছে। তাই আমি বাইচকে বাঁচিয়ে রাখতে ব্যাক্তিগত উদ্যোগে এই আয়োজন করেছি। এই শিল্প বাঁচিয়ে রাখা খুবই জরুরী। বিভিন্ন রাউন্ড শেষ করে জয়ী হয় আয়ুবতরী স্বর্ণের হরিণ চিনিয়ে নেয়।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host