অন্যান্য দোকান রেখে শুধু প্রতিবন্ধীর দোকান উচ্ছেদ, অসহায় পরিবারের আহাজারি

প্রকাশিত: ৬:০১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৪, ২০২৫

অন্যান্য দোকান রেখে শুধু প্রতিবন্ধীর দোকান উচ্ছেদ, অসহায় পরিবারের আহাজারি

আব্দুল শহীদ, সুনামগঞ্জ
সুনামগঞ্জ শহরের হাছননগর এলাকায় এক শারীরিক প্রতিবন্ধীর একমাত্র জীবিকার উৎস অস্থায়ী দোকান উচ্ছেদ করায় মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে একটি পরিবার। বৃহস্পতিবার বিকেলে পৌরসভার কর্মচারীরা ওই দোকানটি সরিয়ে দেন।

জানা গেছে, শহরের বিহারী পয়েন্ট এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ড্রেইনের ওপর পানের দোকান চালিয়ে আসছিলেন শারীরিক প্রতিবন্ধী জামাল মিয়া। ময়নার পয়েন্টে ভাড়া বাসায় বসবাসরত জামাল মিয়া পৌর প্রতিবন্ধী সমাজকল্যাণ সমিতির সভাপতিও। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে তার সংসার। দোকানটিই ছিল তার একমাত্র আয়ের উৎস।

স্থানীয়রা জানান, একই এলাকায় খ্রিষ্টান মিশনের সামনের সড়কের ফুটপাত ও ড্রেইনের পাশে আরও বহু অস্থায়ী দোকান রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে-‘মায়ের দোয়া’ ফুসকার দোকান (মালিক জুনাইদ আহমদ), হিরা মিয়ার ভাই ভাই ফুসকা হাউজ, মঙ্গল মিয়ার চায়ের দোকান, আলী হোসেনের ইজিবাইক মেকানিক্স গ্যারেজ, করিম মিয়ার কুমিল্লার বিখ্যাত খাবারের দোকান, সুলেমান মিয়ার পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী খাবারের দোকান, অপূর্ব দাসের ফুসকা হাউজ, ফারদিন আইলিনের চটপটি ও বিরিয়ানির দোকান, হাফিজুলের কাপড়ের দোকানসহ আরও অনেক দোকান। কিন্তু এসব দোকান বহাল থাকলেও শুধুমাত্র প্রতিবন্ধী জামাল মিয়ার দোকানটি উচ্ছেদ করা হয়।

শনিবার বিকেলে বিহারী পয়েন্ট এলাকার ব্যবসায়ী হাবিব মিয়া, কল্যাণ দাস, ঋতু দাস, রাজু মিয়া ও মেকানিক্স আলী হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জামাল মিয়া একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী মানুষ। এই ছোট দোকান করেই সে পরিবার চালায়। অন্য দোকান রেখে শুধু তার দোকান উচ্ছেদ করা কোনোভাবেই ন্যায্য হয়নি। যদি উচ্ছেদ করতেই হয়, তবে সবার ক্ষেত্রেই তা সমানভাবে হওয়া উচিত। নয়তো তাকে আগের জায়গায় ব্যবসার সুযোগ দেওয়া হোক।

অসহায় প্রতিবন্ধী জামাল মিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, দোকান তুলে দেওয়ার পর থেকে সংসার চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ছেলে-মেয়েদের মুখে ঠিকমতো খাবার দিতে পারছি না। কী করব বুঝে উঠতে পারছি না। গীর্জার দ্বায়িত্বে থাকা ডেনিস স্যার কিছুদিন পর পর আমার বিরুদ্ধে অহেতুক পৌরসভায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানিসহ ক্ষতিগ্রস্থ করছে। গীর্জা মিশনের সামনে ছোট বড় প্রায় ৮/৯ দোকান রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। আমি কি অন্যায় করলাম শুধু আমার বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ করেন। আমি শুধু আমার প্রতি ন্যায়বিচার দাবী করছি।

স্থানীয়দের দাবি, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে প্রতিবন্ধী এই মানুষটির জীবিকার ব্যবস্থা করা হোক এবং উচ্ছেদের ক্ষেত্রে সবার জন্য সমান নীতি অনুসরণ করা হোক।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর