ঢাকা ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:৩১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২১
ছাতক প্রতিনিধি
ছাতকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন ও বিতরণ বিভাগের দুর্নীতি চরম আকার ধারণ করেছে। প্রতিনিয়ত তাদের হয়রানির শিকার হচ্ছেন ২২হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক। গত ২৯ মে রাতে ৪২টি সরকারি মিটার চুরির ঘটনা ধামাচাপা দিতে ব্যাপক তৎপর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন সরদার। তিনি শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে দফায় দফায় বৈঠক করছেন। কিন্তু অদৃশ্য কারণে দীর্ঘ দু’মাসেও সরকারি মিটার চুরির এ ঘটনায় ব্যবস্থা নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।
ছাতক বিদ্যুৎ উন্নয়ন ও বিতরণ অফিসে টাকা ছাড়া কোনো কাজ হচ্ছে না বলে দীর্ঘদিন থেকেই গ্রাহকরা অভিযোগ করছেন। সেখানে ‘আগে টাকা, পরে কাজ’ এমন নীতি চালু থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার যেনো কেউ নেই। স্থানীয়ভাবে কেউ তাদের বিরুদ্ধে গেলে বিভিন্ন হয়রানীর শিকার হতে হয় বিধায় ভুক্তভোগীরা এখন প্রতিবাদ করাটাও ভুলে গেছে। এতে ‘লাই’ পেয়ে দিন দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে আলো বিতরণকারী এই কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
জানা যায়, প্রিপ্রেইড মিটারকে লক করে বকেয়া বিলের ও মামলার ভয় দেখিয়ে এবং মিটার সংযোগের নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে কৌশলে লাখ লাখ টাকা আদায় করছেন ৩জন প্রকৌশলী। অফিসের স্টোর রুম থেকে প্রতিদিন তামার তার ও মিটার চুরিরসহ সরকারি মূল্যবান যন্ত্রপাতিও চুরি হচ্ছে তাদের ইশারায়। গত ২৯ মে রাত ১১টার দিকে ছাতক বিদ্যুৎ বিভাগের প্রকৌশলী মামুদুর হাসান ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবুল হোসেন কাগজপত্র ছাড়াই স্টোর রুম থেকে ৪২টি সরকারি মিটার চুরি করে নেওয়ার সময় চৌকিদারের হাতে ধরা পড়েন। কার্যালয়ের স্টোর রুম থেকে প্রকৌশলী মামুদুর হাসান মৌখিক নির্দেশে উপ সহকারি প্রকৌশলী আবুল হোসেন মিটারগুলো নিয়ে যাচ্ছেন বলে চৌকিদারকে দোহাই দেন। কিন্তু এসময় অফিসের অন্যান্যরা এমন ঘটনা দেখে ফেললে মিটারসহ তাকে আটক করা হয়। পরে ওই বিষয়টি অফিস জুড়ে জানাজানি হলে ৪২টি মিটার অফিসের প্রকৌশলী মামুদুর হাসানের কক্ষে রাখা হয়। যার বাজার মূল্য প্রায় ৩ লাখ টাকা।
এ ঘটনায় লাইনম্যান মঞ্জুর মিয়া ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পৌর মেয়র ও ছাতক বিদ্যুৎ উন্নয়ন বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে পৃথক পৃথক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। উল্টো আব্দুল্লাহ আল মামুন সরদার বিষয়টি ধামা চাপা দিতে বিভিন্ন দপ্তরে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বার বার বৈঠকে বসছেন।
এব্যাপারে প্রকৌশলী মামুদুর হাসান সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি এ প্রতিবেদকের কল রিসিভ করেননি।
এব্যাপারে উপ-সহকারি প্রকৌশলী আবুল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন। মিটার সরানোর বিষয় নির্বাহী প্রকৌশলী স্বীকার করেছেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি কলটি কেটে দেন।
এ বিষয়ে ছাতক বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন সরদারের যোগাযোগ করা হলে তিনি ৪২টি মিটার স্টোর রুম থেকে সরিয়ে নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host