উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নয়া বিলের মাছ লুট : জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ

প্রকাশিত: ৭:২৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১, ২০২৫

উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নয়া বিলের মাছ লুট : জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ

আব্দুল শহীদ, সুনামগঞ্জ
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার নয়াবিল-২ নামক জলমহালটি উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ অমান্য করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক খাস-কালেকশনে ইজারা দেওয়ায় আদালত অবমাননা হয়েছে। এতে প্রায় বিশ লক্ষ টাকার বিভিন্ন প্রজাতির মাছ লুটের ঘটনা ঘটেছে।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে এসব বিষয় উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন সবুর খান চৌধুরী। তিনি রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার সময় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এ অভিযোগ দায়ের করেন।

তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, উপজেলা সদর ইউনিয়নের লংকাপাথারিয়া মৌজাধীন ১২১, ১২৩ ও ১৩০ দাগে ১৯ একর ৩৮ শতাংশ আয়তনের একটি সরকারি জলমহাল রয়েছে। জলমহালটি গত ২০২৪ সালের ২৩ আগস্ট উপজেলা প্রশাসনের কাছ থেকে ৬ লাখ টাকায় ইজারা নেন উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের মাইজবাড়ি গ্রামের সবুর খান চৌধুরী। জলমহালটি ইজারাপ্রাপ্রাপ্ত হওয়ার পর তিনি জলমহালটিতে কাঠা-বাঁশ পুঁতে ও পাহারাদার নিয়োগ করার মাধ্যমে জলমহালটিতে প্রায় ১৬ লাখ টাকা ব্যয় করে সেখানে তিনি মাছ সংরক্ষণ করে আসছিলেন।

কিন্ত বিগত ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর সরকারিভাবে ইজারাপ্রাপ্ত ওই জলমহালটি স্থানীয় প্রভাবশালী একটি চক্র জোরপূর্বক লুটপাট করে প্রায় ২০ লাখ টাকার মাছ হরিলুট করে নিয়ে যায়।

বিষয়টি তিনি উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করেন এবং চলতি বছরেও জলমহালটি তাকে ইজারায় বন্দোবস্ত দেওয়ার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু উপজেলা প্রশাসন জলমহালটি তাকে বন্দোবস্ত না দিয়ে উপজেলার আক্তাপাড়া গ্রামের শামীম মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে খাস-কালেকশনের মাধ্যমে ইজারায় দিয়ে দেন। এতে করে তিনি সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় নিরুপায় হয়ে চলতি মাসের ৯ নভেম্বর তিনি উচ্চ আদালতে গিয়ে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক দেওয়া জলমহালটি খাস-কালেকশনের বিরুদ্ধে একটি স্থগিতাদেশের আবেদন করেন। তাঁর আবেদনের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত যথাযথভাবে জলমহালটির খাস-কালেকশনের বিষয়টির উপর ৩ মাসের জন্য একটি স্থগিতাদেশের আদেশ জারি করেন বলে তিনি অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়- এতসবের পরও উপজেলা প্রশাসন রহস্যজনক কারণে উচ্চ আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশ অমান্য করে শামীম মিয়াকে দেওয়া খাস-কালেকশনটি এখনও বহাল রেখেছেন। এতে করে শামীম মিয়া জলমহালটি থেকে তার লোকজন দিয়ে দিন-রাত লাখ-লাখ টাকার মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নয়াবিল-২ জলমহালের খাস-কালেকশনে ইজারাপ্রাপ্ত ইজারাদার মো. শামীম মিয়া বলেন, আমি জলমহালটি খাস-কালেকশনে ইজারা পাওয়ার পর সেটি জহিরুল নামে স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দিয়েছি। তবে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের বিষয়টি আমরা শুনেছি। এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা জলমহাল রক্ষণাবেক্ষণ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জনি রায় বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক সমর কুমার পাল জানান, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর