ঢাকা ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:২৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২০, ২০১৮
শাহেদ আহমদ
সিলেট-২ (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর) আসনে জনপ্রতিনিধিত্বে পরিবর্তন চান ভোটাররা। ইতিপূর্বে নৌকা, ধান ও লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দিয়ে তাদের দেখা হয়ে গেছে। এবার এসবের পরিবর্তন নিয়ে ভাবছেন তারা। এবার তাদের পছন্দের তালিকায় রয়েছেন সম্পূর্ণ নতুন মুখ। যিনি হবেন গরীব, দু:খী, মেহনতি মানুষের বন্ধু। যাকে দেখতেই সাদালাপি, সৎ ও নিষ্ঠাবান বলে মনে হবে। এমন কিন ইমেজের একজন প্রার্থীকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী করার স্বপ্ন দেখছেন ভোটাররা।
তবে পরিবর্তিত প্রার্থীটি কে? এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্বনাথ সদর উপজেলা বাজারের সবজি ব্যবসায়ী সুরুজ মিয়া জানান, ‘ভাইরেবা ১০ বছর পরে ভোট দিতাম কইছলাম, আমার ফুয়া ফুড়িনও নতুন ভোটার অইছে, ইবার ধান নৌকা নাই, সবরেতো দিলাম, চিন্তা কররাম নতুন কেউরে দিমু, মুল্লা বেটার নাম হুনরাম মার্কা জানি কিতা- ঘড়ি মনো খয়, মানুষ বুলে ভালা, কাজ করবো, মারিয়া খাইত নায়-আল্লারে ডরাইবো, দেকি কিতা করি সময়ত আছে।’
সুরুজ মিয়ার কথায় একাত্মতা পোষণ করেন অপর ব্যবসায়ীরা। তারাও কথার সাথে তাল মিলিয়ে বললেন, ১০ বছর আগে উন্নয়ন হয়েছে, এরপর আর তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি, চিন্তা করছি নতুন মুখ দেখে ভোট দেবো। কৌতুহল নিয়ে এই বাজারেরই অনেক ব্যবসায়ীদের সাথে দেখা করে তাদের জনমত জানতে চাওয়া হলে সবার মুখেই পরিবর্তনের স্বর শোনা যায়।
এ আসনের বেশিরভাগই নতুন ভোটার এবং সব ভোটারই পরিবর্তন চায়। সরজমিনে ঘুরে এমন বেশ কিছু আলামত পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্বনাথ সদরে সবার মুখে মুখে এমন কথা শোনা যায়। এই আসনটি জাপার বর্তমান সাংসদ ইয়াহ্ইয়া চৌধুরীকে মহাজোট থেকে মনোনীত করা হয়। বড় দুইটি দলের মধ্যে আওয়ামী লীগের কোন কর্মীকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়নি। বিএনপির নিখোঁজ নেতা এম ইলিয়াছ আলীর স্ত্রী বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী তাহসিনা রুশদি লুনাকে প্রার্থী ঘোষণা করলেও পরবর্তীতে আইনী জটিলতায় তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
বিএনপির কোন প্রার্থী না থাকায় ২৩ দলীয় জোটের দু’জন প্রার্থীর বেশ কদর রয়েছে এ আসনে। এর মধ্যে খেলাফত মজলিস যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ মুনতাসির আলী ও গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোকাব্বির খানের নামও শোনা যাচ্ছে।
সরজমিনে দেখা যায়- মহাজোট, জাপার সাথে খেলাফত মজলিসের দুই প্রার্থীই মাঠে নির্বাচনী প্রচারণায় তৎপর রয়েছেন। একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকলেও নির্বাচনী মাঠে তাদের অবস্থান নিরব। ওসমানীনগর বাজার ব্যবসায়ীদের সাথে কথা হলে তাদের মধ্যে নতুন প্রার্থীদের নিয়ে বেশ ভাবনা ল করা যায়। তারা বলেন, এবারকার নির্বাচনে নতুন ও বর্তমান এমপি প্রার্থীদের মাঝে অন্যরকম আমেজ দেখা যাচ্ছে। তারা প্রত্যেকেই নিজ নিজ অবস্থান ও বলয় প্রদর্শন করে ভোটারদের দলে টান চেষ্টা করছেন। তবে, নতুন মুখ নিয়ে আগ্রহ রয়েছে ভোটারদের।
মোদী ব্যবসায়ীরা জানান, এবার তাকেই ভোট দিব, যে আমাদের পাশে আছে এবং সবসময় থাকবে। আমরা দশ বছরে উন্নয়ন দেখেছি, এবার নির্বাচনে যে প্রার্থী আমাদের মৌলীক ৫টি বিষয়ে কাজ করবে তাকেই আমরা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবো।
নিজামুদ্দীন নামের নতুন এক ভোটার বলেন, আমার ভোট আমি দিতে পারলেই খুশি। ১০ বছরে স্থানীয় অনেক নির্বাচন হয়েছে, প্রাপ্ত বয়স হয়নি বলে ভোট দিতে পারিনি। এবার আমার ভোট আছে, আর আমি তা মনের মত প্রার্থীকেই দিবো। আগের এমপিদের সবার দেখা হয়ে গেছে, এবার সবাই দেখছি নতুন মুখ মানে পরিবর্তন নিয়ে ভাবছেন, আমার ভাবনাও তাদের মতো।
মূলত, এই আসনের ভোটারদের মধ্যে পরিবর্তনের মানসিকতা কাজ করেলও কে হচ্ছেন তাদের কাক্সিত প্রার্থী তা বেশ স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে। তবে নির্বাচনে জয়ের মালা কার গলায় পরানো হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়। আর এই দিনটির জন্য আগামী ৩০ ডিসেম্বর বিকেল পর্যন্ত ভোটারদের অপো করতে হবে।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host