দক্ষিণ সুরমার সাততাকি পাহাড় হতে পারে আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট

প্রকাশিত: ১০:৫৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২০, ২০১৯

দক্ষিণ সুরমার সাততাকি পাহাড় হতে পারে আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট

গোলাম মর্তুজা বাচ্চু : দক্ষিণ সুরমার ‘পাঠানপাড়া সাততাকি পাহাড়’ হতে পারে সিলেটের আকর্ষনীয় একটি পর্যটন স্পট। পর্যটন স্পট করে গড়ে তুললে পাল্টে যেতে পারে এলাকার পরিবেশ ও প্রতিবেশ। শহরের সকল সুযোগ সুবিধা বিদ্যমান থাকলেও এখনো এলাকাবাসী নিজেদের এলাকাকে “আমরার গাঁও’ বলেই উল্লেখ করেন। এই টিলাটি পর্যটন স্পটে পরিণত করলে অচিরেই ‘আমরার গাঁও, ‘আমরার টাউন’-এ পরিণত হবে বলে ধারনা করা যাচ্ছে।

.
সিলেট সিটির ২৭ নম্বর ওয়ার্ড’র পাঠানপাড়া নয়া মসজিদ এবং গোটাটিকর নয়া মসজিদের মাঝখানে অবস্থিত এই সাততাকি পাহাড়। পাহাড়ের চূঁড়া থেকে উত্তর সুরমার শাহজালাল উপশহর পর্যন্ত সুন্দরভাবে দৃশ্যমান চয়। দেখা যায়, ভারতের মেঘালয়া রাজ্যের খাসিয়া জৈন্তিয়া পাহাড়ও দক্ষিণে নৈঃশব্দের গ্রামীণ পরিবেশ।
পাহাড়ে উঠা যায় গোটাটিকর মসজিদের উত্তর পাশ দিয়ে। উঠা যায় পাহাড়ের দক্ষিণ পাশ থেকে। উঠা যায় পাহাড়ের পশ্চিম পাশ থেকে। হুমায়ুন চত্তর থেকে পূর্ব দিকে এই পাহাড়ে যেতে সিএনজিতে ৫/৬ মিনিটের রাস্তা। হাঁটলে ১৪/১৫ মিনিট। সম্পূর্ণ কোলাহলমুক্ত এই পাহাড় থেকে বাঁধামুক্ত সূর্যোদয় এবং সুর্যাস্ত দেখতে পারেন। সূর্য ডুবার আগে প্রতিদিন দেখা যায় ঝাঁকে ঝাঁকে পাখিদের কূলায় ফিরার মন মাতানো দৃশ্য। ‘পাঠানপাড়া সাততাকি পাহাড়’ নামকরণ করেছেন এলাকার প্রবীণ মুরব্বি ও সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ।

.
আপনি যদি পড়ন্ত বিকেলে এই পাহাড়ে উঠেন, দেখবেন এক ব্যতিক্রমী দৃশ্য। ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি উড়ে আসে পূর্ব-দক্ষিণ দিক থেকে। সুরমা নদীর গা ঘেষে উত্তর-পশ্চিম দিকে চলে যায়। একদিনও দেখবেন না, উত্তর সুরমা থেকে পাখিরা দক্ষিণ সুরমায় যাচ্ছে। তবে কি পাখিগুলো সব শহুরে ? গ্রামে যায় বেড়াতে অথবা আহার করতে?
এ বিষয়ে এলাকার মুরব্বি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলী হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি সহজ করেই উত্তর দেন। বলেন, “লালমাটিয়া ময়লার ভাগাড় আছে না, ওখানে খাবার খেতে যায়। সারাদিন খেয়ে ধেয়ে সন্ধায় বাড়ি ফিরে।”
আনুমানিক ২০০ শতক জায়গা জুড়ে অবস্থিত এ পাহাড়ের উচ্চতা ৫০ থেকে ৬০ ফুট। জানা যায়, শতাধিক ব্যাক্তি এই টিলার মালিক। টিলার পশ্চিম দিকে কিছু জায়গা কেটে কয়েকটা ঘর বানানো হয়েছে। কয়েক বছর আগে মাটি কাটতে গিয়ে পাহাড় ধ্বসে কয়েকজন মানুষের মৃত্যুও ঘটেছে। তারপর থেকে টিলা কাটা বন্ধ রয়েছে। তবে কাটা অংশটি যেকোনো সময় ধ্বসে পড়ার আশংকা রয়েছে। ধ্বসে পড়লে আবারো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সিলেটস্থ পরিবেশ পরিদপ্তÍরের অতি সন্নিকটে হওয়া সত্বেও অজ্ঞাতকারণে এদিকে দৃষ্টিপাত করছে না কর্তপক্ষ।

.
ওই সাততাকি পাহাড়ে মাঝে মধ্যে বিকেলে নিজের দুই শিশুকন্যাকে নিয়ে ঘুরতে আসেন এলাকার বাসিন্দা একটি ওষুধ কোম্পানির কর্মকর্তা এ কে এম নাজমুল হক রূপন। এখানকার পর্যটন সম্ভাবনা নিয়ে কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন, “এই ছোট পাহাড়টির লোকেশন, আকার-আকৃতি এবং চারদিকের প্রকৃতি ও পরিবেশ একটি সুন্দর পর্যটন স্পট নির্মাণের দাবি রাখে। যথাযথ প্রচার-প্রচারণা হলে সরকারি কর্তৃৃপক্ষ বা বেসরকারি উদ্যোক্তা এ কাজে এগিয়ে আসতে পারেন। এটা পর্যটন স্পট হলে উইন-টু-উইন সিচুয়েশন হবে। এলাকাবাসীও লাভবান হবেন, লাভবান হবেন উদ্যোক্তারাও। লাভবান হবেন নাগরিক জীবনে হাঁপিয়ে উঠা জনগণ একটু বিশুদ্ধ বাতাসে নিঃশ্বাস নেয়ার সুযোগ পেয়ে।”

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর