ঢাকা ৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:১৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৭, ২০২৫
লুৎফুর রহমান শাওন, ছাতক
মাঠের কর্দমাক্ত জমিতে পা ডুবিয়ে ব্যস্ত হাতে চারা রোপণ করছেন নাদামপুর গ্রামের কৃষক আলী হোসেন। এবারের মৌসুমে তিনি ২৫ বিঘা জমিতে রোপা আমন ধান চাষের উদ্যোগ নিয়েছেন। ইতোমধ্যে ১০ বিঘার কাজ শেষ করেছেন। তবে পানির স্বল্পতা আর শ্রমিক সংকটের কারণে বাকিটা করতে সময় লাগছে কিছুটা বেশি। তবুও মুখে হাসি লেগে আছে তার কারণ এবার বড় বন্যার আতঙ্ক নেই। শুধু আলী হোসেনই নন, ইসলামপুর ইউনিয়নের মোল্লাপাড়ার কৃষক অপু দাসও স্বপ্ন বুনছেন একইভাবে।
তিনি জানান, আমার ১০ বিঘা জমির মধ্যে চার বিঘায় চারা রোপণ শেষ করেছি। বাকি অংশ দু’সপ্তাহের মধ্যে রোপণ হয়ে যাবে। আবহাওয়া যেমন আছে, উপরওয়ালা চাইলে এ বছর ফলন ভালো হবে। হাওরাঞ্চলের কৃষকদের কাছে রোপা আমন চাষ মানেই এক ধরনের শঙ্কা। কারণ অতিরিক্ত বন্যা এলে মুহূর্তেই ফসল তলিয়ে যায়। কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। সময়মতো বীজতলায় চারা তৈরি হয়েছে, আর এখন চলছে মাঠে প্রাণচাঞ্চল্য একের পর এক জমিতে রোপণ হচ্ছে ধানের চারা।
উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে ছাতক উপজেলায় ১৩ হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পাঁচ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। সেপ্টেম্বরে পুরো কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। নভেম্বর-ডিসেম্বরে মাঠ ভরে উঠবে সোনালি ধানে। কৃষকদের উৎসাহ দিতে সরকার এ বছর দুই হাজার ২৫০ জন কৃষককে বিনা মূল্যে বীজ ও সার দিয়েছে। মাঠে এখন ব্রি ও বিনার উচ্চফলনশীল জাতের পাশাপাশি স্থানীয় গুটি, চিনিগুঁড়া, লতিশাইল ও বিরুইন জাতের চারা শোভা পাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌফিক হোসেন খান বলেন, বোরোর পর আমন আমাদের দ্বিতীয় প্রধান ফসল। ২০২১ সালের বড় বন্যার পর থেকে টানা চার বছর আমনে ভালো ফলন হয়েছে। এবারও বড় বন্যার কোনো শঙ্কা নেই। তাই কৃষকেরা নিশ্চিন্তে মাঠে নেমেছেন। এখন মাঠজুড়ে কাদায় ভিজে ঘাম ঝরানো কৃষকদের চোখে ভাসছে একটাই স্বপ্ন প্রকৃতির সহায়তা পেলে এবারের রোপা আমন ফসল তাদের ঘরে আনবে প্রাচুর্যের হাসি।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host