ঢাকা ৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৩:৫৬ অপরাহ্ণ, জুন ১৫, ২০১৯
কানাইঘাট সংবাদদাতা
জকিগঞ্জ-কানাইঘাটের সংযোগ স্থাপনের একমাত্র মাধ্যম আটগ্রাম-কাড়াবাল্লা সুরমা নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণের দাবিতে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে আটগ্রাম আমজদিয়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে এ প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, কানাইঘাট উপজেলার ১নং ইউনিয়ন ও জকিগঞ্জ উপজেলার আটগ্রাম বাজারস্ত সুরমা নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণে এলাকাবাসীর দাবী উপেক্ষিত হয়ে আসছে স্বাধীনতার পর থেকে।
কানাইঘাট-জকিগঞ্জের প্রায় ২শতাধিক গ্রামের প্রায় ১৭/১৮ লাখ লোকের সিলেট শহরে যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম এই ব্রিজ। সুরমা নদী পারা-পারে নিত্যদিনের সমস্যা যেন তাদের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুরমা নদীর ওপর এই সেতু নির্মানের ৪০ বছরের দাবী উপেক্ষিত হওয়ায় এলাকাবাসী বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষা, চিকিৎসা সেবা সহ অন্যান্য মৌলিক চাহিদা পূরণের অধিকার থেকে। সরেজমিন খেয়া ঘাটে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে হাজার-হাজার মানুষের চলাচলের পথ এই সুরমা নদী পার হয়ে জকিগঞ্জ, কালিগঞ্জ বা সড়কের বাজার করতে যাওয়া লোকেরা বলেন, একটি ব্রিজ এর কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়া ছোট ছেলে মেয়েকে নিয়ে নৌকা পাড়াপাড়ে উল্লেখিত বাজারে কেনাকাটা করতে যাচ্ছি। এতো মানুষের ভীড়, যে কোন মুহুর্তে দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। তবুও প্রয়োজনের কারণে যেতে হয়। নদীর উপর ব্রিজ হলে আমাদের এমন সমস্যায় পড়তে হতনা। রোগী নিয়ে আসা লোকেরা বড় আক্ষেপ করে বলেন, মুমুর্ষ রোগী নিয়ে নদীর পাড়ে বসে আছি, ওপাড় থেকে খেয়া নৌকা না আসা পর্যন্ত জকিগঞ্জ বা অন্য কোনো হাসপাতালে যাওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। এমন অবস্থায় অনেক রোগী বা গর্ভবতি মহিলারা মুমূর্ষ হয়ে পড়েন। এ ছাড়া রাতের বেলায় কি পরিমাণ দুর্গতি হয় নিজ চোখে দেখে যান।
সুরমা নদীর উপর যদি একটি ব্রিজ হতো তা হলে আমাদের সারা জীবনের আক্ষেপ-কষ্ট শেষ হয়ে যেত। ‘শুধু তাই নয়, ওই নদী পারাপারের সমস্যায় প্রসবকালীন মা-শিশুসহ অনেক মানুষ চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে অকালে প্রাণ হারিয়েছেন অনেকই । তা ছাড়া অত্রাঞ্চলে বড় কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকায় জকিগঞ্জ উপজেলার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ জকিগঞ্জ ডিগ্রী কলেজ ও জকিগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ইছামতী ডিগ্রি কলেজ, লুৎফর রহমান হাই স্কুল এন্ড কলেজ, ইছামতি কামিল মাদ্রাসা, আটগ্রাম আমজদিয়া দাখিল মাদ্রাসার শতশত ছাত্র-ছাত্রী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পাড়াপাড়ের সময় না বলা নানান নমস্যায় সম্মুখিন হয় । স্কুল কলেজ শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরাতো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কলেজে যাই। খেয়ার এমন অবস্থা হয় মনে হয় এই বুঝি ডুবলো।
৩নং কাজলসার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ বাহাদুর এর সভাপতিত্বে ও বৃহত্তর কাড়াবাল্লা বড়চাতল প্রবাসী সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি ফারুক আহমদ এবং লতিফিয়া ইসলামিক আইডিয়াল একাডেমির প্রিন্সিপাল মাওলানা ইয়াহিয়া আহমদ চৌধুরী’র যৌথ সঞ্চালনায় শুরুতে পবিত্র কালামে পাক থেকে তিলয়াত করেন হাফিজ আব্দুর রহমান।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ৩নং কাজলসার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুলকারনাইন লস্কর, বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, মৌলভী ছইর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছাব্বির আহমদ, মিনহাজ বিন সামাদ চৌধুরী, স্থনিয় ইউ/পি সদস্য মঞ্জুর আহমদ সেলিম, সাবেক ইউ/পি সদস্য মাহতাব উদ্দিন, উস্তার হোসেন চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার কুটু মিয়া, ছালেহ আহমদ কবির, ছাদ উল্লাহ,জালাল উদ্দিন, আকরম আলি, জকিগঞ্জ টিভির এম ডি আব্দুল মুকিত,উপজেলা তালামিযের সভাপতি আহমদ আল মঞ্জুর, শরিফ বিন সামাদ চৌধুরী, সাবেল সেনা কর্মকর্তা আব্দুল মালেক আনিছ, আবুল কালাম, সামছ উদ্দিন, স্থানিয় এলাকার পক্ষে আবুল কাসেম রাজা, আজিজুল হক হুনাকুটি প্রমুখ।
সভা শেষে কাড়াবাল্লা নুরানী মাদ্রাসার পরিচালক ক্বারী এবাদুর রহমান সাহেবের দোয়া ও নছিহতের মাধ্যমে সভার সমাপ্তি ঘটে।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host