ঢাকা ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৬:৪৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৭, ২০২৫
মো. আব্দুল শহীদ, সুনামগঞ্জ
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ওপর দিয়ে ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে এসেছে চিলাই নদী। এই নদীর মোহনাতেই মিলেছে সুরমা নদীর প্রবাহ। একদিকে ছাতক ও চিলাই নদী, অন্যদিকে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ। এই মিলনস্থলকে কেন্দ্র করে বছরের পর বছর গড়ে উঠেছে হাজারো শ্রমজীবী মানুষের কর্মসংস্থান। চিলাই নদী মূলত পাথরবাহী নদী হিসেবে পরিচিত। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢল নেমে আসায় নদীর পানিপ্রবাহ বেড়ে যায় এবং স্রোতের সঙ্গে লক্ষ লক্ষ ঘনফুট পাথর ভেসে আসে। বর্ষা শেষে পানি কমে গেলে নদীর বুকে দেখা দেয় পাথরের বিশাল ভাণ্ডার। তখনই শুরু হয় শ্রমিকদের কর্মচাঞ্চল্য। এ নদীপথে খনন, পাথর উত্তোলন, লোডিং-আনলোডিং, বাছাই, নৌকা ও ট্রলার মালিকানা, নদীপথের ছোট-বড় ব্যবসাসহ কয়েক হাজার মানুষের ছয় মাস কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। বলা হয়ে থাকে-চিলাই নদী ছাতকের বহু পরিবারকে জীবিকার আশ্রয় দিয়েছে।
কিন্তু বাস্তবতা হলো, বছরের বাকি ছয় মাস নদীতে কোনো কাজ থাকে না বললেই চলে। বর্ষার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উত্তোলন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। তীব্র স্রোত ও পানির উচ্চতার কারণে শ্রমিকেরা নদীতে নামতে পারেন না। এতে শ্রমজীবী মানুষের বড় একটি অংশ কর্মহীন হয়ে পড়ে। অনেকেই বাধ্য হয়ে অন্য এলাকায় অস্থায়ী কাজ খুঁজতে যান, কেউবা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন কাটান।
চিলাই নদীকে ঘিরে যে বিপুল কর্মসংস্থান তৈরি হয়, তা আরও টেকসই, নিরাপদ ও বছরব্যাপী করার সুযোগ রয়েছে। প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা, দক্ষ ব্যবস্থাপনা, শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। এ উদ্যোগগুলো বাস্তবায়ন হলে হাজারো শ্রমজীবী মানুষের জীবনযাত্রা আরও স্থিতিশীল হবে। চিলাই নদী শুধু একটি নদী নয়, এটি ছাতক-সুরমা অঞ্চলের হাজারো শ্রমজীবী মানুষের বাঁচার অবলম্বন, স্বপ্ন ও সংগ্রামের প্রতীক।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host