অপরাধীদের তালিকা করে ডাটাবেইজ তৈরির কাজ কত দূর?
গত ১৫ দিনে কিশোর গ্যাংয়ের হাতে ২ খুন

প্রকাশিত: ৭:২৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২, ২০২৫

<span style='color:#077D05;font-size:19px;'>অপরাধীদের তালিকা করে ডাটাবেইজ তৈরির কাজ কত দূর?</span> <br/> গত ১৫ দিনে কিশোর গ্যাংয়ের হাতে ২ খুন

বিজয়ের কণ্ঠ ডেস্ক
সিলেটে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কিশোর অপরাধীরা। পাড়া-মহল্লাভিত্তিক গড়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং। তুচ্ছ ঘটনায় প্রকাশ্যে জড়াচ্ছে সংঘাত-সংঘর্ষে। গত ১৫ দিনে কিশোর গ্যাং সদস্যের হাতে দুটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। গ্যাংয়ের সদস্যরা জড়িয়ে পড়েছে চুরি, ছিনতাই ও মাদকসহ নানা অপরাধে। দুটি হত্যাকান্ডের পর সাঁড়াশি অভিযানের ঘোষণা দিয়েছে পুলিশ। যদিও এর আগে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে কিশোর গ্যাং সদস্যদের তালিকা করে ডাটাবেইজ তৈরির কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেটে নগরের প্রায় প্রতিটি পাড়াভিত্তিক গড়ে ওঠেছে কিশোর গ্যাং। সন্ধ্যা হলেই পাড়ার গলির মুখে এরা আড্ডা বসায়। দিনে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার পক্ষে মিছিল, সভা ও সমাবেশেও দেখা যায় এদের। মুলত পাড়াভিত্তিক নেতারাই এদেরকে প্রশ্রয় দিয়ে থাকেন।

রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রচ্ছায়ায় দিন দিন এরা বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে গিয়ে প্রায়ই বিভিন্ন গ্যাংয়ের মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটছে। তুচ্ছ ঘটনায় দেশিয় ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে এক গ্রুপ অন্য গ্রুপের উপর হামলে পড়ে। বিগত সময়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়া অপরাধীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কিশোর গ্যাং সদস্য ছিল।

চুরি, ছিনতাই, মাদক সেবন, পরিবহন ও বিক্রির সাথে জড়িয়ে পড়েছে তারা। অপকর্মের প্রতিবাদ করলেই সাধারণ মানুষের উপর হামলা করছে তারা। অনেক সময় বাসাবাড়িতে গিয়েও হুমকি দিয়ে আসে কিশোর গ্যাং সদস্যরা। ফলে সিলেট নগরবাসীর কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে কিশোর গ্যাং।

গত ১৫ দিনের ব্যবধানে সিলেট নগরের বিভিন্ন স্থানে কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে খুন হয়েছেন দুইজন। সর্বশেষ খুনের ঘটনা ঘটে ২৭ নভেম্বর। নগরের বাদামবাগিচা এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুটি কিশোর গ্যাং সদস্যের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

এতে প্রতিপক্ষ গ্রুপের কিশোরদের ছুরিকাঘাতে খুন সিলেটের এয়ারপোর্ট থানাধীন ইলাশকান্দি বাদামবাগিচা উদয়ন ৪০/২ নম্বর বাসার শাহ এনামুল হকের ছেলে শাহ মাহমুদ হাসান তপু। সে স্থানীয় একটি স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।

পুলিশের দাবি, কিশোর গ্যাংয়ের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে খুন হয়েছে তপু। এ ঘটনায় ৮ জনকে আসামী করে থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ তপুর প্রতিপক্ষ কিশোর গ্রুপের প্রধান জাহিদ ও তার দুই সহযোগীকে গ্রেফতারক করেছে। এ ঘটনার পরদিন নগরের নয়াসড়ক এলাকায় আধিপত্য নিয়ে দুটি কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে এক কিশোর গুরুতর আহত হয়। এসময় বাণিজ্যিক এই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

এর আগে ১২ নভেম্বর মহানগরের বালুচরে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয় ফাহিম আহমদ নামের এক কিশোর। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফাহিম মারা যায়। ফাহিম সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার কান্দিগাঁও গ্রামের হারুন রশিদের ছেলে।

পরিবারের সাথে সে সিলেট নগরের বালুচর ছড়ারপাড় এলাকায় থাকতো। ফাহিমের ভাই মামুন আহমদের অভিযোগ, বুলেট মামুন গ্রুপের সদস্যরা তাকে খুন করেছে। এ ঘটনায় পুলিশ সবুজ আহমদ রেহান নামের এক কিশোরকে আটক করেছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বালুচর এলাকার বিভিন্ন টিলায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা আস্তানা গেড়েছে। তারা সেখানে প্রায়ই অস্ত্রের মহড়া দেয়। এরকম একটি ভিডিও সম্প্রতি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অফিসার, অতিরিক্ত উপ কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, সিলেট নগরের কিশোর গ্যাং এর সদস্যদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয়েছে। কিশোর অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। কিশোর গ্যাং সদস্যরা কোনভাবেই ছাড় পাবে না।

তথ্যসূত্র : সিলেট ভিউ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর