ঢাকা ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৬:৫৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১, ২০২৫
বিশেষ প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জ
সার ডিলার নিয়োগ ও সার সংক্রান্ত সমন্বিত নীতিমালা-২০২৫ সংশোধন এবং খুচরা সার বিক্রেতাদের লাইসেন্স বহাল রাখার দাবিতে সুনামগঞ্জে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসক বরাবারে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে হয়েছে।
রোববার বেলা সকালে সুনাসমগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ‘খুচরা সার বিক্রেতা এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ (কেএসবিএবি) সুনামগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সুনামগঞ্জ জেলা খুচরা সার বিক্রেতা এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ (কেএসবিএবি) শাখার সভাপতি মো: লিল মিয়া আকাশ সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের জেলা শাখার সভাপতি এবং সঞ্চালনা করেন রাইছুর রহমান। এতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, সাইদুর রহমান,নজরুল ইসলাম,মানিক মিয়া দারু মিয়া,কৃষক সবুজ মিয়া, আব্দুল হান্নান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সম্প্রতি কৃষি মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত নতুন নীতিমালার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা জানান, গত ১৩ নভেম্বর কৃষি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘সমন্বিত সার ডিলার নিয়োগ ও সার সংক্রান্ত নীতিমালা-২০২৫’ অনুযায়ী দেশজুড়ে লাইসেন্সধারী খুচরা সার বিক্রেতাদের সনদ স্থগিত করা হয়েছে। নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে, দেশে আলাদাভাবে কোনো খুচরা সার বিক্রেতা বা সাব-ডিলার থাকবে না এবং বিদ্যমান বিক্রেতাদের আগামী ৩১ মার্চ ২০২৬ তারিখের মধ্যে সমুদয় দায়-দেনা নিষ্পত্তি করতে হবে।
বক্তারা বলেন, “এই সংবাদে সারাদেশের প্রায় ৪৪ হাজার খুচরা সার বিক্রেতা চরমভাবে হতাশ। আমরা দীর্ঘ ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পৈত্রিক সূত্রে ও সুনামের সাথে এই ব্যবসা করে আসছি। প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষকদের ৩০-৪০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বাকিতে সার ও পুঁজি বিনিয়োগ করে থাকি। হঠাত করে আমাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিলে পরিবার-পরিজন নিয়ে আমাদের রাস্তায় বসা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।”
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, বিগত সরকারের বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার পর বর্তমান অর্ন্তর্বতীকালীন সরকারের সময়ে এসে তারা নতুন করে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। তারা বলেন, “রাষ্ট্রের দায়িত্ব যেখানে কর্মসংস্থান তৈরি করা, সেখানে উল্টো আমাদেরকে কর্মহীন করার প্রক্রিয়া চলছে। এই ক্ষুদ্র আয়ের ওপর নির্ভর করে আমাদের সংসার, কর্মচারী ও দোকান ভাড়া চলে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির এই বাজারে ব্যবসা বন্ধ হলে আমরা মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হবো।”
মানববন্ধন শেষে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে কৃষি সচিব বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন যে, ২০০৯ সালের নীতিমালা অনুযায়ী যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে তারা নিয়োগপ্রাপ্ত এবং সরকারি কোষাগারে জামানত দিয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন।
স্মারকলিপিতে প্রধানত দুটি দাবি জানানো হয়। এর মধ্যে একটি হলো ১৩ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত সার সংক্রান্ত নীতিমালায় খুচরা সার বিক্রেতা বা আইডি কার্ডধারীদের কার্যক্রম বলবৎ ও চলমান রাখা এবং অপরটি হলো ‘খুচরা সার বিক্রেতা এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’-এর টি.ও বা ট্রেড অর্গানাইজেশন নিবন্ধন প্রদান করা।
নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, খুচরা বিক্রেতাদের বাদ দিলে সার সিন্ডিকেট মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে এবং প্রান্তিক কৃষকরা চরম ভোগান্তিতে পড়বেন। তাই ৫ কোটি কৃষকের সেবা সুরক্ষা ও ৪৪ হাজার ব্যবসায়ীর অস্তিত্ব রক্ষায় তারা সরকারের কাছে এই নীতিমালা পুনর্বিবেচনার জোর দাবি জানান।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host