ঢাকা ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:৩৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৬, ২০২১
আব্দুল খালিক
‘সরকারি মাল দরিয়া মে ঢাল’ এটি একটি প্রবাদ বাক্য হলেও এর বাস্তবতা দেখা গেছে সিলেট সিভিল সার্জন কার্যালয় এলাকায়। সেখানে সরকারের দেওয়া বহু টাকা মূল্যের গাড়িগুলো শুধুমাত্র বিকল হয়ে যাওয়ার কারণে মাটির খাদ্যে পরিণত হয়েছে। একটা সময় এই গাড়ির কদর ছিল আকাশচুম্বী। কিন্তু কালের বিবর্তনে আজ তা মাটির খাদ্য, তা ভাবতেও যেন গা শিউরে ওঠে। এককালের সরকারি আমলাদের খাম খেয়ালিপনার কারণে আজ এই গাড়িগুলো যাদুঘরেও ঠাই পাওয়ার যোগ্যতাটুকুু হারালো।
জানা যায়, গত ৩০ ডিসেম্বর নগরের চৌহাট্টা এলাকার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে ড্রেন নির্মাণের কাজ করে সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। এসময় মাটির নিচ থেকে বেরিয়ে আসে সরকারি অফিসারদের ব্যবহারকৃত বহু টাকা মূল্যমানের তিনটি জিপ গাড়ি। যার একটির বেশার্ধ মাটিতে একাকার। অপরটি নিচের অংশ মাটিতে আর উপরের অংশ বহন করছে গাছের কাটা ডালপালা। তৃতীয় গাড়িটি ড্রেনের সাথে মিশে গিয়ে রাস্তার অংশ হয়ে আছে। যার উপর দিয়ে ভুলক্রমে পথচারীরা চলাচল করলেও নিচে একটি গাড়ি আছে তা বোঝার জো নেই।
এদিকে গাড়িগুলো দৃশ্যত হওয়ার পর সেখানে জড়ো হতে থাকেন উৎসুক জনতা। কেউবা মোবাইলের ক্যামেরায় ছবি ধারণ করছেন, কেউ বা ফেসবুক লাইভে গিয়ে জনতার দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। কিন্তু তাতে কী লজ্জা পাবেন ওই কার্যালয় সমূহের কর্তা ব্যক্তিরা।
স্থানীয়রা জানান, এ গাড়িগুলো কত আগের তা নির্ণয় করা না গেলেও এটা পরিষ্কার যে, গাড়িগুলো সরকারি এবং তা সরকারি কর্মকর্তারা ব্যবহার করতেন। হয়তো গাড়িগুলো বিকল হয়ে গেলে তা আর সংস্কার করা হয়নি। এভাবে অযতœ, অবহেলা আর রক্ষনাবেক্ষণের অভাবে গাড়িগুলো মাটির সাথে মিশে গেছে।
তারা বলেন, গাড়িগুলো সংস্কার না হলেও এর যতœ নেওয়া প্রয়োজন ছিল। রক্ষানাবেক্ষণের মাধ্যমে এর সৌন্দর্য্য বহাল রাখা যেতো। নতুন প্রজন্মের কাছে এই গাড়িগুলো ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মারক বাহক হয়ে থাকতো।
সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে রাখা সংরক্ষিত গাড়িটির রেশ টেনে তারা বলেন, সিলেটের প্রথম জেলা প্রশাসকের ব্যবহৃত গাড়িটি আজ সংরক্ষণের মাধ্যমে সিলেটের ইতিহাস ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। যেখানে সিলেটের ক্বিনব্রিজ ও চা পাতার আদলও সংরক্ষণ করা হয়েছে। এই গাড়িগুলোও সেখানে সংরক্ষণ করা যেতো। আর সম্ভব না হলে নগরের সুন্দর একটি স্থানকে নির্ধারণ করে সেখানে সংরক্ষণ করা যেতো। যা দেখে নতুন প্রজন্ম প্রতœতত্তে¡র অনেক জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হতো এবং সেটি সিলেটের একটি পর্যটন এলাকায় রূপ নিতো। অবশ্যই শীতের মৌসুমে সিলেটে বেড়াতে আসেন দেশ-বিদেশের অনেক পর্যটক। তারা প্রথমে সিলেট হযরত শাহজালাল (রহ.) ও শাহপরান (রহ.) মাজার জিয়ারত করেন। অনেকে আবার সোজা সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ সাদা পাথর, গোয়াইনঘাটের বিছনাকান্দি, জাফলং, ডিবির হাওর লাল শাপলার বিল ও লালাখালসহ দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখেন। তাদের কাছে এই পুরনো গাড়ির দৃশ্যগুলো অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠতো। সিলেট সম্পর্কে তারা ধ্যান ধারণা আরও প্রসারিত হতো। এ বিষয়ে সাংবাদিক-বুদ্ধিজীবিদের তাত্তি¡ক অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host