তরুণ প্রজন্মকে বিজয়ের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে হবে : ইউএনও শাল্লা

প্রকাশিত: ৭:২২ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৫

তরুণ প্রজন্মকে বিজয়ের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে হবে : ইউএনও শাল্লা

শাল্লা প্রতিনিধি
যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় মহান বিজয় দিবস-২০২৫ উদযাপিত হয়েছে। দিনব্যাপী কর্মসূচিতে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিনের কর্মসূচির শুভ সূচনা হয়। এরপর মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে।

প্রথমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পিয়াস চন্দ্র দাস এবং এরপর শাল্লা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রকিব উজ্জামান-এর নেতৃত্বে পুলিশ প্রশাসন পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। তাঁদের পর পরই মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, প্রেসক্লাব, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

সকাল ৯টায় শাল্লা সদরের শাহীদ আলী মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় এবং মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ শুরু হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিয়াস চন্দ্র দাস প্রধান অতিথি হিসেবে কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেন। কুচকাওয়াজে বাংলাদেশ পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিএনসিসি ও স্কাউট দল অংশগ্রহণ করে। কুচকাওয়াজ শেষে মনোজ্ঞ শরীরচর্চা ও ডিসপ্লে প্রদর্শন করা হয়।

কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিয়াস চন্দ্র দাস তাঁর আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে মহান বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরেন। ত্রিশ লক্ষ শহীদ ও দুই লক্ষাধিক নির্যাতিত মা-বোনসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

তিনি বলেন, ‘১৬ই ডিসেম্বর শুধু একটি তারিখ নয়, এটি আমাদের স্বাধীনতা, আত্মত্যাগ এবং জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও শোষণমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করা।’

তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ইউএনও বলেন, ‘আপনারা আমাদের জাতির ভবিষ্যৎ। আপনারা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানুন, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হোন এবং দুর্নীতি ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত একটি উন্নত জাতি গঠনে অংশ নিন। মনে রাখবেন, জ্ঞান ও দেশপ্রেম হলো স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ নির্মাণের মূল ভিত্তি।’

দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে আরও ছিল জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সথে মতবিনিময় সভা, বিকেলে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং সন্ধ্যায় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

অনুষ্ঠানে উপজেলা প্রশাসন ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সরকারি কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। শাল্লার সকল নাগরিক গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার মধ্য দিয়ে এই ঐতিহাসিক দিনটি উদযাপন করেছেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর