ঢাকা ৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৮:৫৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২১, ২০২৫
বিজয়ের কণ্ঠ ডেস্ক
সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ব্যাটারিচালিত টমটম ও ইজিবাইক নিষিদ্ধ করেছে। অথচ দক্ষিণ সুরমায় এসব যানবাহনের দাপটে নাকাল জনজীবন।
প্রতিদিন রাস্তায় নামছে শত শত অদক্ষ চালক চালিত অবৈধ টমটম, সৃষ্টি করছে তীব্র যানজট, বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চাঁদাবাজি ও বিদ্যুৎ অপচয়ের ভয়াবহ চিত্র। প্রশাসনের চোখের সামনেই ঘটে চলেছে নির্বিঘ্নে এমন অভিযোগ জনসাধারণের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক নিষিদ্ধ। কিন্তু সেই নিয়ম যেন ‘দক্ষিণ সুরমা’ এলাকায় শুধু কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ। বাস্তবে, প্রতিদিন রাস্তায় নামছে শত শত অবৈধ টমটম ও ইজিবাইক। পুরাতন পুলের মুখ থেকে আলমপুর পর্যন্ত প্রায় ১৭০টির বেশি টমটম প্রতিদিন সড়কে চলাচল করছে। চালকদের বেশিরভাগই অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন। পথচারী ও সাধারণ যাত্রীদের অভিযোগ, এই যানবাহনগুলো যেন অনিয়মের প্রতিচ্ছবি, যাদের নেই কোনো ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, নেই মানা হয় কোনো সিগন্যাল।
অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রতিটি ব্যাটারিচালিত টমটম দৈনিক চার্জে ব্যবহার করছে গড়ে ১,০০০ থেকে ১,৩০০ ইউনিট বিদ্যুৎ। অথচ দেশের বিদ্যুৎ খাতে চলছে ব্যাপক সঙ্কট। লোডশেডিংয়ে নাকাল জনজীবন। সরকার বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে নানা উদ্যোগ নিলেও দক্ষিণ সুরমায় ব্যাটারিচালিত যানবাহনের লাগামহীন চলাচলে সব চেষ্টা যেন ব্যর্থ। প্রতিদিন এসব টমটম ৬-৭ ঘণ্টা করে চার্জে থাকে। অথচ সঠিক পরিসংখ্যান নেই কারো কাছে। ঠিক কতগুলো টমটম চলাচল করছে দক্ষিণ সুরমায়!
এই টমটম চালাতে চালকদের শুধু বিদ্যুৎ খরচই নয়, গুণতে হচ্ছে চাঁদাও। চালকদের অভিযোগ, প্রতিদিন প্রতিটি টমটম থেকে ১শ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয় একটি গোপন চক্রের মাধ্যমে। তবে কারা এই চাঁদা নেয়, তা বলতে চাননি কেউই। চালকরা জানান, নাম বললেই তাদের গাড়ি রেকার করে দেওয়া হবে এই ভয়েই মুখ খোলেন না তারা। যদি কোনো চালক চাঁদা না দেয়, তবে তাকে রেকারিংয়ের ভয় দেখিয়ে জিম্মি করা হয়। রেকার করা হলে, তা ছাড়াতে আবার দিতে হয় ১ হাজার টাকা। এইভাবে প্রতিদিন টমটম চালকদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ।
এসব অবৈধ টমটম চলাচলের জন্য চাঁদা দিতে হয় বলে জানান চালকরা। পুলের মুখ থেকে আলমপুর পর্যন্ত চলাচলের জন্য প্রতিটি টমটম চালক প্রতিদিন ১শ টাকা করে বড় একটি চক্রের হাতে জমা দেন। কারা চাঁদা নেয় জিজ্ঞাসা করলে তাদের নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক চালকরা। নাম প্রকাশ করলে তাদের টমটম চলা বন্ধ করে দেবে এমন ভয়ভীতির কারণে তারা নাম প্রকাশ করে না। প্রতিদিনের চাঁদা দেওয়ার কারণ হলো যাতে ট্রাফিক এসব অবৈধ টমটমকে চলাচলে বাধা না দেয়। যদি কোন টমটমকে রেকার করা হয় তাহলে টমটম চালক ১ হাজার টাকা দিয়ে রেকারকৃত টমটম ছাড়িয়ে আনার ব্যবস্থা নেন।
রেফুল নামের এক চালক বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। আয় করি দিনে ৫০০-৬০০ টাকা, তার মধ্যেও চাঁদা দিতে হয়। এটা তো জুলুম ছাড়া কিছু না।’
এই বিষয়ে জানতে কদমতলী রোডের দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) নারায়ন চন্দ্র দেবের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। প্রথমে তিনি কল কেটে দেন, এরপর বারবার ফোন করা হলেও তিনি আর কল রিসিভ করেননি।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host