আমিরাতের সম্মানসূচক গোল্ডেন ভিসা ও নাগরিকত্ব পেয়েছেন সিলেটের মাহতাব

প্রকাশিত: ২:৪২ অপরাহ্ণ, জুন ২৪, ২০১৯

আমিরাতের সম্মানসূচক গোল্ডেন ভিসা ও নাগরিকত্ব পেয়েছেন সিলেটের মাহতাব

নিজস্ব প্রতিবেদন
প্রথম বাংলাদেশী নাগরিক হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের সম্মানজনক স্থায়ী নাগরিকত্বের সনদ, গোল্ডেন কার্ড ভিসা পেয়েছেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট শিল্পপতি মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান। ৬১ বছরের প্রবাসী বাংলাদেশী রহমান, আল হারমাইন বাণিজ্যিক গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান পরিচালক। দুবাইয়ে সফলভাবে ব্যবসা পরিচালনার পাশাপাশি নিজ দেশ, বাংলাদেশে জনসেবামূলক কাজে তার স¤পৃক্ততার কারণে আমিরাত সরকার এই সম্মাননা দিয়েছে। সূত্র : দ্য ন্যাশনাল।

বর্তমানে হারমাইন গ্রুপ মধ্যপ্রাচ্যের সবচাইতে বড় এবং বিখ্যাত সুগন্ধি প্রস্তুতকারক। রহমানের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য এখন ব্যাংকিং, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং হোটেল ও পর্যটন ব্যবসায়েও বিস্তৃত। উপসাগরীয় অঞ্চলে ২০টির বেশি ধরনের ব্যবসায়িক কার্যক্রমে জড়িত হারামাইন গ্রুপ। এছাড়াও, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের হারামাইন গ্রুপের ব্যবসা রয়েছে। কো¤পানিটির কার্যক্রম এখন আমিরাত থেকেই পরিচালনা করা হয়।

সম্মানিত স্থায়ী নাগরিক মর্যাদা পাওয়ার পর মোহাম্মদ রহমান বলেন, ‘এই সম্মাননা আমাদের ব্যবসায় (আমিরাতে) আরো বেশি বিনিয়োগ করতে উৎসাহ যোগাবে। সেই সাথে দেশের অর্থনৈতিক বিকাশে ভূমিকা রাখতে ইতিবাচক হয়ে থাকবে। এই ভিসার মাধ্যমে আমিরাত নেতৃত্ব ও প্রশাসন আমার দেশ এবং দেশবাসীকে বিরল সম্মান দিয়েছেন। আমি তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।’

মাহতাব রহমান আরো বলেন, আমি প্রবাসে সুগন্ধি ব্যবসার পাশাপাশি নিজ দেশের মানুষদের জন্য কিছু করতে চেয়েছিলাম। দেশের বেকারত্ব দূর করতে যাতে একই স্থানে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হয় এমন চিন্তা করতাম। সাথে সাথে নিজ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মানবসেবার চিন্তাটিও আমার মাথায় সবসময় ছিল। সেই সুবাধে নিজ দেশে আল-হারামাইন নামীয় হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছি। এখানে দেশের নামকরা চিকিৎসক কাজ করছেন। কর্মসংস্থান হয়েছে দেশের অনেক মেধাবিদের। বাদ পড়েননি বেকার যুবকরাও। তাদেরকেও কোননা কোন কাজের জন্য এই প্রতিষ্ঠানেই রেখেছি। সব মিলিয়ে যেমন মানবসেবা হচ্ছে, তেমন বেকারত্ব দূর করারও একটা মাধ্যম হয়ে আছে সিলেটে নির্মিত আল-হারামাইন হাসপাতালটি।

মোহাম্মদ রহমান বাংলাদেশের সিলেট জেলার সন্তান। ১৯৭০ সালে তিনি প্রথম মক্কায় নিজেদের পারিবারিক ব্যবসায় যোগ দেন। তখন তিনি হাজিদের কাছে সুগন্ধি ও আতর বিক্রি করতেন। এই ব্যবসায়ে যথেষ্ট সুনাম অর্জনের পর তিনি ১৯৮১ সালে দুবাইয়ে তার সুগন্ধি কো¤পানির প্রথম শো-রূম খোলেন। এরপর ১৯৮২ সালে তিনি তার স¤পূর্ণ বাণিজ্যিক কার্যক্রম আমিরাতে সরিয়ে আনেন। এসময়য় তিনি দেশটির আজমান এলাকায় একটি কারখানা স্থাপন করেন। এরপর ধীরে ধরে বিগত কয়েক দশকে তার ব্যবসায়ের সুনাম ও পরিধি মধ্যপ্রাচ্য ছাড়িয়ে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ে।

এদিকে ব্যবসায়িক উন্নতির পাশাপাশি নিজ এলাকায় সমাজকল্যাণমূলক কাজে প্রচুর অর্থ খরচ করেন মোহাম্মদ রহমান। তিনি নিজ শহর সিলেটে ১২তলা বিশিষ্ট আল-হারামাইন হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছেন। এছাড়াও, সমাজের অবহেলিত দুস্থ শিশুদের শিক্ষা এবং বাসস্থানের লক্ষ্যে তিনি একাধিক দাতব্য সংস্থা পরিচালনা করেন।

গোল্ডেন কার্ড ভিসা পাওয়ার মাধ্যমে মোহাম্মদ রহমান মুষ্টিমেয় কিছু অভিজাত ব্যবসায়ীর কাতারভূক্ত হয়েছেন। এর আগে সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তিত্ব হিসেবে গোল্ডেন ভিসা কার্ড পান ৪২ বছরের ড. শমশের বায়ালি। এর আগে ফিরোজ মার্চেন্ট নামক এক জুয়েলারি ব্যবসায়ী এবং লুলু গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়্যারম্যান ইউসুফ আলিকে এই বিরল সম্মান দেয়া হয়।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর