ঢাকা ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৮:৫৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৯, ২০২৫
তাহিরপুর প্রতিনিধি
কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের দাবিতে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধন কর্মসূচি বাস্তবায়নে সভাপতিত্ব করেন হাওর বাঁচাও আন্দোলনের তাহিরপুর উপজেলার সভাপতি মুছায়েল আহমদ।
সেক্রেটারী তোজাম্মিল হক নাসরুম ও এস এম মিজানুর রহমানের যৌথ সঞ্চালনা অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন তাহিরপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদী হাসান উজ্জ্বল, হাওর ও নদী বাঁচাও আন্দোলনের সুনামগঞ্জ জেলা আহ্বায়ক সুহেল আলম, হাওর ও নদী রক্ষা আন্দোলনের তাহিরপুর উপজেলা আহব্বয়ক জাহাঙ্গীর আলম, ছাত্র শিবির তাহিরপুর উপজেলার সভাপতি রাজন আহমদ, ছাত্রদল তাহিরপুর উপজেলার আহ্বায়ক আবুল হাসনাত রাসেল প্রমুখ।
শনিবার মানববন্ধন পর পরই আহ্বায়ক হিসাবে মেহেদী হাসান উজ্জ্বল, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শফিকুল ইসলাম, সদস্য সচিব সুহেল আহমদকে মনোনীত করা হয়।
জানা যায়, ২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট একনেকে ৫০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন হয়েছিল। ৩ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য এই প্রকল্পে তাহিরপুর ও শান্তিগঞ্জ উপজেলা এই দুটি চূড়ান্ত ছিল। ২০২৮ সালের মধ্যে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বাস্তবায়নের নির্দেশনা থাকলেও এই দুটি উপজেলায় আর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
শান্তিগঞ্জের বিষয়টি এখনো দোলাচলে থাকলেও তাহিরপুরের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আর নির্মাণ হচ্ছে না।
বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো কর্তৃক ৫০ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দক্ষতা উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে দেশের, বিশেষ করে গ্রাম ও উপজেলা স্তরে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তুলছে সরকার। আবাসিক ও একাডেমিক এই কেন্দ্রের মাধ্যমে যুবক-যুবতীদের কারিগরি দক্ষতা বাড়িয়ে তাদের কর্মসংস্থানে যুক্ত করাই প্রকল্পের লক্ষ্য। বিশেষ করে বিদেশ গমনেচ্ছু যুবাদের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বৈদেশিক কর্মসংস্থান নিশ্চিত করাই প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য।জানা গেছে, সম্প্রতি জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো তাহিরপুরে কেন্দ্র নির্মিত হলে প্রশিক্ষণার্থী পাওয়া যাবে না এমন তুচ্ছ কিছু কারণ দেখিয়ে সেটি জগন্নাথপুরে নির্মাণের চূড়ান্ত প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। চলতি মাসে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো সুনামগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগকে কেন্দ্রের অবকাঠামো নির্মাণে চিঠি পাঠিয়েছে। দেওয়া হয়েছে প্রশাসনিক অনুমোদনও।
অন্যদিকে একই প্রকল্পে শান্তিগঞ্জেও কেন্দ্র নির্মাণে একনেকে অনুমোনের পর সুনামগঞ্জ সিলেট-সড়কের পাশে জমিও প্রস্তুত ছিল। কিন্তু শান্তিগঞ্জে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ভবন নির্মাণের প্রশাসনিক অনুমোদনও দেওয়া হচ্ছে না।এই দুটি উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প বাতিল হলে লাখো বেকারের স্বপ্নপূরণ বিলম্বিত হবে এবং তারা দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে ওঠতে প্রতিবন্ধকতার শিকার হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
তাহিরপুর উপজেলা ডেইরী ফার্মার্স এসোসিয়েশন এর সেক্রেটারি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, হাওরপাড়ের অনেক বেকার যুবক যুবতী রয়েছে। যাদের প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসতে পারলে বেকার সমস্যা দূর হতো। আমরা কোনোভাবেই চাই না কারিগরী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি স্থানান্তরিত হোক।তাহিরপুরের বাসিন্দা, সুসাশনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর জেলা সম্পাদক ফজুলল করীম সাঈদ বলেন, তাহিরপুর অবহেলিত জনপদ। অযৌক্তিক কারণে প্রতিষ্ঠানটি কেটে নিয়ে অন্যত্র নির্মাণ করা হবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। প্রতিষ্ঠানটি তাহিরপুরেই নির্মাণের জন্য আমরা সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।
প্রকল্প পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাহিরপুর উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ হবে না। এটি বাস্তবায়িত হবে জগন্নাথপুর উপজেলায়। আর শান্তিগঞ্জ উপজেলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণের বিষয়েও কোনও সিদ্ধান্ত নেই।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host