শাল্লায় ঠিকাদারের দায়িত্বহীনতায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে গুরুতর আহত শিশু

প্রকাশিত: ৯:৪৯ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১২, ২০২৫

শাল্লায় ঠিকাদারের দায়িত্বহীনতায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে গুরুতর আহত শিশু

তৌফিকুর রহমান তাহের, সুনামগঞ্জ
দিরাই শাল্লা মহাসড়ক পুনর্নির্মাণ কাজে ঠিকাদারের দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ডে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে ৬ বছরের শিশু প্লাবন দাস। প্লাবন উপজেলার বাহাড়া ইউপির অন্তর্গত নয়াগাঁও গ্রামের সৌরভ দাসের ছেলে। পাশাপাশি সে আঙ্গারোয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী।
বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আহত হওয়ার সাথে সাথে উপজেলার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় তার আত্মীয় স্বজন। শিশুটির অবস্থার আরও অবনতি হলে ১২অক্টোবর উপজেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।
ঘটনাটি ঘটেছে ১১ অক্টোবর বিকেলে উপজেলার আনন্দপুরস্থ পল্লী বিদ্যুতের সাবস্টেশন সংলগ্ন মাদারিয়া এলাকায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দিরাই-শাল্লা আঞ্চলিক মহাসড়ক পুনর্নির্মাণ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাদারিয়া বাঁধ সংলগ্ন স্থানে অপরিকল্পিতভাবে বিদ্যুতের তার ঘেঁষে স্তুপ করে রাখে ভিটবালু। এতটাই উঁচু করে রাখা হয় বালু, মাত্র ৩ফুট উপরে রয়েছে পিডিপির ৩৩কেবি বিদ্যুতের মেইন তার। বিস্তৃত পরিসরে ভিটবালু রাখায় শিশুরা বালুর উপরে খেলাধুলা করতে শুরু করে আর সেখানেই ঘটে এই অঘটন।
এব্যাপারে শিশু প্লাবনের দাদু জ্যোতির্ময় দাস বলেন, আমার নাতিকে নিয়ে পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। বালুর উপরে খেলতে গিয়ে তারে লেগে যায় প্লাবন। পরে দেবরাজ দাস তাকে বাঁচায়। বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তার নাতির পা ও হাত পুড়ে ক্ষত বলে জানান তিনি।
এবিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী নয়াগাঁও গ্রামের দেবরাজ দাস বলেন, আমি এসে দেখি তারে লেগে আছে শিশুটি। এমন অবস্থা দেখে আমি নিজেও ভয় পেয়ে যাই। কিন্তু শিশুটিকে বাঁচতে জুতা দিয়ে আঘাত করতে করতে তার থেকে বাঁচাই।
উপজেলার হবিবপুর ইউপির ২নং ওয়ার্ড মেম্বার বাবলু রায় বলেন, ঘটনার বিষয়ে আমি ঠিকাদারদের জানিয়েছি।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইট ম্যানেজার কালা বাবু অনেকটা কৌশলে বলেন, শিশুটি পল্লী বিদ্যুতের গাছ বেয়ে তারে লেগেছে। আমি সাইটে নেই বাড়িতে আছি ছুটি নিয়ে। ঘটনা জানার পর আমরা খাল করে দিয়েছি। এখন আর শিশুরা নাগাল পাবে না। অথচ সেখানে কোন গাছই নেই! অথচ কালা বাবু বরিশাল থেকে দায় দিয়ে দেন পল্লী বিদ্যুতের গাছের উপর!
অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, গাছের উঠে নয়, বালুর উপর থেকেই শিশুটি লেগেছে। এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ড ও মিথ্যা বক্তব্যের নিন্দা জানান অনেকই।
স্থানীয়রা আরও বলেন, এখান থেকে বালু না সরালে আবারও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। খাল করার পরও ঝুঁকি রয়েছে বলে জানান তারা।
ঘটনাটি নিয়ে সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, দিরাইয়ে পিডিপির আড়িকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলেও ফোন রিসিভ করেননি কেউ।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর