ঢাকা ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:২৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৭, ২০২০
পিন্টু দেবনাথ, কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) : বাংলাদেশের ঐতিহাসিক মুক্তিযুদ্ধ ৭১ মননে স্মরণে ভারত-বাংলাদেশের মিলন সম্প্রীতি উৎসব অনুর্ষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার শরীফপুর সীমান্তের ওপারে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কৈলাশহর ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট সংলগ্ন নো-ম্যান্স ল্যান্ড এলাকায় উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার (৬ জানুয়ারি) বিকাল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত কৈলাশহরের আশ্রয় সামাজিক সংস্থার আয়োজনে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
আয়োজক সূত্রে জানা যায়, আশ্রয় সামাজিক সংস্থার উদ্যোগে গত ১০ দিন ধরে কৈলাশহরের বিদ্যানগর ক্রিকেট মাঠে সংহতি মেলার চলছিল। সোমবার মেলার শেষ দিন উপলক্ষে সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বাংলাদেশ দুই লোক সংগীত শিল্পী সেলিম চৌধুরী ও আইরিন মুন্নীকে। বেলা ৩টায় ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের সাবেক গ্রাম উন্নয়ন মন্ত্রী ও আশ্রয় সামাজিক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সাবেক বিধায়ক বিরজিৎ সিনহা, উনকোটি জেলা পরিষদের সদস্য বদরুজ্জামানসহ অতিথিরা ফুল দিয়ে বাংলাদেশের দুই সংগীত শিল্পীকে বরণ করে নেন। একই সাথে বাংলাদেশের কমলগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল কুলাউড়া ও জুড়ি উপজেলার আমন্ত্রিত সাংবাদিক, পর্যটন ব্যবসায়ী, মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষক সমন্বয়ে ২৭ জন অতিথিকে বিশেষ ব্যবস্থায় অনুষ্ঠান স্থলে প্রবেশ করানো হয়।
বেলা সাড়ে ৩টায় বাংলাদেশেরে দুই সংগীত শিল্পী, সাংবাদিকসহ অতিথিদের উত্তরীয় পরিয়ে ও লাল গোলাপ দিয়ে বরণ করা হয়। পরে বাংলাদেশের শিল্পী সেলিম চৌধুরী ও আইরিন মুন্নীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এর পর ভারতীয় ক্ষুদে শিল্পীরা ভারতীয় জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন। তার পর ভারতীয় ক্ষুদে শিল্পীরা একটি নৃত্য ও যোগ ব্যায়াম প্রদর্শণ করে। এর পর আয়োজক ভারতীরা বাংলাদেশের অতিথিদের ক্রেস্ট প্রদান করেন। সাথে সাথে বাংলাদেশী সাংবাদিকরা ফুল দিয়ে ত্রিপুরার সাবেক মন্ত্রী বিরজীৎ সিনহা ও উনকোটি জেলা পরিষদের সদস্য বদরুজ্জামানকে শুভেচ্ছা জানান। তাছাড়া বাংলাদেশী সাংবাদিকরা ভারতীয়দের মাঝে দেশ থেকে নেওয়া মিষ্টি বিতরণ করেন। এসময় উৎসব স্থল ভারত ও বাংলাদেশের শিল্পী, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকদের এক মিলন মেলায় পরিণত হয়।
আয়োজক আশ্রয় সামাজিক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ত্রিপুরার সাবেক মন্ত্রী বিরজিত সিনহা স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ১৯৪৭ সালের আগে আমরা একই দেশের নাগরিক ছিলাম। এর পর পাকিস্তান ভারত ভাগ হয়ে যায়। তার পর ১৯৭১ সালে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল। সে সময় ভারত বাংলাদেশের পাশে ছিল। এখনও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি, সামাজিকতা, ক্রীড়া সবই এক। তবে দুই দেশ হওয়ায় মাঝ খানে কাটা তারের বেড়া। তবে আমাদের সম্প্রীতি অঠুট আছে। আগামীতে আরও বড় আকারে সম্প্রীতি মেলার আয়োজন করা হবে আর তখন আরও বাংলাদেশী অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো হবে।
কৈলাশহরের সাংবাদিক সুকান্ত চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় আলোচনা পর্বে বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্যে সাংবাদিক অধ্যাপক রজত শুভ্র চক্রবর্তী ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার সমরু মিয়া বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও ভারত বাংলাদেশকে যে সাহায্য করেছে তার ভুলবার নয়। ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রিয় প্রতিবেশী দেশ। এ সম্প্রতি অঠুট থাকবে। সম্প্রতি উৎসব শেষে বিকাল পৌনে ৫ টায় বিশেষ ব্যবস্থায় সম্প্রীতি উৎসবে যোগদানকারী সাংবাদিকসহ অতিথিরা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে ফিরে আসেন। আর সংগীত শিল্পী সেলিম চৌধুরী ও আইরিন মুন্নী কৈলাশহরের বিদ্যানগর ক্রিকেট মাঠের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান স্থলে রাতে সংগীত পরিবেশনের জন্য ত্রিপুরার কৈলাশহরে অবস্থান করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ও সামাজিক সংগঠন ‘আশ্রয়’ এর প্রতিষ্ঠাতা বিরজিত সিনহা বাংলাদেশী সাংবাদিকদের উত্তরীয়, মেডেল ও ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। বাংলাদেশের সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে ভারতের প্রাক্তন মন্ত্রী বিরজিত সিনহা ও আয়োজকসহ ভারতীয় সাংবাদিকদের ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এরপর বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত ও ভারতীয় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। এসময় উৎসব স্থল ভারত ও বাংলাদেশের শিল্পী, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকদের এক মিলন মেলায় পরিণত হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী সাংবাদিক ও সঙ্গীত শিল্পীদের আশ্রয় সামাজিক সংস্থার পক্ষ থেকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। কৈলাশহরের আশ্রয় সামাজিক সংস্থার সাধারণ সম্পাদক চন্দ্র শেখর সিংহ, কৈলাশহর প্রেসক্লাবের সহসাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ দত্ত, ধর্মনগর প্রেসক্লাবের সাংবাদিক আব্দুল হান্নান সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host