গোয়াইঘাটে সাঙ্গ হলো তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌঁড় প্রতিযোগিতা

প্রকাশিত: ২:২৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৯

গোয়াইঘাটে সাঙ্গ হলো তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌঁড় প্রতিযোগিতা

গোয়াইনঘাট সংবাদদাতা
বিলুপ্ত প্রায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার দৌঁঁড় (ঘোড়দৌঁড়) প্রতিযোগিতা। প্রতি বৎসরের ন্যায় সিলেটের যে কয়েকটি উপজেলায় ঘোড় দৌঁড় প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয় তার মধ্যে একটি সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলা। প্রতিবারের ন্যায় এবারও ঐহিহ্যের টানে জাকজমকভাবে তিন দিনব্যাপী এ ঘোড় দৌঁড় মেলা অনুষ্ঠিত হল।

১৮ফেব্রুয়ারি সোমবার বিকেল উপজেলার আলীরগাঁও ইউনিয়নের খাষমৌজা মাঠে দৌঁড় শুরু হয় এবং বুধবার দুপুর ১২টায় একই মাঠে ফাইনাল দৌঁড় ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। অর্ধ শতাধিক ঘোড়ার সমন্বয়ে দৌঁঁড় সমাপ্ত হয় এবং সর্বশেষ ফাইনালে বাংলার সুলতান, শুভা সুন্দর এবং হৃদয় বাংলা নামক তিনটি ঘোড়া অংশ গ্রহণ করে। এতে ফাইনাল দৌঁড়ে বাংলার সুলতান ১ম স্থান, শুভা সুন্দর ২য় স্থান এবং হৃদয় বাংলা তৃতীয় স্থান অর্জন করে। এতে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন সিজাজ উদ্দিন, মকবুল হোসেন।

পরিচালনা কমিটির সভাপতি শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাব’র সভাপতি মনজুর আহমদ, উপজেলা ভাইস চেয়রম্যান পদপ্রার্থী ছাত্রলীগ নেতা গোলাম রব্বানী সুমন, বিশিষ্ট সমাজসেবী সিরাজুল ইসলাম সিরাই, বিলাল উদ্দিন, হাজী খলিলুর রহমান, আতাউর রহামন, আবু হানিফ, আব্দুর রহমান, বিলাল উদ্দিন, এখালাছুর রহমান, মকবুল হোসেন, মাসুক আহমদ, শমছুল হক প্রমুখ।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, গোয়াইনঘাট উপজেলার আলীরগাঁও ইউনিয়নের খাষ মৌজা মাঠে বারহাল এলাকাবাসী কর্তৃক আয়োজিত প্রতিযোগিতায় সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলা হতে অর্ধ-শতাধিক ঘোড়া প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে। বিভিন্ন ইভেন্টের মাধ্যমে দৌঁড়ে অংশ গ্রহণ করে তারা পর্যায়ক্রমে ফাইনাল খেলায় অংশ নেয়। প্রতিটি ঘোড়ার সাথে ৩থেকে ৪জন লোক থাকে। সকল লোকজন’র থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা দিতে হয় মেলা আয়োজকদের। প্রতিদিন মাঠের চার পাশে অর্ধ-লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটে। এতে নারী পুরুষ যুবক শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার লোকজন উপস্থিত হন।

আয়োজক কমিঠির সভাপতি শফিকুর রহমান জানান, ঐতিহ্যবাহী এ মেলা আমাদের অঞ্চল হতে দিন দিন বিলুপ্ত হতে চলছে। আমরা প্রতি বছর আলীরগাঁও অঞ্চলের লোকজনদের সমন্বয়ে একটি মাঠ নির্বাচন করি। প্রশাসনের উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে খেলাটি পরিচালনা করি। ঘোড়া দৌঁঁড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করাটা অনেকটা কষ্ট সাদ্য হলেও কোন প্রকার প্রচার প্রচারণা ছাড়াই বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া ঐহিয্যবাহী খেলাটি আয়োজন করে থাকি। তিনি বলেন, নিজ চোখেই দখুন না- এক নজর দৌঁঁড় প্রতিযোগিতা দেখতে হাজার হাজার নারী পুরুষ মেলায় অংশ গ্রহণ করেছেন। আর সরাসরি প্রচার প্রচারণা চালিয়ে খেলাটির আয়োজন করা হলে মাঠে কয়েক লক্ষ লোক সমাগম ঘটতো। এমনকি বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল হতে ঘোড়া এসে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারতো।

এদিকে, কোন প্রকার অপ্রিতিকর ঘটনা ছাড়া খেলাটি সমাপ্ত করায় এলাকাবাসীসহ স্থানীয় প্রশাসন ও আগত দর্শকদের কমিটির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানানো হয়।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর