ঢাকা ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:৫৮ অপরাহ্ণ, মে ১৯, ২০১৯
রাজনগর সংবাদদাতা
বিগত (২০১৯ সাল) এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে রাজনগরের ফাতেমা আক্তার ইমা। দারিদ্রতার যাতাকলে পিষ্ট বাবার স্নেহ বঞ্চিত অদম্য মনোবলের অধিকারী মেধাবী ছাত্রী ইমার মানসিক দৃঢ়তার কারণেই বিগত এসএসসি পরীক্ষায় এ ফলাফল করতে সক্ষম হয়।
মা সেলিনা বেগম কাপড় সেলাই এর কাজ করে মেয়ে ইমাকে ছোট বয়স থেকে লালন পালন করে আসছেন। ইমার বয়স যখন ১১ মাস তখন মা সেলিনা বেগমকে ডিভোর্স দেন ইমার বাবা জয়নাল মিয়া। সেই সময় থেকে দারিদ্রতার সাথে লড়াই করে আসছেন ইমার মা সেলিনা বেগম। ফাতেমা আক্তার ইমার বাড়ি মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার মনসুরনগর ইউনিয়নের গোবিন্দবাটী গ্রামে। সে উপজেলার রাজনগর আইডিয়াল হাই স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।
ইমার বাবা জয়নাল মিয়া মা সেলিনা বেগমকে ডিভোর্স দেওয়ার পর থেকে ফের কোনো দিন খবর নেননি। মা সেলিনা বেগম অনেক কষ্ট করে কাপড় সেলাই এমনকি অনেকের নিকট থেকে সাহায্য নিয়ে ইমাকে লেখাপড়ার খরছ চালিয়ে যান। কাপড় সেলাই করে যে টাকা আয় হয় তা দিয়ে কোনো রকম চলছে তাদের মা-মেয়ের সংসার সহ লেখাপড়ার খরচ। ফাতেমা আক্তার ইমা জানায়, সে লেখাপড়া করে একদিন ডাক্তার হবে। কিন্তু টাকার অভাবে এ স্বপ্ন কতটুকু বাস্তবায়ন হবে তা বুঝে উঠতে পারছে না ইমা। সে অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিলো।
ইমার জীবন সংগ্রামের বিষয়টি জেনে সম্প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসিম। ইতোমধ্যে তিনি ইমার পড়ালেখার খরচ বাবৎ ১০ হাজার টাকার চেক প্রদান করেছেন বলে জানাগেছে।
ফাতেমা আক্তার ইমা জানায়, তার স্বপ্ন শিক্ষা জীবন শেষ করে ডাক্তার হয়ে তার মতো অসহায়দের সেবা করতে চায়। বাবা জয়নাল মিয়া তাকে ১১ মাসের শিশু অবস্থায় রেখে অসহায় মা সেলিনা বেগমকে ডিভোর্স দেন। তার পর থেকে মা অনেক কষ্ট করে তাকে লালন পালন করেন। লেখাপড়ার খরচের যোগান দেন কাপড় সেলাই এবং বিভিন্ন মহৎপ্রাণ মানুষের নিকট থেকে সাহায্য নিয়ে। ইমা তার স্বপ্ন পুরণে সকলের সহযোগিতা কামনা করে।
ফাতেমা আক্তার ইমা’র মা সেলিনা বেগম বলেন, আমার মেয়ে অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে। তার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করি। স্বামীর সাথে ডিভোর্স হওয়ার পর আমার মেয়ের জন্য দ্বিতীয় সংসার করিনি। মেয়ের দিকে তাকিয়ে সেই ১১ মাসের মেয়েকে নিয়ে জীবন সংগ্রাম শুরু করি। কাপড় সেলাই করে যে আয় হয় তা দিয়ে মা মেয়ের সংসার চলে। আমার মেয়ের স্বপ্ন ডাক্তার হবে। কিন্তু আমার তো সেই সামর্থ নেই। তাই সমাজের বিত্তশালী মহৎপ্রাণ মানুষের কাছে আকুল আবেদন আমার মেয়ের লালিত স্বপ্ন পূরণে সমাজের সকল মহৎ ব্যাক্তিরা দোয়া ও সহযোগিতা করবেন।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host