সিলেটে গ্রাম আদালতে মামলা নিষ্পত্তি ২,৩৪৮ টি

প্রকাশিত: ২:৩০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২০

সিলেটে গ্রাম আদালতে মামলা নিষ্পত্তি ২,৩৪৮ টি

ডেস্ক প্রতিবেদন : জেলা প্রশাসন, সিলেট স্বল্প সময়ে, অল্প খরচে গ্রামীণ জনগণ বিশেষ করে নারী, দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বিচারিক সেবা নিশ্চিত করতে সরকারের গ্রাম আদালত সেবার কার্যকর বাস্তবায়নে দিন ব্যাপী ‘গ্রাম আদালত কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং ভবিষ্যত করণীয়’ শীর্ষক বার্ষিক সমন্বয় সভা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজন করেছে। বাংলাদেশ সরকার, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন এবং ইউএনডিপি এর আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায়) প্রকল্প এর সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত এ সমন্বয় সভায় এ জেলার প্রকল্পভূক্ত ৫০টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানবৃন্দ, সকল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা প্রশিক্ষণ পুলের সদস্য এবং বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

উপপরিচালক স্থানীয় সরকার, সিলেট মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভার প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক সিলেট এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, গ্রামে অনেক ছোট খাটো অপরাধ সংঘটনের ঘটনা ঘটলেও সাধারণ মানুষ তার প্রতিকার চাইতে থানা বা জেলা আদালতে আসেন যাতে অনেক সময় ও অর্থের অপচয় হয়। সাধারণ মানুষের দোরগড়ায় ন্যায় বিচার পৌঁছে দিতে কার্যকর গ্রাম আদালত সরকারের এক অনন্য সেবা। দিন দিন সাধোরণ মানুষের মধ্যে গ্রাম আদালত সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, বিগত জানুয়ারী ২০১৭ থেকে বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায়) প্রকল্প সিলেট জেলার ০৬ টি উপজেলার (বালাগঞ্জ, বিশ^নাথ, গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, গোয়াইনঘাট, এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা) ৫০ টি ইউনিয়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পভুক্ত এ ইউনিয়নগুলোতে গত জুলাই ২০১৭ হতে ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত মোট ৩,৩৬৫ টি মামলা দায়ের হয়েছে, যার মধ্যে ২,৩৪৮ টি মামলা (৭০%) নিষ্পত্তি হয়েছে এবং ক্ষতিপূরণ বাবদ ১ কোটি ৯৭ লক্ষ ৯৬ হাজার ৭ শত ৯৩ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিগণকে আদায় করে দেয়া সম্ভব হয়েছে। যাতে প্রান্তিক নারীরাই বেশি উপকৃত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে মোঃ মাহবুবুল আলম অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, দরিদ্র ও প্রান্তিক এলাকার জনগণ যাতে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে কম সময়ে ও কম খরচে তাদের বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারে এ জন্য আইনগত দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসাবে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সদস্যগণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। তাদের এই সেবা অব্যাহত রেখে আইন শৃংখলা রক্ষায় এবং উচ্চ আদালতের মামলার জট কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছেন। তিনি আরো বলেন, গ্রাম আদালত কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন হলে থানায় মামলার সংখ্যা অনেক কমে যাবে, তাই এ বিষয়ে থানার সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। মোঃ মামুনুর রহমান ছিদ্দিকী, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার তার বক্তব্যে বলেন বিদ্যমান ছোট-খাটো রিবোধ নিষ্পত্তির জন্য সরকার গ্রাম আদালত প্রতিষ্ঠা করেছেন। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা তাদের বিচারিক মূল্যবোধ বজায় রেখে এই পবিত্র দায়িত্ব পালন করে অল্প ব্যয় ও স্বল্প সময়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করে ন্যায় বিচার পাওয়া সুযোগ তৈরি করে দিবেন বরে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন। অনুষ্ঠানে ইউএনডিপি-এর পক্ষে বক্তব্য রাখেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম, প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট, বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায়) প্রকল্প, ইউএনডিপি।

মতবিনিময় সভার সভাপতি মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, উপপরিচালক স্থানীয় সরকার, সিলেট গ্রাম আদালত সম্পর্কে সাধারণ মানুষের আস্থা বৃদ্ধির মাধ্যমে সরকারি এই সেবাকে কার্যকর করেতে উপস্থিত সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে আহ্বান জানান এবং এই সেবা জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র, সুবিধা বঞ্চিত গ্রামীণ জনগণ বিশেষত নারীদের মাঝে পৌঁছে দেবার জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা প্রদানের অঙ্গীকার করেন।

সর্বশেষ ২৪ খবর