কানাইঘাটে পিতৃহারা তিন অবুঝ শিশুর দায়িত্ব নেবে কে?

প্রকাশিত: ৩:৫৩ অপরাহ্ণ, মে ৯, ২০১৯

কানাইঘাটে পিতৃহারা তিন অবুঝ শিশুর দায়িত্ব নেবে কে?

কানাইঘাট প্রতিনিধি
কানাইঘাটের পিতৃহারা তিন অবুঝ সন্তানের দায়িত্ব নেবে কে। এ আলোচনা এখন কানাইঘাট উপজেলার সবার মুখে মুখে। অবুঝ তিন শিশুর পিতার নাম ফারুক আহমদ। যাকে গত তিনদিন আগে তাদের মা হোসনা বেগম রাতের খাবারের সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে। তারপর পরকীয়া প্রেমিক ও তার সঙ্গীয়দের সহযোগিতায় গলাকেটে হত্যা করে লাশ গুম করার চেষ্টা করে। অবশেষে ঘটনার দুইদিন পর পুলিশের হাতে আটক হয়ে হত্যার দায় স্বীকার ও লাশ লুকিয়ে রাখার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি উপস্থাপন করে। বর্তমানে শিশুদের মা হোসনা বেগম জেল হাজতে রয়েছেন।

যেখানে পিতৃহারা এই শিশুদের একমাত্র অভিভাবক হিসেবে থাকার কথা মা। সেখানে তিনি নিজেও এখন হত্যার দায় নিয়ে জেল হাজতে। এই অবস্থায় অবুঝ শিশু তিনটির দায়িত্ব কে নেবে এমন প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে উপজেলার সর্বত্র।

জানা যায়, গত রোববার সৌদিআরব প্রবাসী ফারুক আহমদ’কে রাতের খাবারের সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে। তারপর পরকীয়া প্রেমিকের সহযোগিতায় তাকে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য রাতের আধাঁরে গোরকপুর গ্রামের সৌদি প্রবাসী মাসুক আহমদের ব্যবহৃত সেফটি ট্যাংকির ভিতর ফেলে রাখে। পরদিন ফারুকের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ফারুকের অবস্থান সম্পর্কে হোসনা বেগমের নিকট জানতে চাইলে তিনি কাজের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে আর ফিরেননি মর্মে জানান। এতে সন্দিহান হয়ে ফারুকের চাচা সমছুল হক কানাইঘাট থানায় উপস্থিত হয়ে ফারুকের নিখোঁজের বিষয়ে সাধারণ ডায়েরী করেন।

এদিকে সাধারণ ডায়েরীর প্রেক্ষিতে থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আহাদ তাৎক্ষণিক ফারুকের বাড়িতে পুলিশ পাঠালে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসে। পুলিশ সদস্যরা ফারুকের শয়নকক্ষে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ দেখে হোসনা বেগমকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। পরে পুলিশের নিকট অকপটে হত্যার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন হোসনা বেগম। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ মঙ্গলবার লাশটি উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে প্রেরণ করে।

নিহত ফারুক আহমদ কানাইঘাট উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপির বাউরভাগ ৩য় খন্ড (নুরপুর) গ্রামের মৃত মাহমুদ আলীর পুত্র।

ফারুকের চাচা সমছুল হক জানান, সৌদি প্রবাসী ফারুক আহমদ(৩৫) এর সঙ্গে মৃত মশাহিদ আলীর মেয়ে হোসনা বেগমের সহিত বিবাহ হয়। বিবাহের পর ফারুক আহমদ পরিবারের অভাব অনটন দূর করতে সৌদি আরবে চলে যান। স্বামীর অবর্তমানে গ্রামের পার্শ্ববর্তী বাড়ির নছির আলী আক্কার পুত্র মোস্তাফা আহমদের সঙ্গে পরকিয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ফারুক আহমদের স্ত্রী হোসনা বেগমের। এনিয়ে স্থানীয়ভাবে বেশ কয়েকবার শালিস বৈঠকের মাধ্যমে তাদের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন না হওয়ায় গত দু’মাস পূর্বে ফারুক আহমদ সৌদি আরব থেকে বাড়িতে চলে আসেন। এতে মোস্তফা আহমদের সঙ্গে হোসনা বেগমের পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে ফারুক আহমদের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে গত শনিবার হোসনা বেগম তার পরকীয়া প্রেমিক মোস্তাফা আহমদের সঙ্গে পরামর্শ করে অপর দুই সহযোগী নিয়ে ফারুক আহমদকে ঘুমন্ত অবস্থায় গলা কেটে হত্যা করে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর