ঢাকা ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:০৯ অপরাহ্ণ, মে ২৫, ২০১৯
মৌলভীবাজার সংবাদদাতা
মৌলভীবাজারের রাজনগরে মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বন্যার আশঙ্কায় রয়েছেন প্রায় ২০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ।
শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নের কালাইকোনা এলাকার একটি স্থানে ভাঙন দেখা দিলে স্থানীয়রা মাটি ভরাট শুরু করেন। অব্যাহত ভারিবর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে মনু নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে আরো ভাঙনের আশঙ্কায় রয়েছেন দুর্গত এলাকার লোকজন।
মনু ও ধলাই তীরবর্তী এলাকা সরেজমিনে ঘুরে স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মনু নদীর উজানে ভারতের ধর্মনগর, কৈলাশহরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় প্রবল বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের রাজনগরে মনু ও কমলগঞ্জের ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে শুক্রবার দিবাগত রাতে রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নের মনু নদী প্রতিরক্ষা বাঁধের তারাপাশার কালাইকোনা এলাকায় ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নজমুল হক সেলিমের নেতৃত্বে মাটির বস্তা দিয়ে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হয়।
সে সময় ভাঙনের স্থান পরির্দশন করেন রাজনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান খান, রাজনগর থানার অফিসার ইনর্চাজ আবুল হাসিমসহ এলাকার অন্যানরা।
এছাড়াও পানি বৃদ্ধির কারণে নতুন করে ভাঙনের আশঙ্কায় রয়েছে কামারচাক ইউনিয়নের ভোলানগর, কোনাগাঁও, দস্তিদারেরচক, ইসলামপুর, জালালপুর, তেঘরি, করাইয়া, মৌলভীরচক, আদমপুর, কামারচাক, খাসপ্রেমনগর, বিশালী, মিঠিপুরসহ প্রায় ২০টি গ্রাম।
তাছাড়াও উপজেলার টেংরা ও মনসুরনগর ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে ভাঙন আশঙ্কা রয়েছে। সরজমিনে কালাইকোনা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, আব্দুল্লাহ মিয়া ও হাসিনা বেগম আতঙ্কিত অবস্থায় তাদের ঘর ভেঙে অনত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। তারা জানান, ঘর তৈরীর সময় অনেক দূরে নদী ছিল। বর্তমানে ঘরের আঙ্গিনা নদীগর্ভে চলে গেছে। আজ বা কাল ঘরটি নদীতে চলে যাবে তাই ঘর ভেঙে সরিয়ে নিচ্ছি।
কোথায় যাবেন জানতে চাইলে তারা কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, গরীবের তো গাছতলা ছাড়া যাবার আর জায়গা নাই। কয়েক দফা আমাদের নদী ভাঙনের কবলে পড়তে হয়।
এদিকে উপজেলার শ্যামেরকোনা ও নওয়াগাাঁও এলাকায় ধলাই নদীর এক কিলোমিঠার প্রতিরক্ষা বাঁধ মেরামত না করায় কামারচাক ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকায় পানি প্রবেশ করছে। প্লাবিত হচ্ছে মানুষের বাড়ি ঘর ফসলি জমি। দুর্গত এলাকার লোকজন জানান, অতিদ্রæত শ্যামেরকোনা ও নওয়াগাঁও এলাকায় ধলাই ও মনুনদীর ভাঙ্গন এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় টেকসই মেরামত করা প্রয়োজন। অন্যতায় গতবারের বন্যার রেশ এবার আরো ভয়ঙ্কর রুপ নেবে।
কামারচাক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজমুল হক সেলিম জানান, শুক্রবার দিবাগত রাতে ইউনিয়নের কালাইকোনা এলাকায় ভাঙন দেখা দিলে পূর্বের পাউবোর জরুরী বরাদ্দ থেকে এলাকার লোকজনকে নিয়ে বাঁশ ও মাঠির বস্তা দিয়ে আপাতত ভাঙন প্রতিরোধ করেছি। কিন্তু যেকোন সময় মনু প্রতিরক্ষাবাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে ভাঙন দেখা দিতে পারে। এ ব্যাপারে পাউবোসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌসী আক্তার জানান, মনুনদীর পানি বৃদ্ধির খবর জেনেছি। কামারচাকের কালাইকোনার ভাঙন স্থানে আমি যাচ্ছি। এখনও তা আশঙ্কার পর্যায়ে যায়নি। তবে যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host