ঢাকা ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৩:১৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৪, ২০১৯
ডেস্ক প্রতিবেদন : দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তরের নির্বাচনে অংশ নেয়া নেতারা শোকজের জবাবে ক্ষমা চেয়েছেন। তাদের ক্ষমা করা হবে নাকি শাস্তির আওতায় আনা হবে, এ সিদ্ধান্তের পর তৃণমূল পর্যায়ের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগের বিশ্বস্ত সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
ওই সূত্রের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত শোকজ নোটিশ পাওয়ার পর অধিকাংশ নেতাই জবাব পাঠিয়েছেন। জবাবে দলীয় সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় তারা ক্ষমা চেয়েছেন।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ এ প্রসঙ্গে বলেন, শোকজের অনেক জবাব জমা হয়েছে। তবে সংখ্যা তিনি জানাতে পারেননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর অন্তত তিনজন সদস্য বলেন, বিদ্রোহীদের শাস্তির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার পরই তৃণমূল পর্যায়ের সম্মেলন শুরু হবে। এর ব্যাখ্যা হিসেবে তারা বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত ভঙ্গের অভিযোগে যে ১৭৭ জনকে শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়েছে তাদের অধিকাংশই তৃণমূল পর্যায়ে দলের বিভিন্ন পদে রয়েছেন। তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার পরই তৃণমূলের সম্মেলন করতে সুবিধা হবে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের অক্টোবরের পর ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে মাত্র একটি জেলায় সম্মেলন হয়েছে। এছাড়া পাঁচ শতাধিক থানা ইউনিট রয়েছে। ইউনিয়ন থেকে শুরু করে সারাদেশেই বিভিন্ন পর্যায়ের সাংগঠনিক ইউনিটগুলোর সম্মেলন হয় না দীর্ঘদিন। আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ সাংগঠনিক ইউনিটগুলোতে সম্মেলন সম্পন্ন করতে চিঠি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত শোকজের জবাব দিয়েছেন অনেকেই। তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ও জবাবের বিশ্লেষণ করবেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকরা। দলীয় সভানেত্রী ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে আলোচনা করে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। অধিকাংশই ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন এবং তারা ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ আর করবেন না মর্মে অঙ্গীকার করেছেন। সন্তোষজনক জবাব পেলে হয়তো তাদের ক্ষমা করা হবে। সেক্ষেত্রে তৃণমূলের সম্মেলনে পদ-পদবিও পেতে পারেন তারা।
গত সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় সারাদেশের আট বিভাগের ১৭৭ দলীয় পদ-পদবিধারী নেতাদের কেন বহিষ্কার করা হবে না, জানতে চেয়ে শোকজ নোটিশ পাঠায় কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক। দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত ওই শোকজ নোটিশে কেন তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়।
গত ১২ সেপ্টেম্বর শোকজ নোটিশ হাতে পান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার বিরোধিতা করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ওই উপজেলায় তিনি নির্বাচিত হন। তার শোকজ নোটিশের চিঠিতে ২১ কর্মদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়। তিনি ৩ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার শোকজের জবাব দেন বলে জাগো নিউজকে জানান।
শোকজ নোটিশের দেয়া জবাব প্রসঙ্গে মো. মনিরুজ্জামান বলেন, বিগত দিনে নবীনগরে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনের ফলাফলে দেখা যাবে, আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থীই এখানে জয়ী হতে পারেনি। আমিই প্রথম বঙ্গবন্ধুর আদর্শধারী ব্যক্তি, স্বতন্ত্র হয়েও এ উপজেলা পরিষদে প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হয়েছি।
তিনি বলেন, ‘আমি দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলাম। আমি যদি সেদিন নির্বাচন না করতাম তাহলে আওয়ামী লীগ মাইন্ডের বাইরে কোনো ব্যক্তি প্রার্থী হয়ে এলাকার সুবিধা নিয়ে নির্বাচিত হতেন। কিন্তু সেটা হয়নি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শধারণকারী ব্যক্তিই এখানে নির্বাচিত হয়েছে। তারপরও যদি কোনো ভুলভ্রান্তি হয়ে থাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রীর কাছে ক্ষমা চেয়েছি। আশা করি তিনি বিষয়টি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।’
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host