বেশ কয়েকটি দপ্তরের একমাত্র রাস্তার বেহাল দশায় ভোগান্তি

প্রকাশিত: ৯:৪৭ অপরাহ্ণ, মে ২২, ২০২৫

বেশ কয়েকটি দপ্তরের একমাত্র রাস্তার বেহাল দশায় ভোগান্তি

মো. আব্দুল শহীদ, সুনামগঞ্জ
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ৮নং ওয়ার্ডের অর্ন্তগত বেশ কয়েকটি সরকারি গুরুত্বপূর্ণ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের রাস্তার বেহাল দশায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সেবা নিতে আসা জন সাধারণ। এমনকি একই রাস্তা ব্যবহার করার কারণে সেখানকার বাসিন্দারাও চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
জানা যায়, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়, পাসপোর্ট অফিস, জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যালয়, বিএডিসি বীজ ও সার বিক্রয় এবং বিতরণ কার্যালয়সহ বিভিন্ন বাসা বাড়ির একটি মাত্র রাস্তা দীর্ঘ দিনেও সংস্কার না হওয়ায় চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সেবা নিতে আসা প্রতিবন্ধী, কৃষক, বিদেশ গমনইচ্ছুক পাসপোর্ট গ্রহণকারী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যবসায়ীসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার বাসিন্দাদের।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পৌর শহরের মল্লিকপুরস্থ সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়ক হতে জেলা পরিষদ,জেলা নির্বাচন অফিস,খাদ্যগুদামের সামন থেকে বিএডিসি পর্যন্ত প্রায় হাফ কিলোমিটার রাস্তাটি দীর্ঘদিনেও সংস্কার হয়নি। এতে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা কর্মচারী, কৃষক, ব্যবসায়ীসহ ও এলাকাবাসীর চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এই রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন সেবাদানকারী এবং সেবাগ্রহনকারীরা যাতায়াত করেন। রাস্তাটির কিছু কিছু জায়গায় ভেঙে সমস্যা বেড়েছে। বৃষ্টি হলে পানি জমে কাদায় ভরে যায়। ওই রাস্তায় চলাচলকারী অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।
ব্যবসায়ী কাদির মিয়া বলেন, প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার অসংখ্য মানুষ চলাফেরা করতে খুবই ভুগান্তি পোহাতে হয়। এই সমস্যা দূরীকরণের একমাত্র পথ হল রাস্তা সংস্কার করা। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করার জোর দাবি জানান তিনি।
বেহাল রাস্তায় চলাচলকারী সোনালী ব্যাংকের এসিস্ট্যান্ট জেনারেল মো. আব্দুস ছালাম জুনায়েদ বলেন, রাস্তাটিতে সাইকেল চালিয়ে যাওয়া এখন খুবই কষ্টকর। বাধ্য হয়ে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে আমাদের। এই একটি মাত্র রাস্তার দু’পাশে চারটি সরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ইট সলিং রাস্তার মধ্যখানে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই জলবদ্ধতা সহ ইট সলিং রাস্তার উপর হাটু পানি ভেঙে অফিসে যেতে হয়। আমার দেখা মতে সমাজসেবা অফিসে থেরাপি দিতে আসা রোগীদের কোলে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন স্বজনরা। এলাকাবাসী এলজিইডি বিভাগে বারবার সংস্কারের দাবি জানিয়েও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ মিলেছে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, এই রাস্তায় চলাচলকারী বিএডিসি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, এ রাস্তাটি নির্মাণে নিম্নমানের কাজ করা হয়েছিল। রাস্তাটি মেরামত না করায় রাস্তার বেশির ভাগ স্থানেই ইট উঠে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী রাসেল আহমেদ বলেন, রাস্তার অসংখ্য স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তা জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় খানাখন্দ। এর মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক, লড়ি, লাইটেস, প্রাডো, কার, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ভ্যান, যানবাহন চলাচল করছে। বিশেষ করে পাসপোর্ট করতে আসা নারীরা বেশি কষ্টের শিকার হচ্ছে।
সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. আনোয়ার হোসেন জানান, পৌরসভার ভেতরে আমরা কাজ করতে পারি না। তবে প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হয়ে আসলে দ্রুত কাজ বাস্তবায়ন করবো। উপজেলা পরিষদ (পিআইও) টিরআর কাবিখা দিয়ে কাজ করতে পারে।
সুনামগঞ্জ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম কয়েস জানান, জেলা পরিষদ হতে বীজ ও সার গুদাম পর্যন্ত ইট সলিং রাস্তাটি খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষ নিমার্ণ করেছিল। কিন্তু বর্তমানে ইট সলিং রাস্তার ইট উলট পালট হয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এখানে অনেকগুলো সরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেবাদানকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সেবা গ্রহনকারীরা খুবই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে থাকেন। খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের কাছে হস্তান্তর করত তাহলে বসকে বলে আমরাই করে দিতাম।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর