১৮ পৃষ্ঠার চিরকুট লিখে মসজিদের মোতাওয়াল্লির আত্মহত্যা
বাধ্য হয়ে আমাকে ফাঁসিতে ঝুলতে হলো

প্রকাশিত: ৭:১১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৭, ২০২৫

<span style='color:#077D05;font-size:19px;'>১৮ পৃষ্ঠার চিরকুট লিখে মসজিদের মোতাওয়াল্লির আত্মহত্যা</span> <br/> বাধ্য হয়ে আমাকে  ফাঁসিতে ঝুলতে হলো

বিশেষ প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জ
দিরাইয়ে ১৮ পৃষ্ঠার চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেছেন সোনা মিয়া (৫২) নামের এক ব্যক্তি। সোমবার (২৫ আগস্ট) দিবাগত রাতে নিজ ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মহনন করেন।
নিহত সোনা মিয়া উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের ধাপকাই গ্রামের মৃত আশকর আলীর ছেলে এবং পশ্চিম ধাপকাই চৌরাস্তা জামে মসজিদের মোতাওয়াল্লি।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রাতে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার দিবাগত রাতে নিজ ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে সোনা মিয়া আত্মহত্যা করেন। খবর পেয়ে দিরাই থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে।
মৃত্যুর আগে তিনি এক হৃদয়বিদারক চিরকুটে লিখে গেছেন। এতে উল্লেখ করা হয়Ñ আমি আর পারলাম না, আমার কোনো রাস্তা নাই। বাধ্য হয়ে আমাকে ফাঁসিতে ঝুলতে হলো। বিদায় নিলাম চিরতরে এই পৃথিবী থেকে।
দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক চিরকুট উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিনের মতো রাতের খাবার খেয়ে তিনি ঘুমাতে যান। রাতের কোনো এক সময়ে গলায় ফাঁস দেন। কেউ টেরও পায়নি। আত্মহত্যার কারণ হিসেবে তিনি চিরকুটে পাশের গ্রামের তুহিন মিয়া ও তার বাবার নাম উল্লেখ করেছেন।
জানা গেছে, সোনা মিয়া সিলেটের পূবালি মটরস ও ইসলাম মটরস থেকে তুহিন মিয়ার মাধ্যমে দুইটি সিএনজি অটোরিকশা কিস্তিতে ক্রয় করেছিলেন। সমস্ত কিস্তির টাকা তিনি পরিশোধ করলেও তুহিন তা মালিকপক্ষকে না দিয়ে আত্মসাৎ করেন। এ ঘটনায় মালিকপক্ষ মামলা দায়ের করে। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ গত শুক্রবার দিরাই পৌর শহরের সোলেমান মিয়ার বাড়িতে সালিশ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় তুহিন মিয়া চার কিস্তিতে সোনা মিয়াকে এক লাখ টাকা পরিশোধ করবেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মিজানুর রহমান, রাজানগর ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুর রহমান দুলালসহ স্থানীয় গণ্যমান্যরা।
সালিশে উপস্থিত মিজানুর রহমান বলেন, আমরা বোর্ডের মাধ্যমে বিষয়টি সুন্দরভাবে ফয়সালা ও নিস্পত্তি করেছি।
আরিফুর রহমান দুলাল জানান, সালিশে উভয় পক্ষের কথা শুনে চার কিস্তিতে ১লাখ টাকা পরিশোধের রায় দেওয়া হয়। প্রথমে কিছু আপত্তি থাকলেও পরে সোনা মিয়া তা মেনে নিয়েছিলেন, তার আত্মহত্যার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক।
এলাকাবাসীর দাবি, আর্থিক প্রতারণা ও বিচার সালিশের চাপ সোনা মিয়াকে মানসিকভাবে ভেঙে দেয়, যার ফলে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। তার আকস্মিক মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ওসি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর