ঝুমন দাসের জামিন এবারও না মঞ্জুর

প্রকাশিত: ৪:৩৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৩, ২০২১

ঝুমন দাসের জামিন এবারও না মঞ্জুর

বিজয়ের কণ্ঠ ডেস্ক
হেফাজতে ইসলামের বিতর্কিত নেতা মামুনুল হকের সমালোচনা করে গ্রেপ্তার হওয়া ঝুমন দাস আপনের জামিন এবারও না মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার সকালে সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ওয়াহিদুজ্জামান শিকদার ঝুমনের জামিন আবেদন নাকচ করে দেন।

 

জামিন আবেদন নাকচ করার তথ্য নিশ্চিত করে ঝুমন দাসের আইনজীবী দেবাংশু শেখর দাস বলেন, ফেসবুকে লিখে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আসামী হয়ে প্রায় সাড়ে চার মাস ধরে জেলে আছেন ঝুমন। মঙ্গলবার ভার্চুয়াল আদালতে ঝুমনের জামিন শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বাধা দেন বলে আদালত সূত্রে জানা যায়।

 

প্রসঙ্গত, গত ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে শানে রিসালাত সম্মেলন নামে একটি সমাবেশের আয়োজন করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। এতে হেফাজতের তৎকালীন আমির জুনায়েদ বাবুনগরী ও যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বক্তব্য দেন। এই সমাবেশের পরদিন ১৬ মার্চ মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন দিরাইয়ের পার্শ্ববর্তী উপজেলা শাল্লার নোয়াগাঁওয়ের যুবক ঝুমন দাস আপন। স্ট্যাটাসে তিনি মামুনুলের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অভিযোগ আনেন। সেদিনই তাকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। ২২ মার্চ পুলিশ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তার নামে মামলা করে।

 

এদিকে মামুনুলের সমালোচনাকে ইসলামের সমালোচনা বলে এলাকায় প্রচার চালাতে থাকে তার অনুসারীরা। এতে এলাকাজুড়ে উত্তেজনা দেখা দেয়। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দারা ১৬ মার্চ রাতে ঝুমনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর সকালে কয়েক হাজার লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিল করে হামলা চালায় নোয়াগাঁও গ্রামে। তারা ভাঙচুর ও লুটপাট করে ঝুমন দাসের বাড়িসহ হাওরপাড়ের হিন্দু গ্রামটির প্রায় ৯০টি বাড়ি, মন্দির। ঝুমনের স্ত্রী সুইটিকে পিটিয়ে আহত করা হয়। এরপর ২২ মার্চ ঝুমনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে শাল্লা থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) আবদুল করিম।

 

শাল্লায় হামলার ঘটনায় শাল্লা থানার এসআই আব্দুল করিম, স্থানীয় হাবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল ও ঝুমন দাসের মা নিভা রানী তিনটি মামলা করেন। তিন মামলায় প্রায় ৩ হাজার আসামি। পুলিশ নানা সময়ে শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু তারা সবাই এখন জামিনে।

 

ইউপি চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদারের করা মামলায় প্রধান আসামি করা হয় দিরাই উপজেলার একটি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শহীদুল ইসলাম স্বাধীনকে। তার নেতৃত্বেই হামলা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। গ্রেপ্তারের পর এই মামলার তিন আসামি স্বাধীনের বিরুদ্ধে আদালতে স্বীকারোক্তিও দেন। গত ২১ জুন সুনামগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে স্বাধীনও জামিনে মুক্তি পান।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর